ইউএনও ওয়াহিদার বাসায় ৪০ লাখ টাকা মিলল!

 রবিউল নেয় ৫০ হাজার!

0

সিটি নিউজ ডেস্ক : ঘোড়াঘাটের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের বাসায় নগদ প্রায় ৪০ লাখ টাকা ছিল। এ বিষয়ে ধারণা ছিল রবিউলের। কিন্তু সে একটা চাবি পেয়ে আলমারি খোলার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। অনেক চেষ্টা করেও আর খুলতে না পেরে ওয়্যারড্রোবের ওপরে রাখা ইউএনওর ভ্যানিটি ব্যাগে থাকা ৫০ হাজার টাকার একটি বান্ডিল নেয় সে। এ সময় ফজরের নামাজের আজান শুরু হলে লোক সমাগমের ভয়ে সে দ্রুত ভেন্টিলেটর দিয়ে বের হয়ে চলে যায়।

সিসিটিভি ফুটেজেও দেখা গেছে, রাত ৪টা ৩১ মিনিটে মই ও ব্যাগ নিয়ে আম গাছের দিকে যাচ্ছে রবিউল। রাত ৪টা ৪০ মিনিটে উপজেলার মেইন গেটের দিকে যেতে দেখা যায় তাকে। যাওয়ার সময় ইউএনও’র বাসভবন ও অন্য কোয়ার্টারের মাঝখানে এক গোছা চাবি ফেলে যায় সে।

রবিউলের কথার উপর ভিত্তি করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট শাহানুর রহমানের উপস্থিতিতে ঘোড়াঘাট থানার ওসি আজিম উদ্দিন, পরিদর্শক (তদন্ত) মমিনুল ইসলাম ও মামলার বাদী ওয়াহিদা খানমের ভাই শেখ ফরিদ উদ্দিন মিলে ইউএনও’র বাসার আলমারি খুলে দেখেন সত্ত্যিকারে সেখানে রাখা নগদ প্রায় ৩৫ লাখ টাকা, পাঁচ হাজার ইউএস ডলার, স্বর্ণালঙ্কার, বিভিন্ন ব্যাংকের চেক বই ও জমা রসিদ এবং জমির দলিল সব অক্ষত রয়েছে। পরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে নগদ টাকা ও প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মামলার বাদী ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভাই শেখ ফরিদ উদ্দিনের হেফাজতে দিয়ে দেন। তবে এই অর্থের সঠিক উৎস কোথায় এবং কিভাবে এসেছে তার সদুত্তর পাওয়া যায় নি।

তবে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, মূলত অতীতের ক্ষোভ থেকেই হামলা ও টাকা চুরির ফন্দি আঁকে রবিউল। কেননা, ২০০৮ সালে রবিউল দিনাজপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে ফরাশ (পরিচ্ছন্নতাকর্মী) হিসেবে যোগ দেয় সে। ২০১১ সালের ২৪ মে থেকে সে জেলা প্রশাসকের বাসভবনে মালি হিসেবে কাজ করে। গত বছরের ডিসেম্বরে তাকে ঘোড়াঘাট উপজেলায় বদলি করা হয়। সেখানেও মালি ও পরিচ্ছন্নতাকর্মী হিসেবে কাজ করতো সে।

রবিউল জানায়, সে গত কয়েক বছর ধরে ক্রিকেটসহ অনলাইনে জুয়া খেলায় আসক্ত হয়ে পড়ে। এ কারণে কয়েক লাখ টাকা ঋণগ্রস্তও হয়ে পড়ে। রবিউলের দাবি, চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি সে ইউএনও ওয়াহিদা খানমের ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে ১৬ হাজার টাকা চুরি করেছিল। বিষয়টি ধরা পড়ার পর ইউএনওকে সে ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেছে, যাতে তার চাকরি নিয়ে কোনও সমস্যা না হয়। ৫০ হাজার টাকা নিয়ে ইউএনও তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না বলে কথা দিয়েছিলেন। কিন্তু ১৫ জানুয়ারি ইউএনও টাকা চুরির বিষয়টি উল্লেখ করে রবিউলের বিরুদ্ধে একটি প্রতিবেদন দেন। ৫ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে একটি বিভাগীয় মামলা দায়েরের পর তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। রবিউলের দাবি, এ কারণেই সে ইউএনও’র ওপর ক্ষুব্ধ ছিল। ক্ষোভ থেকেই সে পরিকল্পনা করে হামলা ও টাকা চুরি করতে যায়। সূত্র : বাংলা ট্রিবিউন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.