মহেশখালিতে মসজিদ,মাদ্রাসায় টিআর কাবিখার হরিলুট

0

জামাল জাহেদ :   কক্সবাজার জেলার মমহেশখালি উপজেলায় টেস্ট রিলিফ (টিআর) ও কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচির (কাবিখা) নামে বরাদ্দকৃত অর্থের ৭০ থেকে ৮০ শতাংশেরই কোনো কাজ হয় না।কুতুবজোমে মসজিদ মাদ্রাসা ও কবরস্থানে দেওয়া সব বরাদ্দ লোপাট কতিপয় নেতাদের পকেটে,মহেশখালীর সব কবরস্থান যেনো উন্মুক্ত ফুটবল মাঠ নয়তো গো চারণ ভূমিতে পরিণত,যেনো দেখার কেউ,টিআর কাবিখার বরাদ্দ  অনেক সময় শতভাগই গায়েব করে দেওয়া হয়।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়,কুতুবজোম নয়াপাড়ার বড় কবরস্থানের কোন দেয়াল বা বেড়া নেই,মেহেররিয়া পাড়ার হাজী মোজাফ্ফর আহমেদ কবরস্থানে কোন দেয়াল বা ঘিরেবেড়ার ব্যবস্থা নেই,ঘটিভাংগার মধ্যমপাড়া কবরস্থান  ও পুর্বপাড়ার মসজিদের  অবস্থা আরো খারাপ,বড়মহেশখালি উপজেলার টেকনিক্যাল কলেজের সামনের বড় কবরস্থান দীর্ঘদিনের পরিত্যক্ত দেয়ালবিহীন মুর্দা সসমাধি করার স্থান।এরকম মহেশখালি তে ৩২টি মসজিদ মাদ্রাসা কবরস্থানের করুন অবস্থা,যা দেখার কেউ নেই।অথচ সরকার দলীয় এমপি প্রতিবরাদ্দে দেয় এসব সামাজিক প্রতিষ্টানের নামে। টিআর এবং কাবিখার বরাদ্দে উন্নয়নের নামে উপজেলা পর্যায়ে গড়ে উঠেছে ‘গিলে খাওয়া  সিন্ডিকেট।

নানা কৌশলে প্রশাসনের যোগসাজশেই এ লুটপাট ও দুর্নীতি এখন ওপেন সিক্রেট। অনেক সময় দেখা যায়,কক্সবাজার কুতুববদিয়া ২ আসনের এমপি জনাব আশেক উল্লাহ রফিকের অগোচরে তার প্রতিটি ইউপির  ওয়ার্ড সভাপতি সেক্রেটারিরা সরাসরি জড়িত তাতে সন্দেহ নেই বলে জানান এলাকার সচেতনমহল। আবার কোনো কোনো এলাকায় এমপি না জড়ালেও স্থানীয় পর্যায়ে সরকারি দলের নেতা-কর্মী ও সরকারি দল-সমর্থিত জনপ্রতিনিধিরা ভাগাভাগি করে নেন পুরো প্রকল্পের টাকা। অভিযোগ আছে, রাজনৈতিক দলের মাঠ পর্যায়ের নেতা-কর্মীকে তুষ্ট রাখতে প্রতি বছরই এই টিআর ও কাবিখা বরাদ্দ দেওয়া হয়। অথচ এসব বরাদ্দের বিপরীতে আদৌ কোনো কাজ হলো কি না- তার কোনো রকম তদারকি হয় না।দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের প্রতিজন এমপির বিপরীতে টিআর প্রকল্পের জন্য ৩০০ মেট্রিক টন ও কাবিখা প্রকল্পের জন্য ৩০০ মেট্রিক টন করে গম ও চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।

টিআর ও কাবিখা মিলিয়ে মোট বরাদ্দের পরিমাণ জনপ্রতি ৬০০ মেট্রিক টন। জানা গেছে, এই বরাদ্দ প্রকল্পের বিপরীতে দেওয়ার কথা থাকলেও বাস্তবে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে প্রকল্প না পেয়েই।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সরকার ভর্তুকি মূল্যে যে চাল ও গম ক্রয় করে সেই চাল-গমই আরও কম মূল্যে টিআর ও কাবিখার জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। কিন্তু কেনা মূল্য থেকে কমে বরাদ্দ দেওয়া হলেও বাস্তবে সিন্ডিকেট চক্রের কারণে সেই চাল ও গম বিক্রি সরকার নির্ধারণ করে দেওয়া মূল্যের চেয়েও অনেক কমে মহেশখালি উপজেলায় গড়ে ওঠা একটি বড় সিন্ডিকেট তা হাতিয়ে নেয়।বরাদ্দ দেওয়া প্রতি টন চালের মূল্য ধরে দিয়েছিল ২২ হাজার ৫০০ টাকা করে। একইভাবে প্রতিটন গমের মূল্য সরকার নির্ধারণ করে দিয়েছিল ১৯ হাজার ৫০০ টাকা করে। কিন্তু টিআর ও কাবিখা প্রকল্পে বরাদ্দ দেওয়া প্রতি টন চাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়েছে ১৪ হাজার টাকা ও গম বিক্রি করা হয়েছে ১১ থেকে ১২ হাজার টাকা দরে। অথচ বর্তমানে চালের বাজার দর হচ্ছে প্রতিটন প্রায় ২৫ হাজার টাকা করে।

চলতি বছর সরকার এমপিদের অনুকূলে টিআর ও কাবিখা প্রকল্পে যে বরাদ্দ দিয়েছে সেগুলো নিজ নিজ এলাকার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, মসজিদ, মন্দিরের উন্নয়ন, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও ক্লাবের উন্নয়ন এবং গ্রামীণ অবকাঠামো অর্থাৎ রাস্তাঘাটের উন্নয়ন ও মেরামতের জন্য নির্দেশ দিলেও,৯টি ইউনিয়নের কোথাও  গ্রামাঞ্চলে তেমন কোন কাজ হয়নি।বজানা গেছে, বরাদ্দকৃত চাল ও গম উপজেলা পর্যায়ে স্থানীয় প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি এবং সরকারি দলের নেতা-কর্মীর সমন্বয়ে গড়ে ওঠা সিন্ডিকেটের মাধ্যমে সুলভমূল্যে বিক্রি করে দেওয়া হচ্ছে। সরকার যেখানে প্রতিটন চাল ২২ হাজার ৫০০ টাকা করে বিক্রি করার নির্দেশে দিয়েছে সেখানে সেই চাল বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৪ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা দরে।

একইভাবে প্রতিটন গমও বিক্রি হচ্ছে সরকার নির্ধারিত দামের চেয়ে অর্ধেক দামে।এসব বিষয় নিয়ে স্থানীয় প্রশাসন সাহস করেনা  এমপিদের কাছে জানতে বরাদ্দের কাজটা সম্পুর্ন হলো কিনা,কারণ উপজেলা প্রশাসন জানে এমপির তার নিজস্ব কাছের লোকদের টিআর কাবিখা  বরাদ্দ দেয়,ফলে পুরো লুটপাট প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত।স্বল্প সময়ের মধ্যে প্রকল্প বাস্তবায়ন করতে গেলে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে এ কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব হয় না। প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য যেসব প্রক্রিয়া অনুসরণ করা দরকার সেটিও করা হয় না।যার নামে বরাদ্দ দেয় এমপি,তার নামে ভুয়া কমিটি মহেশখালি  উপজেলা কমিটির অফিস সহকারিরা তৈরি করে দেয় যা ফেক।হোয়ানকের সাবেক চেয়ারম্যান ফরিদ বলেন, টিআর, কাবিখা, কাবিটার টাকা কোনো কাজেই আসে না। এসব বরাদ্দ স্থানীয় নেতাসহ সভাপতি সাঃ সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে  হরিলুট ও গায়েব হয় বলে জানা যায়।অন্যদিকে ভাগ-বাটোয়ারা ছাড়া কোনো কাজে  আসে না।

এডিবির টাকা কিছুটা বাস্তবায়ন হলেও টিআর, কাবিখার টাকা কোনো কাজেই আসে না।এ ব্যাপারে মহেশখালি কুতুবদিয়ার এমপি কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান,কি বলবো ভাই,নানা কাজে ব্যস্ত থাকি।তাই সব কাজতো তদারকি করতে পারিনা তবে কিছু কাছের লোক দিয়ে কাজ করাতে চেষ্টা করি যাতে প্রধানমন্এীর সুনাম ধরে রাখতে,কিন্তু যাদের কাজ তদারকি করতে বলি তারা খবর পাটায় হা ভালো কাজ হচ্ছে অথচ কাজের কাজ শুন্যের কোটায়।তিনি আক্ষেপ করেন এভাবে দেশের উন্নতি করা সম্ভব না।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.