মোগল আমলে নির্মিত তেঁতুলিয়া মিয়া মসজিদ

0

সিটিনিউজবিডি : স্থাপত্য শিল্পের কারুকার্য খচিত  ইতিহাস ঐতিহ্যের একটি অন্যতম নিদর্শন সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার তেঁতুলিয়া শাহী জামে (মিয়া) মসজিদ। খুলনা-পাইকগাছা সড়কের কোল ঘেঁষে প্রায় ১ একর জমির উপর এটি নির্মিত। এর পাশেই রয়েছে ২ একর বিশিষ্ট একটি দিঘি।

মসজিদটির নির্মানকাল সম্পর্কে সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে ঐলাকার লোকজন বলে এটি প্রায় ২ শতাব্দীর পুরানো বলে জানা যায়। তারা জানান, ১৬শ শতকের প্রথম দিকে মোগল আমলে তেঁতুলিয়া গ্রামে তৎকালীন মুসলিম ধার্মিক জমিদার কাজী সালামতুল্লাহ খান বাহাদুর এটি নির্মান করেছিলেন বলে জনশ্রুতি রয়েছে।

সরেজমিনে দেখা যায়, মসজিদটি উত্তর পাশে বিশাল দীঘি রয়েছে। মসজিেেদর মূল ফ্লোর হতে বিশাল সিঁড়ি দীঘির পানির তলদেশে গিয়ে মিশেছে মসজিদটি স্থাপত্যকলায় মোগল আমলের বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত হয়। মসজিদটির চার পাশ ঘিরে সীমানা দিয়ে চুন সুড়কির গাথুনির ৪ ফুট উচ্চতা বিশিষ্ট সীমানা প্রাচীর নির্মিত হয়েছে।

দক্ষিণ পাশের সীমানা প্রাচীরের পাশ দিয়ে মসজিদটি নির্মিত হয়েছে। মসজিদটির চার কোনায় চারটি বিশাল আকৃতির মিনার রয়েছে। বড় চারটি মিনারের প্রত্যেকটির গোড়া হতে আরও ২টি করে ছোট মিনার রয়েছে। এছাড়া দক্ষিণ ও উত্তর পাশের দেওয়ালের মধ্যভাগের উপরে আরও ১টি মিনার ও পশ্চিম ও পূর্ব পাশে ২টি করে মিনার রয়েছে। মসজিদটিতে ছোট বড় মিলিয়ে রয়েছে মোট ১৮টি মিনার। বর্তমানে অযত্ন আর অবহেলার কারণে ৭টি ইতিমধ্যেই ভেঙ্গে নষ্ট হয়ে যাওয়ার মত।

মসজিদটি ৬টি গম্বুজ দ্বারা নির্মিত। গম্বুজ ৬টির প্রত্যেকটির মাথায় মাটির হাঁড়ি দিয়ে বরুজ তৈরি করা আছে। মসজিদটিতে কোন জানালা না থাকলেও ৭টি দরজা আছে। মসজিদের ভিতরে প্রবেশ পথে ৩টি,উত্তর ও দক্ষিণ পাশে ২টি করে দরজা রয়েছে। মসজিদটির ছাদের কার্নিশের চারপাশ কারুকাজ খচিত। মসজিদে নামাজ আদায়ের সময় ওজুর জন্য বিশাল দীঘিটিতে সিঁড়ি নামিয়ে দেওয়া হয়েছে। দীঘিটির পশ্চিম পাশে পাইকগাছা-খুলনা সড়ক থেকে আরও ১টি সিঁড়ি মুসাফিরদের জন্য তৈরি করা হয়েছিল।

যেটি বিলুপ্ত হয়ে গেলেও তার চিহ্ন রয়েছে। প্রতিদিন শত শত দর্শনার্থী মসজিদটি দেখার জন্য এখানে আসে। স্থাপত্য শিল্পের কারুকাজ খচিত এ মসজিদটি তালা উপজেলা বাসীর অহংকার।

বর্তমানে মসজিদটির ফ্লোরের মাঝখান থেকে ও পশ্চিম পাশের দেওয়ালের উপরের অংশ ফাটল ধরেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক বিভাগ মসজিদটির সংরক্ষণের দায়িত্ব গ্রহন করলেও অবহেলার কারণে যেকোন মুহুর্তে মসজিদটি বড় ধরণের ক্ষতির শিকার হতে পারে বলে এলাকাবাসীর ধারনা ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.