চন্দনাইশ বরকল বেইলী ব্রীজটি ঝুঁকিপূর্ণ:দুর্ঘটনার আশঙ্কা

0

নিজস্ব প্রতিনিধি,চন্দনাইশ : চন্দনাইশে বরকল বেইলী ব্রীজটিসহ ৫টি বেইলী ব্রীজ ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।ব্রিজটিতে ভারী যানবহন চলাচল করায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী। র্দীঘ সময় ধরে এ বেইলী ব্রীজ পূর্ণাঙ্গ ব্রীজে রূপ না নেয়ায় ঝুঁকিতে চলাচল করছে যানবাহন।

চন্দনাইশ উপজেলার সাথে আনোয়ারা উপজেলার সংযোগ সেতু বরকল বেইলী ব্রীজটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। দীর্ঘ ২৪ বছরেও বেইলী ব্রীজটি পূর্ণাঙ্গ রূপ নেয়নি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে। বিগত ১৯৯৩-৯৪ অর্থ বৎসরে প্রায় ১ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয়েছিল চন্দনাইশ উপজেলা ও আনোয়ারা উপজেলা সংযোগ সেতু নামে পরিচিত বরকল বেইলী ব্রীজটি। ৩৬৫ ফুট দীর্ঘ, ১২ ফুট চওড়া এ বেইলী ব্রীজের নির্মাণ কাজ ৯৪ সালে শেষ হয়ে ঐ সালের প্রথম দিকেই জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করে দেয়া হয়। ব্রীজটিতে ৩টি স্প্যান স্থাপন করা হয়েছে। সংশ্লিষ্টদের মতে সম্পূর্ণ অস্থায়ী ভিত্তিতে পূর্ণাঙ্গ ব্রীজ নির্মাণ করার জন্য এ বেইলী ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু বরকলের এ বেইলী ব্রীজটি নির্মাণের ২৪ বছর অতিবাহিত হলেও ব্রীজটি পূর্ণাঙ্গ ব্রীজে রূপ নেয়নি।

চন্দনাইশ ও আনোয়ারা উপজেলার যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম হচ্ছে এ ব্রীজটি। কোন কারণে ব্রীজটি ক্ষতিগ্রস্থ হলে আনোয়ারার সাথে চন্দনাইশের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। অথচ এ ব্রীজ দিয়ে চন্দনাইশ উপজেলার বৈলতলী, বরমা, বরকলের অর্ধ শতাধিক যাত্রীবাহী বাস, শত শত সিএনজি টেক্সী, প্রাইভেট কার, মাইক্রো, নোহা, ইউরিয়া ফার্টিলাইজারের সারভর্তি ট্রাক ঝুকিপূর্ণভাবে চলাচল করছে দীর্ঘদিন থেকে। বরকল বেইলী ব্রীজটির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এ ধরনের বেইলী ব্রীজগুলি এক থেকে দেড় বছরের জন্য অস্থায়ীভবে নির্মাণ করা হয়, পূর্ণাঙ্গ ব্রীজ না হওয়া পর্যন্ত। জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে এ ধরনের বেইলী ব্রীজগুলি করা হয় বলে তারা জানান। বর্তমানে বরকলের এ বেইলী ব্রীজটি সম্পূর্ণ ঝুকিপূর্ণভাবে রয়েছে।

৩টি স্প্যানের সংযোগ স্থানে স্প্যানগুলি সরে গিয়ে মধ্যখানের লোহার বারটি ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে গেছে। ফলে গাড়ী চলাচলের সময় গাড়ীর টায়ার সহ বিভিন্ন যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে বলে দাবী করেছেন গাড়ীর চালকেরা। এ ধরনের ব্রীজের উপর দিয়ে সর্বোচ্চ ১০ টন ভারী যানবাহন চলাচল করতে পারে। কিন্তু বর্তমানে ব্রীজটির উপর দিয়ে ঝুকিপূর্ণভাবে এর চেয়েও অধিক ওজনের মালামালবাহী ট্রাক চলাচল করছে অবাধে। তাই যেকোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেছেন বিশেষজ্ঞ মহল।

এলাকাবাসীর দাবী চন্দনাইশ ও আনোয়ারা উপজেলার সাধারণ মানুষের চলাচলের একমাত্র এ বরকল ব্রীজটি পূর্ণাঙ্গ ব্রীজে রূপ নিয়ে মহাজোট সরকারের প্রতিশ্রুতি জনবান্ধব সরকার হিসেবে ব্রীজটি নির্মাণ করার জন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন। উল্লেখ্য যে, ১৯৯৪ সালে বিএনপি সরকারের শাসন আমলে এ বেইলী ব্রীজটি নির্মাণ হয়েছিল পূর্ণাঙ্গ ব্রীজে রূপ দেয়ার জন্য। কিন্তু বিএনপি সরকার ক্ষমতা থেকে যাওয়ার পর আ’লীগ ক্ষমতায় আসে। পরবর্তীতে তত্ত্বাবধায় সরকার তিন বছর ক্ষমতায় থাকাকালীন তৎকালীন শিক্ষা ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমানও এ ব্রীজের কাজটি সম্পন্ন করেন নি।

পরবর্তীতে মহাজোট সরকারের ৯ বছরের শাসন আমলে এ বেইলী ব্রীজটি পূর্ণাঙ্গ ব্রীজে রূপ দেয়ার কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। বর্তমানে এ বেইলী ব্রীজটি ঝুকিপূর্ণ হয়ে পড়ায়, মেরামত তথা পূর্ণাঙ্গ ব্রীজে রূপ দেয়া অত্যন্ত জরুরী হয়ে পড়েছে বলে বিশেষজ্ঞ মহল অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
২০১৬ সালের প্রথম দিকে আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি গাছবাড়ীয়া-বরকল সড়ককে শহীদ মুরিদুল আলমের নামে ফলক উন্মোচনের সময় সরজমিনে পরিদর্শন করেন বেইলী ব্রীজটি।

সে সময় স্থানীয়দের দাবীতে ব্রীজটি পূর্ণাঙ্গ ব্রীজে রূপ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু প্রায় দুই বছর অতিবাহিত হলেও সে প্রতিশ্রুতির বাস্তবায়ন না হওয়ায় এলাকাবাসী অনেকটা হতাশ। এ ব্যাপারে মন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

একইভাবে চন্দনাইশ পৌরসভার আবদুল বারী হাট সংলগ্ন বেইলী ব্রীজ, দোহাজারী লালুটিয়া বেইলী ব্রীজ, ছৈয়দাবাবাদের ৩নং লর্ট এলাহাবাদের বেইলী ব্রীজ, সাতবাড়ীয়ার হাছনদন্ডী মাদরাসা সংলগ্ন বেইলী ব্রীজসহ ৫টি বেইলী ব্রীজই ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। এ সকল বেইলী ব্রীজগুলো যাত্রী সাধারণের জন্য মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। মেয়াদ উত্তীর্ণ ও মরিচা (ঝং ধরা) পুরাতন এসব বেইলী ব্রীজের পাটাতন ভেঙ্গে প্রায় ঘটছে দুর্র্ঘটনা। এসব বেইলী ব্রীজগুলি পূর্ণাঙ্গ ব্রীজে রূপ দেয়া অতীব জরুরী মনে করছেন বিশেষজ্ঞ মহল। এ ব্যাপারে সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.