২০০১ সালে কর্ণেল অলি ২১’শ মানুষকে আসামী করেছে

0

নিজস্ব প্রতিনিধি,চন্দনাইশ : বিজিসি ট্রাস্টের প্রতিষ্টাতা চেয়ারম্যান, সাবেক সংসদ সদস্য,বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার আফছার উদ্দীন আহমেদ বলেছেন, তিনি রাজনীতি জীবনে কোন আত্মীয়কে মঞ্চে বসতে দেননি। এখন যারা রাজনৈতিক নেতার দায়িত্ব পালন করছেন তারা আত্মীয় স্বজনকে সর্বক্ষেত্রে প্রাধান্য দিচ্ছেন। মঞ্চে বসে নেতা-কর্মীদের অনেক বেদনার কথা শুনেছি। দীর্ঘ ৪ বছর নেতা-কর্মীদের সাথে অসুস্থতার কারণে থাকতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন।

এখন থেকে যতদিন বেচেঁ থাকবেন,ততদিন চন্দনাইশ আ’লীগের সাথে থাকার আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেন, আফছার উদ্দীনের বদনাম আছে, তিনি নামলে আর উঠেন না। রাজনৈতিক নেতাদের হৃদয় বড় করে সেখানে আত্মীয়-স্বজন বাদ দিয়ে নেতা-কর্মীদের জায়গা করে দিতে হয়। জীবনে ২ বার বুয়েটের ভিপি,২ বার সংসদ সদস্য ২বার ছাত্র রাজনীতি করতে গিয়ে কারাবরণ করেছেন।

মুক্তিযুদ্ধে অংশ গ্রহন করে মুজিববাহিনীর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশের যেভাবে উন্নয়ন হয়েছে, শেখ হাসিনা রোল মডেল হিসেবে বিশ্বে স্বীকৃতি পেয়েছেন। এম.পি হওয়া বড় কথা নয়, মানুষের মনে জায়গা করে নেয়া রাজনীতিবিদদের গুণ। ২০০১ সালে কর্ণেল অলি ২১’শ মানুষকে আসামী করেছে। অনেক আ’লীগ নেতাকে ভিটা ছাড়া হতে হয়েছে।

এখন আ’লীগের আমলে যদি আবার মামলার স্বীকার হতে হয়, তাহলে এ ত্যাগী নেতারা যাবে কোথায়। আ’লীগের মানুষ মামলা খাচ্ছে শুনে লজ্জা পাচ্ছি। পুলিশও হাসে কাকে ধরার কথা কাকে ধরি। তিনি বলেন, জাতীয় পাটির সংসদ সদস্য থাকাকালে কোন আ’লীগ নেতাকে মামলা দেন নাই।

সংসদে গিয়ে বঙ্গবন্ধুকে জাতির জনক বলে মুক্তিযুদ্ধের কথা বলায় তখন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনা তাকে ধন্যবাদ দিয়েছিলেন। সামনে দিন আরও খারাপ আসছে।রাজাকার,যুদ্ধাপরাধী,বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারীদের বিচার করেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তারা বসে নেই। খালেদা জিয়া জেলে থাকলেও বিএনপি, জামাত, কর্ণেল অলি, যুদ্ধাপরাধীরা সংগঠিত হয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছে। সরকারের কর্মকর্তারা এখন আ’লীগ দেখলে সালাম দিচ্ছেন। নির্বাচনের সময় পরিবর্তন হয়ে যাবে। কথাও বলবে না। গ্রামের মানুষের কাছে যেতে হবে।

সাধারণ মানুষ খুবই সচেতন। ২ বার নির্বাচন করে ফেল করেছি। বর্তমান এম.পি নজরুল ইসলাম আল্লাহর রহমতে এম.পি হয়েছেন বলে নেতা-কর্মীদের বলে থাকেন। আপনারা যারা নির্বাচন করতে চাচ্ছেন,তাদেরকে সে উক্তি দিয়ে চলবে না। এম.পি নজরুল সরল মানুষ। তাই বুঝতে পারছেন না। বিপদ আসলে আত্মীয়রা পাশে থাকবে না। থাকবে আ’লীগের নেতা-কর্মীরা।

আগামীতে আরও কঠিন থেকে কঠিনতম পরীক্ষা দিতে হবে। বিগত ৪ বছর যোগ্য নেতার অভাবে আ’লীগের মিলন হয়নি। রাজনৈতিক চর্চা হয়নি। অলিরা খুবই নিষ্টুর মানুষ। তাদের থেকে সজাগ থাকতে হবে।

দক্ষিণ জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেছেন, কর্ণেল অলির দূর্গে অনেক নেতা-কর্মী এবং তিনি নিজে অনেক নির্যাতনের স্বীকার হয়েছেন। তার দু:শাসনে ২০০১ সালে ২১’শ আ’লীগ নেতা মামলার আসামী হয়েছেন। এম.পি মন্ত্রী হওয়ার জন্য রাজনীতি করা ঠিক না। রাজনৈতিক আর্দশ বাস্তবায়ন করে মানুষের জন্য কাজ করার উপর তিনি গুরুত্বারোপ করেন। রাজনীতি ব্যবসা বা পেশা নয়। সভ্যতার জন্য রাজনীতি করার পরামর্শ দেন। মৃত্যুকে বরণ ও হাতে নিয়ে অনেকে রাজনীতি করে যাচ্ছেন।

কর্ণেল অলি’র আমলে নির্যাতন এবং মামলার স্বীকার যারা হয়েছেন তারা কেন এখন মামলার আসামী হয়েছেন। যারা আসামী করছেন তাদের হিসাব দিতে হবে। সময়ের অপেক্ষায় আছি। বিএনপি’র দু: শাসন দেখেছি, রাজনীতির আবর্জনা পরিহার করে মেধাবী,আদর্শবান, যুক্তিনির্ভর, রাজনীতিবিদ তৈরি করে আ’লীগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সভাপতি-সম্পাদকে পরামর্শ দেন।
শনিবার ১৭ মার্চ বিকালে চন্দনাইশ উপজেলা আ’লীগের উদ্যোগে গাছবাড়ীয়া উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে সংগঠনের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম জাহাঙ্গীরের সভাপতিত্বে এক কর্মীসভা অনুষ্টিত হয়। আগামী ২১ মার্চ পটিয়ায় প্রধানমন্ত্রী আগমনকে কেন্দ্র করে কর্মীসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিজিসি ট্রাস্টের প্রতিষ্টাতা চেয়ারম্যান, সাবেক সংসদ সদস্য,বীর মুক্তিযোদ্ধা ইঞ্জিনিয়ার আফছার উদ্দীন আহমেদ। প্রধান বক্তা ছিলেন দক্ষিণ আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মুফিজুর রহমান।

বিশেষ অতিথি ছিলেন রিহ্যাব চট্টগ্রাম চাপ্টারের চেয়ারম্যান আবদুল কৈয়ুম চৌধুরী। সাধারণ সম্পাদক আবু আহমদ জুনুর সঞ্চালনায় আলোচনায় অংশ নেন উপজেলা আ’লীগের সহ-সভাপতি এম.কায়সার উদ্দীন চৌধুরী, যুগ্ম সম্পাদক যথাক্রমে মাহবুর রহমান চৌধুরী,এড. নজরুল ইসলাম সেন্টু,সাংগঠনিক সম্পাদক বাবর আলী ইনু,শাখায়াত হোসেন শিবলী, প্রচার সম্পাদক হেলাল উদ্দীন চৌধুরী, চেয়ারম্যান আহমদুর রহমান ভেট্টা, সাবেক চেয়ারম্যান যথাক্রমে আবদুল মান্নান,আবদুল শুক্কুর, আ’লীগ নেতা সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান খালেদা আকতার চৌধুরী,জাবেদ মো. গাউছ মিল্টন, সমীরণ দাশ তপন, কাউন্সিল হেলাল উদ্দীন চৌধুরী,উৎপল রক্ষিত, দিদারুল আলম চৌধুরী, নবাব আলী, বেলাল হোসেন মিঠু, মো. শাহাজাহান, শাহাদাত নবী খোকা, মাষ্টার হুমায়ান কবির, মেম্বার ইদ্রিচ, হেলাল উদ্দীন, আবদুর শুক্কুর,বশির উদ্দীন মুরাদ,কবির আহমদ সওদাগর, সেলিম উদ্দীন,আবুল কালাম, প্রজম্ম লীগ নেতা নাজিম উদ্দীন, স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা সেলিম হোসেনসহ আ’লীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীগ, শ্রমিকলীগ,কৃষক লীগ,অঙ্গ সংগঠন ও সহযোগি সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

বিকাল ৩ টায় কর্মী সমাবেশ শুরু হয়ে রাত সাড়ে ৮ টায় শেষ হয়। ৩ টা ১৫ মিনিটে ইঞ্জিনিয়ার আফছার উদ্দীন সভাস্থলে উপস্থিত হয়ে সবশেষে বক্তব্য রাখলেও নেতা-কর্মীরা কোন রকম অ্যাপায়ন ছাড়াই মাঠে অবস্থায় করছিলেন। তিনি তার বক্তব্যে যখন নেতা-কর্মীদের সাথে থাকার ঘোষনা দেন তখন চারিদিক থেকে করতালিতে মুখরিত হয়ে উঠে সভাস্থল। সভার শুরুতে কেক কেটে বঙ্গবন্ধুর জন্ম বার্ষিকী পালন করা হয়। কর্মী সমাবেশে আসা নেতা-কর্মীদের মাঝে সংগঠিত হওয়া আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন সিনিয়র নেতৃবৃন্দ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.