চকারিয়ায় সাড়ে ৬ লাখ টাকাসহ সহ সাবরেজিস্টার আটক

0

বশির আলমামুন, কক্সবাজারঃ কক্সবাজারের চকরিয়ায় সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অভিযান চালিয়ে ঘুষ লেনদেনের ৬ লাখ ৪২ হাজার টাকা জব্দ করেছে। এ সময় সাব রেজিস্ট্রার মো. নাহিদুজ্জামান (৩২) ও অফিস মোহরার দূর্জয় কান্তি পালকে (৩৯) গ্রেফতার করেছে দুদক।

বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা থেকে রাত সাড়ে ৩টা পর্যন্ত দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর সহকারি পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিনের নেতৃত্বে দুদকের একটি টিম এ অভিযান পরিচালনা করেন। প্রায় সাড়ে ১০ ঘণ্টার অভিযানে চকরিয়া সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয় থেকে ঘুষ ও কমিশন বাবদ আদায় করা ৬ লাখ ৪২ হাজার ১০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারকৃত দুজনকে আদালতে সোপর্দ করার জন্য শুক্রবার (২ এপ্রিল) সকালে চকরিয়া থানায় নেওয়া হয়েছে।

দুদক দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন অভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন চকরিয়া সাব রেজিস্টার অফিসে ব্যাপক ঘুষ লেনদেনসহ নানা দূর্নীতি হচ্ছে এমন অভিযোগ পেয়ে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে।

দুদক কর্মকর্তা জানান আদালতে সোপর্দের জন্য দেওয়া দুদকের প্রতিবেদনে ৩জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। অভিযুক্তদের মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর অভিযুক্ত সাব রেজিস্ট্রার কার্যালয়ের অফিস সহকারী শ্যামল বডুয়া অভিযানের খবর পেয়ে দুদক টিমকে ফাঁিক দিয়ে ছাদের উপর দিয়ে কৌশলে পালিয়ে গেছে। অভিযুক্ত ও গ্রেফতার দুজনের বিরুদ্ধে মামলার দুদক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে বলে দুদক কর্মকর্তা রিয়াজ উদ্দিন জানান।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, চকরিয়া পৌরসভার কাহারিয়ার ঘোনার মৃত আবদুল হাকিমের ছেলে রশিদ আহমদ কিছু দিন আগে চকরিয়া সাবরেজিস্টার কার্যালয়ের বিরুদ্ধে ঘুষ ও কমিশন আদায় নিয়ে হটলাইন ১০৬ নম্বরে অভিযোগ দেন।

রশিদ আহমদ অভিযোগ করেন জমির দলিল রেজিস্ট্রি করার সময় তার কাছ থেকে সার রেজিস্টার অফিস সাড়ে ৯ হাজার টাকা ঘুস ও কমিশনের টাকা আদায় করেন। তিনি জানান, পরে বৃহস্পতিবার দুদকের অভিযানের সময় তার কাছ আদায় করা টাকা দুদক কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে ফেরত দেওয়া হয়েছে।

দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম-২ এর সহকারি পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন জানান, সাব-রেজিস্ট্রার মো. নাহিদুজ্জামানের ব্যববহৃত রেকর্ড রুমের স্টিলের লকারের প্রথম ড্রয়ার থেকে ১ লাখ ৯২ হাজার ৫৫০ টাকা জব্দ করা হয়েছে। এছাড়াও অফিস সহকারি শ্যামল বড়ুয়ার টেবিলের ড্রয়ার থেকে ২ লাখ ৮৯ হাজার ৫৫০ টাকা এবং অফিস মোহরার দুর্জয় কান্তি পালের ড্রয়ার থেকে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে। জব্দ করা টাকাগুলোর বিষয়ে তারা দুদককে সন্তোষজনক কোন ব্যাখ্যা দিতে পারেননি। টাকাগুলো তারা দলিল রেজিস্ট্রিকালে ঘুষ হিসেবে গ্রহন করেছেন। তাদের ড্রয়ার থেকে ঘুষ লেনদের হাতের লেখা ৪১টি স্লিপ জব্দ করা হয়েছে। ওই স্লিপে সাব-রেজিস্ট্রারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘুষ লেনদেনের তথ্য উল্লেখ আছে।

এদিকে চকরিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ শাকের মো: যোবাইর বলেন গ্রেফতারকৃত সাব-রেজিস্ট্রার মো. নাহিদুজ্জামান ও মোহরার দুর্জয় কান্তি পালকে ২ এপ্রিল (শুক্রবার) চকরিয়া উপজেলা জুড়িসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে সোপর্দ করা হয়। পরে আদালত তাদের জামিন নাম মঞ্জর করলে তাদের জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।

তিনি বলেন গ্রেফতারকৃত সাব-রেজিস্টার নাটোর জেলার গুরুদাশপুর থানার উত্তর নাড়িবাড়ি গ্রামের মোজাম্মেল হকের ছেলে ও মোহরার দূর্জয় কান্তি পাল কক্সবাজার সদর উপজেলার খুরসকুল গ্রামের মধুরাম পালের ছেলে।###

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.