পটিয়ায় গাছিরা খেজুর রস সংগ্রহে ব্যস্ত

0

সুজিত দত্ত, পটিয়া প্রতিনিধিঃ চট্টগ্রামের পটিয়ায় শীতের মৌসুমে খেজুর রস বাঙ্গালির ঐতিহ্য প্রতি বছরের ন্যায় এ বছর ও পটিয়ার উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম-গঞ্জে শীতের শুরুতেই খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহে গাছিরা ব্যস্ত। তারা দুপুর থেকে বিকাল পর্যন্ত খেজুর গাছের কলসির হাড়ি ঝুলিয়ে রাখা হাড়িগুলো পরদিন খুব ভোরের কুয়াশায় সকালে গাছিরা গাছে ঝুলিয়ে রাখা হাড়িগুলোর থেকে রস সংগ্রহ করে। শীত বেশি পড়লেই রসের হাড়ি দ্রুতই ভরে যাচ্ছে। এর মধ্যে দক্ষিণ ভূর্ষি, ধলঘাট, কেলিশহর, হাইদগাঁও পাহাড়ী পূর্বাঞ্চলে ও পৌর এলাকাসহ বিভিন্ন ইউনিয়নে শত শত খেজুর গাছ রয়েছে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, প্রায় অধিকাংশ এলাকায় গৃহস্থি রান্না-বান্না ও ইটভাঠায় জ্বালানির জন্য খেজুর গাছ কেটে ফেলার কারনে রস সংগ্রহ দ্রুত দিন দিন কমে আসছে। ভোরের সকালে বিভিন্ন প্রত্যান্ত অঞ্চলে গাছ থেকে খেজুর রস সংগ্রহে নেমে পড়ে গাছিরা। অনেক গাছে হাড়িও ঝুলছে। দক্ষিণ ভূর্ষি গ্রামের বাসিন্দা রস বিক্রেতা মো: আনসার আলী, রিপন চক্রবর্তী ও মো: ইব্রাহিম বলেন, ইতোমধ্যেই সব গাছিরাই একেক জন প্রায় ৪০ থেকে ৫০টি গাছের রস সংগ্রহ শুরু করেছেন।

সপ্তাহে একটা গাছ ৫ দিন কাটা হয় এতে নল লাগিয়ে রস সংগ্রহ করছেন। মাঘ মাসের শেষে রস পড়া কমতে থাকে। ওই রসের ঘনত্ব ও খুব মিষ্টি হয়। একটা খেজুর গাছ থেকে দিনে একবার রস মেলে সকালে রস সু-স্বাদু ও স্বাস্থ্যসম্মত হয়। কাঁচা রস প্রায় জনের পছন্দ। এক কলসি রসের দাম ৫শ থেকে ৬শ টাকা। এক হাড়িতে প্রায় ১০-১৫ কেজি রস থাকে। রসগুলো জাল দিয়ে খেজুর গুড় ও পাঠালী গুড় তৈরী হয়। সেগুলো চট্টগ্রাম জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে সর্বোচ্চ বাজার মূল্যে বিক্রি করা হয়।

অনেকেই খেজুর রস, খেজুর গুড় ও পাঠালী গুড়ের জন্য গাছিদের অগ্রিম টাকাসহ অর্ডার দেন। তারা প্রায় ৬০ হাজার থেকে লক্ষ টাকার বেশি উপার্জন হয় বলে রস বিক্রেতারা জানান। ১৩নং দক্ষিণ ভূর্ষি ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সেলিম, উপজেলা আ’লীগ যুবলীগের সহ-সভাপতি অষোক দাশ, ইউনিয়ন সভাপতি মিহির চক্রবর্তী ও সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম জানান, এ গ্রাম বাংলায় অতীতে এ উপজেলায় সবত্রই হাজার হাজার খেজুর গাছ ছিল। বর্তমানে রান্না-বান্না গৃহস্থী ও ইট ভাটায় জ্বালানী হিসেবে ব্যবহারে হাজার হাজার গাছ বিক্রি করা হয়েছে। প্রতিটি খেজুর গাছ শীত মৌসুমে ভাড়া হয় ৮শ থেকে ৯শ টাকায়। মৌসুমের শেষে কিছু গাছ নষ্ট হয়ে যায় তাই বিক্রি করে দেয়। শীত বেশি পড়ায় রস সংগ্রহে গাছিদের চাহিদা বাড়ে দামও ভাল পাওয়া যায়। এতে রস বিক্রেতারা একক জন ৬০ থেকে ৭০ হাজার টাকা বেশি উপার্জন হয় বলে জানান।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.