আবাসিকে গ্যাস সংযোগ বন্ধ

অর্থ ও বাণিজ্য : বাসাবাড়িতে নতুন করে আর কোনো গ্যাস সংযোগ দেওয়া হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে সরকার। এমনকি আগে সংযোগ নেওয়া কোনো বাড়িতে নতুন চুলা বাড়াতে চাইলেও তার আর অনুমতি দেয়া হবে না। সম্প্রতি জ্বালানি বিভাগে অনুষ্ঠিত বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়, যা সকল গ্যাস বিতরণ কোম্পানির জন্য প্রযোজ্য হবে।

জ্বালানি বিভাগের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গ্যাস স্বল্পতার কারণে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে অলিখিতভাবে বাসাবাড়ির গ্যাস সংযোগ বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন বৈঠক করে বাসাবাড়িতে নতুন গ্যাস সংযোগ বন্ধে আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবে যেসব সংযোগের জন্য আগে থেকেই অনুমোদন দেয়া আছে তা পর্যায়ক্রমে দেয়া হবে। জানা যায়, বর্তমান সরকার প্রথম মেয়াদে ক্ষমতায় এসে ২০০৯ সাল থেকে আবাসিক ও শিল্পে গ্যাস সংযোগ বন্ধ করে দেয়। প্রায় ৩ বছর বন্ধ থাকার পর আবাসিক ও শিল্পে পুনরায় সংযোগ প্রদানের ঘোষণা দেওয়া হলেও কার্যত শিল্প ও বাণিজ্যিকে গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়নি। তবে ফি ছাড়াও অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে আবাসিকে চলতে থাকে গ্যাস সংযোগ। আবার ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর গৃহস্থালি কাজে এক বার্নারের গ্যাসের চুলা ব্যবহারের জন্য ৪০০ থেকে বাড়িয়ে ৬০০ টাকা এবং দুই বার্নারের চুলা ৪৫০ থেকে বাড়িয়ে ৬৫০ টাকা করা হয়।

একই সময় কমপ্রেসড ন্যাচারাল গ্যাস (সিএনজি) প্রতি ইউনিট ৩০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩৫ টাকা করা হয়। আবার এরই মধ্যে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কাছে সব ধরণের গ্যাসের দাম বাড়ানোর আবেদন করেছে বিতরণ সংস্থাগুলো। নতুন প্রস্তাবে আবাসিকে ব্যবহৃত গ্যাসের ক্ষেত্রে দুই চুলার (ডাবল বার্নার) এক মাসের বিল ৭৭ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৬৫০ টাকা থেকে ১ হাজার ২০০ টাকা এবং এক চুলার (সিংগেল বার্নার) মাসিক চার্জ ৮৩ শতাংশ বাড়িয়ে ৬০০ টাকা থেকে ১ হাজার ১০০ টাকা করতে বলা হয়েছে। তবে যেসব আবাসিক গ্রাহক মিটার ব্যবহার করেন তাদের ক্ষেত্রে প্রতি ঘনমিটার গ্যাসের দাম ৭ টাকা থেকে ১৪০ শতাংশ বাড়িয়ে ১৬ টাকা ৮০ পয়সা করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে। আর যানবাহনে ব্যবহৃত সিএনজির দাম প্রতি ঘনমিটার ৩৫ টাকা থেকে ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি করে ৫৮ টাকা নির্ধারণের আবেদন করা হয়েছে।

এ প্রসঙ্গে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব নাজিমউদ্দিন চৌধুরী বলেন, রান্নার কাজ ও গাড়িতে মোট গ্যাসের ২০ শতাংশ ব্যয় হচ্ছে। এতে সরকার পায় মাত্র ১ হাজার ৩০ কোটি টাকা। অথচ এই পরিমাণ গ্যাস শিল্প খাতে ব্যবহার করা গেলে ৮০ হাজার কোটি টাকার সুবিধা পাওয়া যেত। তাই গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া চলছে। তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী মীর মশিউর রহমান বলেন, নতুন করে আর গ্যাস সংযোগ না দিতে সকল বিতরণ কোম্পানির জন্য মন্ত্রনালয় যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে তা বাস্তবায়ন করছি। মূলত গ্যাস সংকটের কারণেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে এর আগে যাদের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে তাদের এবং যারা অবৈধ সংযোগ বৈধ করার আবেদন করেছেন তাদের পর্যায়ক্রমে সংযোগ দেয়া হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

Comments are closed.