নিজস্ব প্রতিবেদক:: ছুটির দিন ভোরে বৃষ্টি। এমন আবহাওয়ায় যারা একটু বেশি সময় বিছানায় কাটিয়েছেন, তারা জেগে উঠে নিজেদেরকে খুঁজে পেলেন পানির মধ্যে। বৃষ্টিতে বন্দরনগরীর নিচু এলাকাগুলো থই-থই করছে পানি। ডুবে গেছে সড়ক বাসা-বাড়ির নিচতলা, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান।
পতেঙ্গা আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ শেখ ফরিদ আহমেদ জানান, ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস ছিল। কিন্তু নদী বন্দরে কোন সংকেত ছিল না। কালবৈশাখীর প্রভাবে চট্টগ্রামজুড়ে এ বৃষ্টিপাত হচ্ছে। ভোর থেকে এ পর্যন্ত ৩৩ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। আর এ বৃষ্টিতে নগরীর এক-তৃতীয়াংশ এলাকা ডুবে গেছে।
চট্টগ্রাম নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বাসিন্দা নজরুল ইসলাম জানান, নগরীর মুরাদপুর থেকে চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত খাল বিভিন্ন ময়লা-আবর্জনায় ভরাট হওয়ায় পানি নামতে পারছে না। তাই খালের আশপাশের সব নিচু এলাকায় পানি জমে থই-থই করছে। সড়ক বাসা-বাড়ির নিচতলা, দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ডুবে নানা দুর্ভোগে পড়েছে মানুষ।
একই অবস্থা হয়েছে ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকার। এ এলাকার চশমা খালের সংস্কার না হওয়ায় পানি জমে জলজট সৃষ্টি হয়েছে বলে জানান স্থানীয় লোকজন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃষ্টিতে নগরীর কাপাসগোলা, বাদুঁরতলা, রাহাত্তারপুল, কালামিয়া বাজার, মোহরা, হালিশহর, পতেঙ্গা, বন্দর, আগ্রাবাদ, চাক্তাই-খাতুনগঞ্জ, চকবাজার, নাসিরাবাদসহ সবকটি এলাকায় পানি থই-থই করছে এখন। বৃষ্টির সাথে ক্রমেই বাড়ছে পানির উচ্চতা।
বিশেষ করে নগরীর প্রধান সড়কের মধ্যে কালুরঘাট পতেঙ্গা সড়কের বাসসিগনেল, বহদ্দারহাট, মুরাদপুর, আগ্রাবাদ এলাকায় ডুবে যাওয়ায় যানবাহন চলাচল করতে পারছে না। একইভাবে বাঁদুরতলা, কাপাসগোলা সড়ক, বহদ্দারহাট-শাহ আমানত সড়কসহ গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সড়ক ডুবে গিয়ে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে।
সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সড়কে কর্মজীবীদের তেমন দেখা না গেলেও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া আসায় দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
এছাড়া নগরীর চকবাজার কাঁচাবাজারের ব্যবসায়ী আরিফ জানান, বৃষ্টিতে বাজারের অলি-গলি ডুবে গেছে। দোকানপাটে পানি ঢুকে বিভিন্ন পণ্য ভিজে নষ্ট হয়েছে। বহদ্দারহাট হক মার্কেটের ব্যবসায়ী আজিম উদ্দিন জানান, মার্কটের নিচতলার সবকটি দোকানে পানি থই-থই করছে। এ মার্কেটের নিচে ১০-১২টি ওষুধের দোকানে পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে।
সিটি করপোরেশন জানায়, জলবদ্ধতাপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করে সবচেয়ে ঝুকিপূর্ণ এলাকায় নালা-খাল সংস্কার, সড়ক উঁচুকরণসহ প্রয়োজনীয় কাজ করা হয়েছে। এসব এলাকা এখন ডুবেনি। সামনের বছর থেকে জলজট থেকে মুক্তি দেয়া যাবে বলে আশা করছে সংস্থাটি।