আন্তর্জাতিক ডেস্ক : অস্ট্রেলিয়া ১২ হাজার শরণার্থীকে আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে। বুধবার দেশটির প্রধানমন্ত্রী টনি অ্যাবট এ ঘোষণা দেন।মধ্যপ্রাচ্যে চলমান সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে সেখান থেকে পালিয়ে আসা লোকদের আশ্রয় দেওয়ার ব্যাপারে সরকারের ওপর অব্যাহত চাপের পরিপ্রেক্ষিতে এ ঘোষণা দিলেন অ্যাবট।
২০১৩ সালে নির্বাচনের আগে শরণার্থী ইস্যুতে কঠোর অবস্থান নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন অ্যাবট। সরকারের দায়িত্ব নেওয়ার পর তার বাস্তবায়নও করতে শুরু করেছিলেন তিনি। তবে সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে অব্যাহত সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে হাজার হাজার লোক ভূমধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে প্রবেশ করছে। গত সপ্তাহে তুরস্ক উপকূলে সিরীয় শরণার্থী শিশু আইলানের মৃত্যুর ছবি গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। এরপরই শরণার্থী ইস্যুতে ইউরোপ ও পশ্চিমা নেতাদের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়। এর হাওয়া লাগে অস্ট্রেলিয়ায়ও। চলতি সপ্তাহের শুরুতেই প্রধানমন্ত্রী অ্যাবট আরো বেশি শরণার্থী আশ্রয় দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন।
বুধবার ক্যানবেরায় এক সংবাদ সম্মেলনে অ্যাবোট বলেন, তারা সবমিলিয়ে ১২ হাজার শরণার্থীকে আশ্রয় দেবেন। ফলে চলতি বছর দেশটিতে আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা ১৩ হাজার ৭৫০-এ গিয়ে দাঁড়াবে। জর্ডান, লেবানন ও তুরস্কে সাময়িক আশ্রয় নেওয়া শরণার্থীদের মধ্য থেকে এই ১২ হাজারকে স্থায়ীভাবে অস্ট্রেলিয়ায় আশ্রয় দেওয়া হবে।
অ্যাবট বলেন, ‘জর্ডান, লেবানন ও তুরস্কে আশ্রয় নেওয়া নিপীড়িত সংখ্যালঘুদের যেসব নারী, শিশু ও পরিবারের স্থায়ী আশ্রয়ের প্রয়োজন অনেক বেশি, তাদের মধ্য থেকে নতুন ১২ হাজার লোককে স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন করাই আমাদের লক্ষ্য।’
সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া সরকারের বেশ কয়েকজন সদস্য কেবল সিরিয়ার নিপীড়িত খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীকে আশ্রয় দেওয়া উচিত বলে মত দিয়েছিলেন। তবে অন্যান্য রাজনৈতিক দল, মুসলিম সংস্থা ও আন্তর্জাতিক দাতব্য সংস্থাগুলো এর সমালোচনা করে বলেছিল, ধর্মবিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত নয়।
বুধবার অ্যাবট বলেন, ‘সরকার কোনো পক্ষপাতমূলক আচরণ করছে না। যেহেতু মুসলমান ও অমুসলমান উভয় ধর্মাবলম্বী সংখ্যালঘুরা নিপীড়িত হচ্ছে, আমরা তাদের সবাইকে গুরুত্ব দিচ্ছি।’
সংবাদ সম্মেলনে সিরিয়া ও ইরাকের গৃহহীন ২ লাখ ৪০ হাজার মানুষকে সহায়তায় জাতিসংঘে ৩ কোটি ২০ লাখ মার্কিন ডলার সহায়তার ঘোষণা দিয়েছেন অ্যাবট।