নেতাজির নথি প্রকাশ করবে ভারত সরকার

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : ভারতের জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের নেতা সুভাস চন্দ্র বসু সংক্রান্ত ৬৪টি গোপন ফাইল গত ১৮ সেপ্টেম্বরে প্রকাশ করেছিল পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকার। সুভাষ চন্দ্র বসু সংক্রান্ত যেসব গোপন ফাইল ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রয়েছে সেগুলো প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি।

গতকাল বুধবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে নেতাজির পরিবারের প্রতিনিধিদের সাক্ষাতের নরেন্দ্র মোদি জানান, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার কাছে থাকা সুভাষ চন্দ্র বসু সংক্রান্ত অতি গোপনীয় ১০০ এর বেশি ফাইল নেতাজির আগামী জন্মদিনে (২৩ জানুয়ারি) প্রকাশ করা হবে।

দীর্ঘদিন ধরে গবেষকরা এসব নথি প্রকাশের দাবি জানালেও তা নাকচ করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। রাশিয়া, চীন, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশগুলোতে নেতাজি সংক্রান্ত যেসব গোপন ফাইল রয়েছে সেগুলো প্রকাশের উদ্যোগ নিতেও কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছিলেন গবেষকরা।

নরেন্দ্র মোদি জানান, অন্যান্য দেশের কাছে থাকা নথিগুলো আনতে আগামী ডিসেম্বরে আনুষ্ঠানিক বৈঠকর জন্য রাশিয়াকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

সুভাষ বসুর আত্মীয় সুগত বসু জানান, নেতাজির নথি প্রকাশের জন্য নরেন্দ্র মোদির সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাই। কিন্তু কেন ২৩ জানুয়ারি পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে? কেন এক সপ্তাহের মধ্যে ফাইলগুলো প্রকাশ করা যাবে না- সেটা বুঝলাম না।

তৃণমূল কংগ্রেস দলের সংসদ সদস্য সুগত বসু নিজে অবশ্য আজকের পারিবারিক প্রতিনিধিদলে ছিলেন না। একজন ঐতিহাসিক হিসাবে সুগত বসু বারে বারেই বলে এসেছেন যে তিনি এমন কোনও প্রমাণ বা নথি পান নি, যা থেকে মনে করা যেতে পারে যে তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনার পরেও সুভাষ চন্দ্র বেঁচে ছিলেন।

গত মাসে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে থাকা সুভাষ বসু সংক্রান্ত কিছু গোপন নথি প্রকাশ করা হয়েছিল। ওই নথি প্রকাশের ফলে বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকারকে চাপের মুখে পড়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে থাকা নথি প্রকাশের পরে নেতাজির পরিবারের সদস্যরা দাবি করেছিলেন, তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনায় সুভাষ চন্দ্র বসুর মৃত্যুর কথা বলা হলেও, তা সত্য নয়। অন্তত ১৯৬৫ সাল পর্যন্ত বেঁচে ছিলেন তিনি। সেই প্রমাণ রাজ্য সরকারের নথিগুলিতে আছে।

গবেষকেরা মনে করেন, নেতাজি সংক্রান্ত সব গোপন ফাইল প্রকাশ করা হলে তার মৃত্যুর বিষয়ে সুস্পষ্ট ধারণা পাওয়া যাবে। ১৯৪৫ সালে তাইহোকুতে কথিত বিমান দুর্ঘটনায় তিনি মারা গিয়েছিলেন কি না- তাও প্রমাণ হবে।

নেতাজির মৃত্যুর রহস্যের উন্মোচনে ভারতে একাধিক তদন্ত কমিশন গঠন করা হয়েছিল। যার প্রথম তদন্ত কমিশনের নেতৃত্বে ছিলেন সুভাষ বসুর ঘনিষ্ঠ শাহনেওয়াজ খান। সেই কমিটি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর মেনে নিয়েছিল- জহরলাল নেহরু সেই তদন্তের ফল মানলেও তা প্রত্যাখ্যান করে কমিশন থেকে পদত্যাগ করেছিলেন বসু পরিবারের প্রতিনিধি।

সর্বশেষ যে বিচার বিভাগীয় কমিশন ৭ বছর ধরে তদন্ত চালিয়েছিল। এরপর সেই মূখার্জী কমিশন ঘোষণা করেছিল, তাইহোকুর বিমান দুর্ঘটনায় সুভাষ চন্দ্র বসুর মৃত্যু হয়নি। তবে মুখার্জী তদন্ত কমিশনের রিপোর্ট গ্রহণ করেনি ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.