নগরীতে ঘটছে অপমৃত্যুর ঘটনাঃ আইনশৃঙ্খলার অবনতি
জুবায়ের সিদ্দিকীঃ অজ্ঞাতনামা লাশ পড়ে থাকছে যেখানে সেখানে। সাগরের তীরে, খালের পানিতে বা ডোবায় পাওয়া যাচ্ছে লাশ। আছে নারী ও শিশুর লাশও। অধিকাংশ ক্ষেত্রে অজ্ঞাতনামা লাশের পরিচয় শনাক্ত হচ্ছে না। নগর পুলিশ বলছে, বড় কোন সন্ত্রাসী কর্মকান্ড নয়। ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে অধিকাংশ ঘটনা ঘটছে।
নগর পুলিশের তথ্য মতে,’ পারিবারিক কলহ কিংবা ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকে এসব ঘটনা ঘটে থাকে। বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কিত হবার কিছু নেই। আমাদের ধারনা অন্য কোথাও হত্যা করে লাশ ফেলে দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। তবে অজ্ঞাত লাশ পাবার বিষয়টি আমরা তদন্ত করছি। অন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তার মতে, একের পর এক লাশ পাওয়া গেলেও রহস্য উদঘাটিত না হওয়ায় অপরাধীদের আত্মবিশ্বাস বেড়ে গেছে। তাছাড়া নগরীতে লাশ ফেলে পালিয়ে যাবার বিভিন্ন রুট আছে।
গত ২ ডিসেম্বর ডবলমুরিং থানার ঝর্নাপাড়া জোড় ডেবা থেকে এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আনুমানিক ৪৫ বছর বয়সের এ যুবকের পরনে সবুজ রঙের শার্ট ও লুঙ্গি ছিল। ডবলমুরিং থানার সুত্র মতে,’ অজ্ঞাত পরিচয় মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পরিচয় শনাক্ত করতে সিআইডি কর্মকর্তারা আঙ্গুলের ছাপ সংগ্রহ করেছেন। একইদিন হালিশহর এলাকার মামুনের পুকুর থেকে রাকিব (১০) নামে এক শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে হালিশহর থানা পুলিশ। সে ছোটপুল ব্রিকফিল্ড এলাকায় মায়ের সাথে থাকতো।
হালিশহর থানা পুলিশের সুত্র মতে,’ মায়ের সাথে তার বাবার বিবাহ বিচ্ছেদ হয়েছে অনেক আগে। রাকিব মায়ের সাথে থাকতো। প্রাথমিক অবস্থায় ধারনা করা হচ্ছে, হত্যা করার পর তাকে পানিতে ফেলে দেয়া হয়েছে। বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখছি। গত ১ ডিসেম্বর পাঁচলাইশ থানা এলাকার শাহ আমানত আবাসিকের পেছনে চাক্তাই খাল থেকে বস্তাবন্দী অবস্থায় এক তরুনীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তরুনীর হাত পা ওড়না দিয়ে বাধা ছিল। তরুনীর পরনে নীল রংয়ের থ্রিপিস ছিল। পাঁচলাইশ থানার একজন জানান, আনুমানিক ২৫ বছর বয়সী মেয়েটির মৃতদেহ অনেকটা বিকৃত হয়ে গেছে। ধারনা করা হচ্ছে চার থেকে পাঁচ দিন আগে তাকে হত্যা করা হয়েছে। সুরতহালের পর লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে পুলিশ বাদি হয়ে থানায় একটি মামলা দায়ের করে। ২৯ নভেম্বর বন্দর থানার আনন্দবাজার সাগর পাড় থেকে এক যুবকের গলাকাটা মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আনুমানিক ৩৫ বছর বয়সী এ যুবকের পরনে লুঙ্গি ও শার্ট ছিল। পুলিশের ধারনা অন্য কোথাও হত্যা করে লাশ সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই দিন নিমতলা এলাকায় খালে ফেলে দেওয়া কার্টন থেকে দুই নবজাতকের লাশ উদ্ধার করা হয়। ২৪ নভেম্বর বন্দরের ৫ নম্বর জেটির ১৩ নম্বর শেডের কাছে নদী তীর থেকে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়। আনুমানিক ৪২ বছর বয়সী পুরুষের লাশটি অর্ধগলিত ছিল।
১৯ নভেম্বর নগরীর আকবর শাহ থানা এলাকা সিডিএ এক নম্বর সড়কের মুখে এক যুবকের মৃতদেহ পাওয়া যায়। আনুমানিক ৩০ বছর বয়সী এ যুবকের পরনে মেরুন ও খয়েরি রঙ্গের টি শার্ট ও একটি নেভি ব্লু প্যান্ট ছিল। পুলিশের ধারনা কোন যানবাহনের ধাক্কায় মারা গেছে ওই যুবক। তার কোন পরিচয় পাওয়া যায়নি।
১৫ নভেম্বর নগরীর টাইগারপাস সংলগ্ন বাটালি হিল সিটি কর্পোরেশন সড়কের পাহাড়ের নিচ থেকে একটি লাশ উদ্ধার করা হয়। আনুমানিক ৪৫ বছর বয়সী ব্যক্তিটির গায়ে জিন্স প্যান্ট ও টি শার্ট ছিল। এদিকে আইনশৃঙ্খলার অবনতিতে সাধারন মানুষ আতঙ্কিত।