ইনানী সমুদ্র সৈকতে পর্যটকদের ভোগান্তি

0

শহিদুল ইসলাম, উখিয়া (কক্সবাজার) : দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্যটন স্পট কক্সবাজারের উখিয়ার উপকূলীয় জালিয়াপালং ইউনিয়নের ইনানী সমুদ্র সৈকতের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও নয়নাভিরাম নৈসর্গিক দৃশ্য উপভোগ করতে দেশি বিদেশী পর্যটক দম্পত্তি ইনানীতে ছুটে আসলেও প্রকৃত পক্ষে পর্যটকদের যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা, সেবা ও আনন্দ বিনোদনের ছোঁয়া পাওয়া অত্যাবশ্যকীয় তা পর্যটকেরা পাচ্ছে না। পর্যটকেরা নানা সমস্যায় মুখাপেক্ষী হয়ে অন্তহীন দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

পরিবেশবাদীরা মনে করছেন, দীর্ঘতম এই সমুদ্র সৈকতকে ঢেলে সাজানোর সুষ্ঠু পরিকল্পনার মাধ্যমে সার্বিক উন্নয়ন করা হলে পর্যটক সংখ্যা বৃদ্ধির পাশাপাশি সরকার রাজস্ব আদায়ের পরিমাণ আরো দ্বিগুন বেড়ে যাওয়ার অপার সম্ভাবনা ছিল।
সম্প্রতি ইনানী পর্যটন এলাকা ঘুরে বেশ কয়েকজন উত্তরাঞ্চলের পর্যটকের সাথে কথা বলে জানা যায়, মূলত তারা ইনানীর বহুমুখী সৌন্দর্যের গুনকীর্তন শুনে স্ব-পরিবারে এসে যা দেখলেন, তাতে মনে হয় ইনানী বীচ ছাড়া এখানে দৃশ্যমান আর কিছুই নেই।
এসময় সিলেট বিয়ানি বাজার থেকে আসা পর্যটক ব্যবসায়ী আলা উদ্দিন, বোরহান উদ্দিন, ছমি উদ্দিন, ফারুক আহমদ, নাজিয়া জাহান সহ একাধিক ব্যক্তি জানান, এখানে যেক’টি হোটেল মোটেল, গেষ্ট হাউস আছে তা অত্যন্ত ব্যয়বহুল হওয়ায় মধ্যবিত্তের পর্যটকদের এসব হোটেলে থাকা খাওয়া কোন ভাবেই সম্ভব নয়।
পরিবার পরিজন নিয়ে আসা বেশ কয়েকজন পর্যটক যেমন চট্টগ্রাম মেহেদীবাগের আব্দুল্লাহ, একই এলাকার বেসরকারি সংস্থার চাকুরীজীবি মোঃ সোলাইমান জানান, চেইঞ্জিং রুম না থাকার কারণে সাগরে গোসল করে মহিলাদের তাদের ভাড়া করা গাড়ীতে গিয়ে কাপড় পরিবর্তন করতে হয়।
একাধিক পর্যটক জানায়, পর্যটকদের নিরাপত্তায় লাইফ গার্ড, ট্যুরিষ্ট পুলিশের দেখা পাওয়া যায় না। পর্যটন স্পটের আশে পাশে বাথরুম না থাকায় পর্যটকদের বিড়ম্বনার শিকার হতে হয়। ক্ষণিক বিশ্রাম বা অবকাশ যাপনের মত কোন পরিবেশ না থাকার কারণে বালুচরে প্রচন্ড গরমে হাঁটাহাঁটি করে দিন কাটাতে হয় পর্যটকদের। এমনকি গাড়ি পাকিংয়ের ব্যবস্থা যেখানে নাই সেখানে পর্যটন স্পটের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত বলে অনেকেই মন্তব্য করতে দেখা গেছে।
ইনানী বহুমুখী ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি ছৈয়দ হোছাইন বলেন, উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক একটি মাশরুম মাকের্ট নিমার্ণের পরিকল্পনা নিয়ে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহম্মদ শামীম আল রাজী প্রায় ১৭ জন ইনানীর স্থানীয় ব্যবসায়ীর নিকট থেকে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে আদায় করে ছিল। অদ্যবধি পর্যন্ত মার্কেটটি নির্মাণ করা হয়নি।
ইনানী বীচ ইজারাদার ও উখিয়া উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি নুরুল আমিন সিকদার ভুট্টো বলেন, গাড়ি পার্কিংয়ের নির্ধারিত স্থানটি দখল করে অবৈধভাবে দোকানপাট গড়ে তোলার কারণে পর্যটকদের মেরিন ড্রাইভ সড়ক দখল করে গাড়ী পার্কিং করতে হচ্ছে।
উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ মাঈন উদ্দিন বলেন, পর্যটকদের সার্বিক নিরাপত্তা ও আনন্দ বিনোদন সহ সবধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। চেইঞ্জিং ও বাথরুম নির্মাণের ব্যাপারে জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের সাথে সমন্বয় করে যত দ্রুত সম্ভব সমস্যা সমাধান করা হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.