টেকনাফে বন্দুকযুদ্ধে নিহত ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে চন্দনাইশের ২ পরিবার

চন্দনাইশের ওসি বদলি

0

সিটি নিউজ,চট্টগ্রাম : কক্সবাজারের টেকনাফে গত ১৬ জুলাই রাতে পুলিশের সাথে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত ২ সহোদরের পরিবার এ ঘটনাকে নৃশংস হত্যাকান্ড দাবি করে তদন্ত পূর্বক বিচার চাইলেন নিহতদের স্বজনরা। এ ঘটনায় তারা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানান।মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ বিচার বিভাগ, মানবাধিকার কমিশনের নিকট এ হত্যাকান্ডের সুষ্ট তদন্ত পূর্বক বিচার দাবি করেছেন স্বজনরা।

নিহতদের পরিবারের সদস্য রিনাত সুলতানা বলেন, তার ভাই আজাদ দীর্ঘদিন বিদেশে ছিল। গত ৬ রমজান সে দেশে আসে। বড়ভাই ফারুক দেশে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করতো। পাশাপাশি তারা স্থানীয়ভাবে পেয়ারা বাগান করতো। পরিবারের দাবি নিহত ফারুক ও আজাদ ইয়াবা ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলনা। তাদের নামে চন্দনাইশ কিংবা টেকনাফ থানায় কোন মামলাও ছিলনা।

তিনি বলেন, গত ১৩ জুলাই সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে আজাদ তার এক বন্ধুর ফোন পেয়ে ঘর থেকে বের হয়। এরপর সে নিখোজ হয়। সর্বশেষ ১৪ জুলাই রাত সাড়ে ৮টার দিকে আজাদের মোবাইল ফোন থেকে মায়ের মোবাইলে একটি ম্যাসেজ আসে। তাতে লেখা ছিল “মা আমি শেষ”। এর পরপরই তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও কোন খবর পাওয়া যায়নি।

তিনি আরো বলেন, পরদিন ১৫ জুলাই চন্দনাইশ থানায় এ বিষয়ে সাধারণ ডায়েরী করতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ার সময় দুপুর ২টার দিকে বাড়িতে পুলিশ আসে। তারা বাসায় তল্লাশী চালিয়ে কিছু না পেয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করার কথা বলে ফারুককে নিয়ে যায় এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর তাকে ছেড়ে দেয়া হবে বলেও জানায় পুলিশ। কিন্তু রাত ৮টার দিকে জানতে পারি গত ১৪ জুলাই ফারুকের বিরুদ্ধে টেকনাফ থানায় মামলা হয়েছে। সে মামলায় তাকে টেকনাফ থানা পুলিশ নিয়ে গেছে। পরে টেকনাফ ও উখিয়া থানায় খবর নিয়ে জানা যায় ফারুক ও আজাদের বিরুদ্ধে কোন মামলা হয়নি। ওইদিন রাত ১০টার দিকে একটি ফোন নাম্বার থেকে কল দিয়ে ৮ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। অন্যথায় ফারুক ও আজাদকে রাতেই ক্রস ফায়ারে মেরে ফেলা হবে। এরপর গত ১৬ জুলাই সকাল ৭টার দিকে টেকনাফ থানা থেকে ফোন আসে কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে ফারুক ও আজাদের লাশ চিহ্নিত করে নিয়ে যাওয়ার জন্য।

নিহত ফারুকের ১০ বছরের মেয়ে নুসরাত জাহান সংবাদ সম্মেলনে
                                                                                                            নিহত ফারুকের ১০ বছরের মেয়ে নুসরাত জাহান সংবাদ সম্মেলনে

উল্লেখ্য,গত ২৫ জুলাই বিকেলে রওশনহাট একটি রেস্টুরেন্টে সংবাদ সম্মেলনে নিহতদের বৃদ্ধ মা আনোয়ারা বেগম, বাবা আমিনুল হক, নিহত ফারুকের স্ত্রী মুক্তা আকতার, ১০ বছরের মেয়ে নুসরাত জাহান, বড়বোন আইরিন আক্তার, ছোটবোন রিনাত সুলতানাসহ পরিবারের অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে চন্দনাইশ থানা অফিসার ইনচার্জ কেশব চক্রবর্ত্তী সিটি নিউজকে বলেছেন, টেকনাফ থানার এসআই ইফতেখারুল ইসলাম রিকুইজেশন দেন ফারুকের নামে চন্দনাইশ থানাকে আমরা আসামী গ্রেফতারে আইন বিধি মোতাবেক হস্তান্তর করি।ফারুকের বিরুদ্ধে পূর্বে টেকনাফ থানায় মাদকের মামলা ছিলো সেই মোতাবেক চন্দনাইশ থানা টেকনাফ থানাকে সহযোগিতা করেন।

এদিকে জানাগেছে, সম্প্রতি চন্দনাইশ উপজেলার দুই ভাইকে টেকনাফে নিয়ে গিয়ে মোটা অংকের টাকার দাবীতে কথিত ‘বন্দুকযুদ্ধের’ নামে হত্যা করে টেকনাফ থানার বিতর্কিত ওসি প্রদীপ কুমার। টেকনাফ থানার সদ্য বহিষ্কৃত ওসি প্রদীপ কুমার দাশ চন্দনাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কেশব চক্রবর্তীর যোগসাজশে ওই দুই ভাইকে তুলে নিয়ে হত্যা করেছে বলে মনে করছেন নিহত দুই ভাইয়ের পরিবার এ নিয়ে সম্প্রতি ব্যাপক লেখালেখির পর চন্দনাইশের ওসির বদলির অর্ডার হয়েছে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.