আনোয়ারায় শঙ্খের ভাঙ্গন,হুমকির মুখে অর্ধশতাধিক পরিবার
জাহেদুল হক,আনোয়ারা :: স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় আনোয়ারা উপজেলার বারখাইনে আবারও শঙ্খের ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। যদিও ইতিপূর্বে ওই এলাকায় ভাঙ্গন প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু কাজের ধীরগতির কারণে বর্ষায় ওই স্থানের অনেক পরিবার নিঃস্ব হয়ে পড়েছে।
জানা যায়,গত কয়েক বছরে শঙ্খনদীর তীব্র ভাঙ্গনে উপজেলার বারখাইনের শাহারপাড়া ও জেলেপাড়ার অসংখ্য বাড়ি-ঘর ও ফসলি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙ্গনের মুখে রয়েছে মসজিদ,মন্দিরসহ অসংখ্য ঘর-বাড়ি ও বিভিন্ন স্থাপনা। বেড়িবাঁধ না থাকায় এসব বাড়ি-ঘরে জোয়ারের পানি উঠানামা করছে। এতে বিভিন্ন ফসলের ক্ষতি হওয়ায় কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। সেই সাথে নদী ভাঙ্গনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় জনমনে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্র জানায়,উপকূল সুরক্ষায় সরকারের ২৮০ কোটি টাকার মেগা প্রকল্পের আওতায় ওই স্থানের ৫০০ মিটার এলাকার উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে। সেখানে স্থায়ী বেড়িবাঁধ,জিও ব্যাগ ডাম্পিং ও সিসি ব্লক নির্মাণ করা হবে। ইতিমধ্যে ওই এলাকার অধিকাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সম্পূর্ণ কাজ বুঝিয়ে দেবে।
স্থানীয়দের দাবি,গত ৮ মাসে কাজ হয়েছে শতকরা ৩০ ভাগেরও কম। এ কারণেই এক পাশে চলছে ভাঙ্গন আর অন্য পাশে চলছে প্রতিরোধ কার্যক্রম। এদিকে দ্রুত কাজ সম্পন্ন করতে এলাকাবাসী ইতোমধ্যে বিভিন্নভাবে তদবির করেও সুফল পায়নি। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান গড়িমসি করে কাজ করায় নদীর পানি বেড়ে ব্যাপক ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। ডাম্পিং করার অধিকাংশ জিও ব্যাগ ক্রমশ নদীর পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে ভাঙ্গনকবলিত এলাকার লোকজন। ফলে হুমকির মুখে ওই এলাকার অর্ধশতাধিক পরিবার।
তাদের দাবি,এভাবে নদীর ভাঙ্গন অব্যাহত থাকলে আনোয়ারার মানচিত্র থেকে বারখাইন গ্রামের শাহারপাড়া ও জেলেপাড়া হারিয়ে যাবে। তবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের দাবি,বর্ষার কারণে তারা কাজ এগোতে পারছেন না। তাছাড়া ওই এলাকায় এখনো ঘরবাড়ি না সরানোর ফলে বাঁধ নির্মাণ করা যাচ্ছে না। খুব সহসাই তারা কাজ শেষ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
স্থানীয় ইউপি সদস্য আজিজুল হক আজিজ জানান,ভাঙ্গন প্রতিরোধে সরকারের যথেষ্ট আন্তরিকতা রয়েছে। শুধুমাত্র ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের গাফিলতির কারণেই আজ বারখাইনের শাহারপাড়া ও জেলেপাড়ার অর্ধশত পরিবার হুমকির মুখে। এ অবস্থায় ভাঙ্গন প্রতিরোধে ব্যবস্থা না নিলে সহসাই এসব ঘরবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। তাই ভাঙ্গনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঠিকাদারের প্রতি আহবান জানান তিনি। এদিকে এ বিষয়ে জানতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জহির উদ্দিনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি মিটিংয়ে থাকার কারণে কথা বলতে পারেননি।
আনোয়ারা উপজেলা চেয়ারম্যান তৌহিদুল হক চৌধুরী বলেন,দ্রুত সময়ের মধ্যে কাজ সম্পন্ন করতে আমরা বার বার তাগিদ দিয়ে আসছি। ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ এমপি প্রতিনিয়ত এ ব্যাপারে খোঁজ-খবর রাখছেন। তিনি অতি দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছেন।