ভাঁওতাবাজির নির্বাচন কেউ মেনে নেবে না-ড. কামাল

0

সিটি নিউজ ডেস্ক :  জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষনেতা ড. কামাল হোসেন বলেছেন, জনগণকে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে না দিলে দেশে মহাসংকট সৃষ্টি হবে। এখনো সামনে সাত দিন সময় আছে। এ সময়ের মধ্যে বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার হয়রানি বন্ধ করে, প্রচারের সমান সুযোগ দিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করুন। মাথা ঠাণ্ডা করুন। তা না করে ভাঁওতাবাজির নির্বাচন করলে তা কেউ মেনে নেবে না। শুক্রবার ২১ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় পুরানা পল্টনে ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

এ সময় তিনি ঢাকা মহানগরে গণমিছিল ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভার কর্মসূচি ঘোষণা করেন।

কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মহানগরের ঢাকা-৪ থেকে ঢাকা-১৮ প্রতিটি আসনে ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত একই সময়ে জনসভা ও গণমিছিল এবং ২৭ ডিসেম্বর দুপুর ২টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, দলটির কার্যকরী সভাপতি সুব্রত চৌধুরী, গণফোরাম নেতা জগলুল হায়দার আফ্রিক প্রমুখ।

সংবাদ সম্মেলনে ধানের শীষের প্রার্থীসহ নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার, তাদের ওপর হামলা, উল্টো মামলা দেওয়া, উচ্চ আদালতের নির্দেশে ১৩টি আসনে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থিতা শূন্য হওয়াসহ সারাদেশের চিত্র তুলে ধরেন ড. কামাল। ঐক্যফ্রন্টের পক্ষ থেকে ওই শূন্য আসনগুলোয় পুনঃতফসিল ঘোষণারও দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, গতকালও যশোর-২ আসনের ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থী আবু সাঈদ মো. শাহাদাত হুসাইনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত ঐক্যফ্রন্টের ১৬ প্রার্থীকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে নেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশে ১৩টি আসনে প্রার্থী শূন্য হয়েছে। ভুতুড়ে মামলায় আরও দুই প্রার্থীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। ড. কামাল হোসেন বলেন, ঢাকা-৯ আসনের আফরোজা আব্বাস, সিরাজগঞ্জ-২ আসনের রোমানা মাহমুদ টুকু, নাটোর-২ আসনে সাবিনা ইয়াসমিন ছবি, সিরাজগঞ্জ-১ কনকচাঁপাসহ ৫ নারী প্রার্থীর ওপর হামলা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচন কমিশন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক আইন করে উপজেলা চেয়ারম্যান ও পৌর মেয়রদের ক্ষেত্রে পদত্যাগ করে সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিধান করেছে। অন্যদিকে উচ্চ আদালত একে একে তাদের প্রার্থিতা অবৈধ ঘোষণা করে চলেছেন। এতে ঐক্যফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থীদের নির্বাচনের আগেই মাঠ থেকে সরে যেতে হচ্ছে। এর সুবিধা নিচ্ছেন ক্ষমতাসীনরা। প্রায় প্রতিদিন নানাভাবে ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থীদের মনোনয়ন বাতিল করা হচ্ছে, যা ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচনের বাইরে ঠেলে দেওয়ার শামিল।

তিনি বলেন, জনগণকে ভোট দিতে না দেওয়াটা হবে দেশের স্বাধীনতার ওপর আঘাত। এ আঘাত কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। আর তখন সংবিধান লঙ্ঘনের মতো চরম অপরাধের জন্য দায়ী হবে এ সরকার। বর্তমান সরকার তাদের কার্যকলাপে অতীতের সব স্বৈরাচারকে ছাড়িয়ে গেছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

বিরোধী নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তার ও হয়রানির তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, বিগত ৫০ বছরের অভিজ্ঞতা বলছে, এভাবে পরিকল্পিতভাবে পুলিশকে রাস্তায় নামিয়ে দেওয়া, পুলিশ ও সরকারি দল মিলে যারা ভোট চাইতে যাচ্ছে, তাদের ওপর আক্রমণ করার মতো ঘটনা আর কখনো হয়নি। এমন আর কখনো দেখিনি। এটা যেন অবিলম্বে বন্ধ করা হয়।

ড. কামাল হোসেন বলেন, অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের সুযোগ না দেওয়া হলে যারা নির্বাচিত দাবি করবে- তাদেরকে কোনোভাবেই নির্বাচিত প্রতিনিধি হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া যাবে না। তখন মহাসংকট সৃষ্টি হবে। সরকারের উদ্দেশে তিনি বলেন, মাথা ঠিক করেন। মাথা ঠান্ডা করেন। এভাবে ভাঁওতাবাজি করে জিতবেন, এটাকে জেতা বলে না। তাই আপনাদের ভালোভাবে বলছি, সাত দিন সময় আছে। এসব বন্ধ করুন। না হলে জনগণ এ নির্বাচন মেনে নেবে না এবং কারও কাছেই তা গ্রহণযোগ্য হবে না। সংবাদ সম্মেলনে কলারোয়া ও ইটনা থানার ওসিসহ নৌকা প্রতীকে ভোট চাওয়া পুলিশ কর্মকর্তাদের অবিলম্বে প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয়।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.