ভাল দামে খুশি মেহেরপুরের কচুচাষিরা

0

সিটিনিউজবিডি : মেহেরপুরের বাজারে সুস্বাদু আমন কচু খুচরা ২৮ টাকা থেকে ৩২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ বছর কচুর মূল্য বেশি পেয়ে চাষিরা বেজায় খুশি।

এদিকে উৎপাদিত কচুর খেত কিনে ব্যবসা করেও লাভবান হচ্ছেন এ জেলার শত শত মধ্যস্বত্বভোগী। জেলার দেড় সহস্রাধিক চাষি কচু চাষ এবং প্রায় ৩ সহ¯্রাধিক লেবার কচু তোলা, ধোয়া ও বস্তা বোঝাইয়ের কাজের সঙ্গে জড়িত।

মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের হিসাব মতে, এ বছর জেলায় ২ হাজার ৮০ হেক্টর জমিতে কচুর চাষ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে ৩০৫ হেক্টর বেশি। মেহেরপুর সদর উপজেলার উজুলপুর, বন্দর ও বামনপাড়া এবং মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর ও বিশ্বনাথপুর এলাকায় মাঠের পর মাঠ আবাদ হয়েছে কচু। দেশের বিভিন্ন জেলায় মেহেরপুরের কচুর চাহিদা রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় কচুর ভালো ফলন ও বেশি দাম পাওয়ায় এ জেলার চাষিদের পাশাপাশি জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগও খুশি।

মেহেরপুর সদর উপজেলার উজুলপুর গ্রামের কচু চাষি খোকন এ বছর সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে কচুর চাষ করেছেন। তিনি জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় প্রতিবিঘা কচু চাষে তার প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কচু উঠা ও বিক্রি পর্যন্ত প্রতি বিঘা জমিতে তার আরো ৫ হাজার টাকা খরচ হতে পারে। প্রতিবিঘা জমি থেকে তিনি কমপক্ষে একশ’ মণ করে কচু পাবেন বলে আশাবাদী। বর্তমানে মেহেরপুর বাজারে পাইকারি ৭ শ’ টাকা থেকে ৮শ’ টাকা মণ দরে কচু বিক্রি হচ্ছে। ৬ মাসের এ ফসলে প্রতিবিঘা জমি থেকে তার কমপক্ষে ৫০ হাজার টাকা করে লাভ হবে।

মেহেরপুরের মুজিবনগর উপজেলার মোনাখালী গ্রামের হামিদ মালিথা জেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে আবাদকৃত প্রায় ৩শ’ বিঘা জমির কচু ৪০ হাজার টাকা বিঘা দরে চাষিদের কাছ থেকে কিনেছেন। প্রায় একমাস ধরে কচু তোলা, বাছাই ও বিক্রির কাজ চলছে তার। বর্তমানে কচু তোলা ও বাছাই করার জন্য তার দেড়শ’ লেবার কাজ করছে। তিনি কচু বিক্রি করেন ঢাকা ও চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়।

একই গ্রামের সাইদুর রহমান সদর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের মাঠে কেনা জমির কচু তোলার সময় জানান, তিনি প্রতিবিঘা জমির কচু কিনেছেন ৪০ হাজার টাকায়। কচু তুলে বিক্রি পর্যন্ত প্রতিবিঘা জমিতে তার আরো ১২ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। তিনি প্রতিবিঘা জমি থেকে একশ’ মণ থেকে ১২০ মণ পর্যন্ত কচু পেয়েছেন। এ হিসেবে জেলার কচু চাষিদের পাশাপাশি তাদের মত ব্যবসায়ীরাও কচু থেকে ভাল লাভ পাচ্ছেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক এস এম মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ জেলার মাটি ও আবহাওয়া কচু চাষের জন্য উপযোগি। জেলার উৎপাদিত কচু সুস্বাদু বিধায় ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় এর চাহিদা রয়েছে।

তিনি বলেন, এ জেলার চাষিদের পাশাপাশি কচুর ব্যবসা করে মধ্যস্বত্বভোগীরাও ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন। চাষিরা যদি তাদের উৎপাদিত কচু নিজেরাই দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করতে পারতেন তবে তারা আরো বেশি লাভবান হতেন।

তিনি আরো বলেন, মেহেরপুরের মাটিতে লতিরাজ কচু চাষের জন্য চাষিদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে এবং মাঠ দিবসের ব্যবস্থাও নেওয়া হচ্ছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.