ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া মুক্তির কোনো উপায় নেই: ফখরুল

0

সিটিনিউজ ডেস্ক:: বিএনপির নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে আগামী দিনের কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়া আমাদের বলেছেন, সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। ঐক্যবদ্ধ হয়ে এ দানব সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। কারণ ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন ছাড়া মুক্তির কোনো উপায় নেই।
আজ রোববার বিকেলে রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত বিএনপির জনসভায় এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

জনসভায় দলের পক্ষে আট দফা দাবি তুলে ধরেন মির্জা ফখরুল। ওই দাবিগুলো আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন তিনি। দাবি আদায়ে আগামী ৩ অক্টোবর সারা দেশের জেলায় জেলায় সমাবেশ করা হবে ও জেলা প্রশাসকদের স্মারকলিপি দেওয়া হবে। ৪ অক্টোবর দেশের মহানগরগুলোতে সমাবেশ ও বিভাগীয় কমিশনারের কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হবে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, আমরা আমাদের কর্মসূচি শুরু করতে চাই। কারণ এ সরকার আমাদের দেশ, জাতি, সমাজ ও গণতন্ত্রকে শেষ করে দিয়েছে। তাই এ সরকারের বিরুদ্ধে আমাদের আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করব। আগামী দিনে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজপথে আন্দোলনের কর্মসূচি সফল করতে হবে।

সরকার ও পুলিশের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, একবার চিন্তা করেছেন যেভাবে মামলা দিচ্ছেন তদন্ত হলে তখন কি জবাব দিবেন? সব কিছুর জবাব দিতে হবে। এ সরকারের নিস্তার নেই, তাদের সব অপশাসনের জবাব দিতে হবে। আসলে সরকার ভয় পেয়েছে। আর সে জন্য মামলা দিয়ে ভয় দেখাচ্ছে। আওয়ামী লীগ রাতে দুঃস্বপ্ন দেখে খালেদা জিয়া, তারেক রহমান বলে বলে ভয়ে চিৎকার করে ওঠে। তাই ভয়ের কারণে বলে সবকিছুতে বিএনপির ষড়যন্ত্র করে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, কারাগারে বন্দি খালেদা জিয়া আমাদের সামনে নেই। কিন্তু তাঁর খালি চেয়ার আমাদের সামনে আছে। খালেদা জিয়া আমাদের চোখের সামনে না থাকলেও তিনি আমাদের হৃদয়ের মাঝে আছেন।

বিএনপির ৮ দফায় যা আছে-

নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগেই

১. দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি এবং তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা সব মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার

২. জাতীয় সংসদ বাতিল করা

৩. সরকারের পদত্যাগ ও সব রাজনৈতিক দলের সাথে আলোচনা সাপেক্ষে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠা করা

৪. যোগ্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে নির্বাচন কমিশন পূর্ণ গঠন করতে হবে

৫. সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতাসহ সশস্ত্রবাহিনী নিয়োগ নিশ্চিত করা

৬. নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার না করার বিধান নিশ্চিত করা

৭. নির্বাচনের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে দেশীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক নিয়োগের ব্যবস্থা নিশ্চিত করা এবং সম্পূর্ণ নির্বাচন-প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণে তাদের ওপর কোনো প্রকার বিধি-নিষেধ আরোপ না করা

৮. ক. দেশের সব বিরোধী রাজনৈতিক নেতাকর্মীর মুক্তি, সাজা বাতিল ও মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার

খ. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার তারিখ থেকে নির্বাচনী ফলাফল চূড়ান্তভাবে প্রকাশিত না হওয়া পর্যন্ত চলমান সব রাজনৈতিক মামলা স্থগিত রাখা এবং নতুন কোনো ধরনের মামলা না দেওয়ার নিশ্চয়তা

গ. পুরোনো মামলায় কাউকে গ্রেপ্তার না করার নিশ্চয়তা

ঘ. কোটা সংস্কার আন্দোলন, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন, সাংবাদিকদের আন্দোলন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্বাধীন মতপ্রকাশের অভিযোগে ছাত্রছাত্রী, সাংবাদিকসহ সবার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার এবং গ্রেপ্তারকৃতদের মুক্তির নিশ্চয়তা।

বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি ও সুচিকিৎসা, নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন, ভোটের সময় সেনা মোতায়েনসহ বিভিন্ন দাবিতে আজকের জনসভা হয়। দুপুর ২টায় পবিত্র কোরআন তিলাওয়াতের মাধ্যমে জনসভার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। চলে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত। জনসভায় প্রধান অতিথি করা হয় কারাবন্দি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে।

গতকাল শনিবার ঢাকা মহানগর পুলিশ বিএনপিকে আজ সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা করার জন্য ২২ শর্তে অনুমতি দেয়। এরপরই চলে সভা সফল করতে বিএনপির প্রস্তুতি।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.