পুলিশে আরও ৫০ হাজার নতুন পদের সিদ্ধান্ত

0

সিটিনিউজবিডি : পুলিশ বাহিনীর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস মোকাবিলায় পুলিশ সদস্যরা দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। বিগত সময়ে কয়েকটি রাজনৈতিক দল দেশে সন্ত্রাসী কর্মকা- চালিয়েছে। এসময় দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রায় ২০ জন আইনশৃঙ্ঘলা বাহিনীর সদস্য জীবন দিয়েছেন। দেশমাতৃকার জন্য যারা অবদান রেখেছেন, জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে তাদের স্মরণ করবে। আওয়ামী লীগ সরকার সব সময় পুলিশ বাহিনী আধুনিকায়নে গুরুত্ব দিয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে ৭৩৩টি ক্যাডার পদসহ ৩২ হাজার ৩১টি পদ সৃষ্টি করা হয়েছে। তারপরও দেশের জনসংখ্যার অনুপাতে পুলিশের জনবল যথেষ্ট নয়। আমরা বাংলাদেশ পুলিশে আরও ৫০ হাজার নতুন পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ইতোমধ্যে ১০ হাজার পুলিশ সদস্যের নিয়োগ সম্পন্ন হয়েছে। বাকি জনবলের নিয়োগ কার্যক্রম অচিরেই সম্পন্ন হবে।’

রাজশাহীর সারদায় বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমিতে ৩৩তম বিসিএস (পুলিশ) ক্যাডারের শিক্ষানবিস সহকারী পুলিশ সুপারদের শিক্ষা সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠান এ সব কথা বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য একবিংশ শতাব্দীর চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একটি যুগোপযোগী আধুনিক পুলিশ বাহিনী গড়ে তোলা। এ জন্য আমরা বিভিন্ন বাস্তবমুখী ও জনবান্ধব কর্মসূচি গ্রহণ করেছি।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে যখন কোনো অপতৎপরতা হয়, তা পুলিশ বাহিনী মোকাবেলা করে থাকে। বাংলাদেশে বিভিন্ন ধরনের জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস মোকাবেলায় অত্যন্ত দক্ষতার সাথে পুলিশ কাজ করে যাচ্ছে। দুর্ভাগ্য যে কয়েকটি দল মিলে এ দেশে যখন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালায়, আগুন দিয়ে মানুষ হত্যা করে, স্ব-স্ব দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে প্রায় ২০ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য জীবন দিয়েছেন। তাদের মধ্যে পুলিশ সদস্য রয়েছে ১৭ জন। যারা জীবন দিয়েছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে বলব, দেশ মাতৃকার জন্য তারা যে অবদান রেখেছেন তা জাতি চিরদিন শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বীকার করবে।’

প্রশিক্ষণ সম্পন্নকারী নবীন কর্মকর্তাদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ আপনাদের পেশাগত জীবনের একটি গৌরবোজ্জ্বল দিন। কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে শেষ হতে চলেছে আপনাদের কঠোর মৌলিক প্রশিক্ষণ। এ প্রশিক্ষণের মাধ্যমে পেশাগত জ্ঞান ও শৃঙ্খলার প্রতি যে আনুগত্যবোধ আপনারা অর্জন করেছেন, তা জনগণের শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় কাজে লাগাবেন, এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

এ শুভক্ষণে তিনি গভীর শ্রদ্ধার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্মরণ করেন। সেই সঙ্গে তিনি শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদদের; যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জন। এ ছাড়াও তিনি জাতীয় চার নেতাকে স্মরণ করেন। সেই সঙ্গে সমবেদনা জানান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত মা-বোন ও অগনিত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধার প্রতি।

তিনি বলেন, ‘এ পুলিশ একাডেমির প্রিন্সিপালসহ ২৪ জন শহীদ শায়িত আছেন পদ্মাতীরে। দেশমাতৃকার প্রতি এ মহান আত্মত্যাগের স্বীকৃতি স্বরূপ আমাদের সরকার ২০১১ সালে বাংলাদেশ পুলিশকে ‘‘স্বাধীনতা পদকে’’ ভূষিত করে।’

সারদার পুলিশ একাডেমির প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘হোম অব পুলিশ খ্যাত এ একাডেমিকেও আমরা ঢেলে সাজিয়েছি। নবনিযুক্ত সহকারী পুলিশ সুপারদের মৌলিক প্রশিক্ষণের পাশাপাশি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে Master of Police Science ডিগ্রি প্রদান করা হচ্ছে। এ ছাড়া আধুনিক শ্রেণিকক্ষ, কম্পিউটার ল্যাব, ল্যাংগুয়েজ ল্যাব, ফরেনসিক ডেমোন্সট্রেশন ল্যাব, ড্রাইভিং ও শ্যুটিং সিমিউলেটর প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.