নির্বাচনকে ঘিরে উখিয়া-টেকনাফে ইয়াবা পাচার বেড়েছে
শহিদুল ইসলাম উখিয়া (কক্সবাজার): একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও ইংরেজী নববর্ষকে সামনে রেখে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার লোকজন রাত দিন ব্যস্ত সময় পার করছেন। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বড় ধরনের মাদকের চালান পাচার করতে তৎপর হয়ে উঠছে উখিয়া -টেকনাফসহ রোহিঙ্গা ক্যাম্প ভিত্তিক সংঘবদ্ধ ইয়াবা পাচারকারী সিন্ডিকেট। এখানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রনালয়ের তালিকাভুক্ত ইয়াবা পাচারকারী সিন্ডিকেটও রয়েছে। এমনটি আশংকা করছেন মাদক প্রতিরোধ কমিটির নেতৃবৃন্দরা।
বিজিবি কর্তৃপক্ষ বলেছেন,মাদক দ্রব্য ও চোরা চালান প্রতিরোধে সীমান্ত এলাকায় সীমান্ত রক্ষী বিজিবি যথাযথ দায়িত্ব পালন অব্যাহত থাকবে।উখিয়ার সীমান্ত এলাকা পূর্বাঞ্চলীয় জনপদে প্রতিষ্টিত মাদক ও চোরা চালান প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি এড. এটি এম রশিদ আহম্মদ বলেন , নাইক্ষ্যংছড়ির তুমব্রু, ঘুমধুম উখিয়া সীমান্তের রেজু আমতলী, ডেইলপাড়া করইবনিয়া, বালুখালী রহমতেরবিল, আঞ্জুমান পাড়া, ধামনখালী ও বটতলী মাদক ও চোরা চালানের টানিং পয়েন্ট হিসাবে পরিচিত।
এসব পথে নিয়মিত চোরাই পন্য ও ইয়াবা পাচার হয়ে আসছে।মাদক পাচারকারীরা হলেন উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের দোছড়ি গ্রামের হাজী আলী আহম্মদের ছেলে শীর্ষ ইয়াবাকারবারী মাহমুদুল হক, উখিয়ার রাজাপালং ইউনিয়নের টিএন্ডটি লম্বাঘোনা এলাকার ইয়াবা সুন্দরী হিসাবে খ্যাত ম্যাডাম বেবী, উখিয়ার পালংখালী ইউনিয়নের থাইংখালী হাকিম পাড়া গ্রামের ইলিয়াছের ছেলে সাহাব উদ্দিন, ঘোনার পাড়া গ্রামের নুইজ্জ্যার ছেলে গোরা মিয়া, জালিয়া পালং ইউনিয়নের সোনারপাড়া গ্রামের জাগির হোসেন মাষ্টারের ছেলে লুৎফর রহমান,উখিয়া পালংখালী ইউনিয়নের রহমতেরবিল গ্রামের আহম্মইদ্যার ছেলে শাহজাহান, একই ইউনিয়নের পন্ডিত পাড়া গ্রামের হামিদুল হকের ছেলে হুমায়ুন , মৃত কাদের বক্কুর ছেলে জয়নাল উদ্দিন ভুট্রো, রহমতেরবিল এলাকার জালাল আহম্মদের ছেলে আনোয়ার, পালংখালীর গ্রামের রাসেল, জালিয়াপালং ইউনিয়নের ডেইল পাড়া গ্রামের ফজল কাদের, কুতুপালং এলাকার হাশেম, কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের লাদেন,
সোনার পাড়া বাজার এলাকার বদি আলম মাষ্টারের ছেলে ছমি উদ্দিন, সোনাইছড়ি গ্রামের মঞ্জুর আলম, বালুখালী এলাকার আব্দুল মজিদের ছেলে জাহাঙ্গীর, রত্লাপালং ইউনিয়নের রুহুল্লার ডেবা গ্রামের বাছা মিয়ার ছেলে জাহাঙ্গীর, উখিয়ার টিএন্ডটি লম্বাঘোনা গ্রামের মৃত ফকির আহম্মদের ছেলে মাহমুদুল করিম খোকা , উখিয়ার জাদিমোরা গ্রামের মোঃ হোছনের ছেলে কবির আহম্মদ, ডেইল পাড়া গ্রামের শামশুল আলমের ছেলে আলী আকবর প্রকাশ লুডা আকবর, রহমতেরবিল গ্রামের শামশুল আলমের ছেলে হেলাল উদ্দিন,জাগির হোছনের ছেলে জামাল উদ্দিন, রাজাপালং ইউনিয়নের ডেইলপাড়া গ্রামের ছব্বির আহম্মদের ছেলে জসিম উদ্দিন, কুতুপালং গ্রামের রশিদ আহম্মদের ছেলে আলী আকবর, মরিচ্যার ইয়াবা আলমগীর,
বালুখালী এলাকার নুরুল আলম ড্রাইভার, রাজাপালং ইউনিয়নের তুতুরবিল গ্রামের মৃত নাছির উদ্দিনের ছেলে নুরুল হাকিম, থাইংখালী জামতলী গ্রামের ইয়াবা রকিম।উখিয়ায় অন্তত ২০টি সিন্ডিকেট মোটা দাগের ইয়াবা লেনদেন ও পাচার কাজে লিপ্ত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
টেকনাফ থানার অফিসার ইনচার্জ প্রদীপ কুমার দাশ বলেন,পুলিশের সাথে বন্ধুক যুদ্ধের ঘটনায় ১৮ ইয়াবা কারবারী মারা গেছে। এসময় আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে আটক হয়েছে প্রায় ১০১ জন ইয়াবাকারবারী। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় ২০ লাখ ইয়াবা। তার পরেও মাছ ধরার নৌকা করে ইয়াবা পাচার হয়ে আসছে। তিনি আরো বলেন, মাদক পাচার প্রতিরোধে স্থানীয়রা প্রতিবাদী না হলে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর একার পক্ষে তা নিয়ন্ত্রন করা দূরহ ব্যাপার।
সরকার মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করে গত মে মাস থেকে সারা দেশ ব্যাপী মাদক বিরোধী অভিযান শুরু করে আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসময় পুলিশ, বিজিবি, র্যাব ও কোস্ট গার্ডের সদস্যদের দৃশ্যমান অভিযানের প্রেক্ষিতে ইয়াবা পাচার অনেকটা সহনিয় পর্যায়ে চলে আসার কথা জানিয়ে উখিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আবুল খায়ের বলেন ৪৩ টি মাদক দ্রব্য নিয়ন্ত্রন আইনে রুজু করা হয়েছে। এসব মামলায় ৬৪জন গ্রেফতার করে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে। উদ্ধার ২লাখ ৬৯ হাজার ৮শ ইয়াবা ট্যাবলেট ।
আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ও ইংরেজী নব বর্ষকে সামনে রেখে সীমান্ত রক্ষীসহ আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর ব্যস্ততার সুযোগে বড় ধরনের মাদকের চালান পাচার হওয়ার আশংখা রয়েছে। কক্সবাজার ৩৪ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল মঞ্জুরুল আহসান বলেন, সীমান্তে কড়াকড়ি অারোপ করা হয়েছে। যাতে বড় ধরনের মাদক পাচার হতে না পারে। টেকনাফ ব্যাটলিয়ন ২ বিজিবির অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল আসাদুজ্জামান চৌধুরী বলেন, সীমান্তে বিজিবির অবস্থান যথাযথ বৃদ্ধমান অবস্থান থাকবে। শত ব্যস্ততার পরেও যাতে ইয়াবা ও চোরা চালান পাচার হয়ে আসতে না পারে সে জন্য সীমান্তে বিজিবিকে সর্তক থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।