জীবিতের চেয়ে মৃত মহিউদ্দীন অনেক বেশি শক্তিশালীঃ মোছলেম উদ্দীন
সিটি নিউজঃ চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও চট্টগ্রাম -৮ আসনের সংসদ সদস্য মোছলেম উদ্দীন আহমেদ বলেছেন, চট্টল বীর এ.বি.এম মহিউদ্দীন চৌধুরী আপাদমস্তক একজন রাজনীতিক ও গণমানুষের নন্দিত জননেতা হলেও তাঁর সবচেয়ে বড় পরিচয় ধর্ম-বর্ণ-দল-মত নির্বিশেষে মানবিক গুণে মহিন্বিত সাম্য, মেত্রী-সম্প্রীতির সর্বজনীন প্রতীক মানব প্রেমীক। তাই তিনি চিরঞ্জীব এবং জীবিতের চেয়ে মৃত মহিউদ্দীন অনেক বেশি শক্তিশালী।
রবিবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের তিন তিনবারের নির্বাচিত সাবেক মেয়র, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও চট্টলবীর এ.বি.এম মহিউদ্দীন চৌধুরীর তৃতীয় মৃত্যুবার্ষিকী পালনোপলক্ষে সমাজ সেবামূলক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন মোবাশ্বিরা ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই কথাগুলো বলেন।
তিনি মহিউদ্দীন চৌধুরীর স্মৃতিচারণ করে বলেন, প্রান্তিক ষাট দশকে এই নগরীতে ছাত্র রাজনীতির মাধ্যমে একসাথে আমাদের বেড়ে উঠা। একাত্তরের ২৭ মার্চ সকালে নুর আহমদ চৌধুরী সড়কে হানাদার বাহিনীর নেভেল কমান্ডোদের সাথে অসমযুদ্ধে পরাভূত হয়ে গ্রেফতার হই। সকলেই জানতো আমরা আর নেই। তাই মৃত্যুর জানাজাও হয়ে গেছিল। জেলে অমানুষিক নির্যাতন সহ্য করে তৎকালীন জেলারের পরামর্শে পাগলের অভিনয় করে কৌশলে জেল থেকে বেরিয়ে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিই। এভাবেই আমাদের বন্ধন এবং জনে জনে জনতার সাথে।
তিনি আরও বলেন, মহিউদ্দীন চৌধুরী রাজনৈতিক ইস্যুর বাইরেও যেকোন প্রাকৃতিক, সামাজিক ও মানবিক বিপর্যয়ে পরিত্রাতা হিসেবে আবির্ভূত হয়ে গণ নায়ক হয়ে উঠেন। এজন্যই তিনি সর্বজনীন।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি ও দলের জাতীয় পরিষদ সদস্য আলহাজ্ব নঈম উদ্দীন চৌধুরী বলেন, ষাটের দশক থেকে মহিউদ্দীন চৌধুরীকে কাছ থেকে চিনি ও জানি। রাজনীতিতে তিনি ঝুঁকি নিতে জানতেন, কারণ তাঁর মধ্যে আপসকামীতা ছিলনা। যেখানে অন্যায় সেখানেই প্রতিবাদী মহিউদ্দীন- এই সত্যটা তার শত্রুও স্বীকার করতে বাধ্য।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী বলেন, মহিউদ্দীন চৌধুরী কখনো এম.পি-মন্ত্রী-দলের কেন্দ্রীয় নেতা হন নি। চট্টগ্রামের স্বার্থেই তিনি আমৃত্যু লড়েছেন। তিনি চট্টল দরদী হয়েও জাতীয় নেতার উচ্চতায় উন্নীত হয়েছিলেন। তিনি স্বপ্নের ফেরিওয়ালা, তাই স্বপ্ন দেখতে ও দেখাতে জানতেন।
মোবাশ্বিরা ফাউন্ডেশনের সমন্বয়ক মোবারক বাবু ও সদস্য এম. এ কায়েসের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী যুবলীগের আহবায়ক মহিউদ্দীন বাচ্চু, আওয়ামী লীগ নেতা ফরিদ নেওয়াজ, জসীম উদ্দীন খন্দকার, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় উপ কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান লিটন, জালাবাদ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ ইয়াকুব, হারুন জালালাবাদী, নাসির তালুকদার, শহিদুল ইসলাম শহীদ, কাজল প্রিয় বড়–য়া, আওয়ামী লীগ নেতা রেজাউল বাহার, কাজী মশিউর, ইসমাইল হোসেন, মাকসুদ চৌধুরী, শাহিনুর আলম শাহিন, মনিরাজ, মোঃ সজল, আব্দুল মান্নান, মোঃ শফি, আলী আকবর, ইউসুফ বাবুসহ ওয়ার্ড ও থানা আওয়ামী লীগের নেতা ও কর্মীবৃন্দ।
আলোচনা সভার আগে মহিউদ্দীন চৌধুরীকে নিয়ে আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব নঈম উদ্দীন চৌধুরী।