টেক্সাসের এলপাসোতে ৯০ বাংলাদেশীর আমরণ অনশন

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন সময়ে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে আটক প্রায় ৯০ জন বাংলাদেশী নাগরিক টেক্সাসের এলপাসো কারাগারের ডিটেনশন সেন্টারে আমরণ অনশন করছেন।

বুধবার থেকে শনিবার পর্যন্ত চতুর্থ দিনের মতো চলা এই অনশনে নড়েচড়ে বসেছে যুক্তরাষ্ট্র সরকারসহ দেশী-বিদেশী মানবাধিকার সংগঠনগুলো। দীর্ঘদিন কারাগারে যথাযথ আইনী সহায়তা না পাওয়া এবং জোর করে দেশে ফেরত পাঠানোর প্রতিবাদে এই অনশন করছেন তারা। প্রথম দিনের অনশনে ৪৬ জন অংশ নেন। চতুর্থ দিনে তা এসে দাঁড়ায় ৬০ জনে। যদিও এরই মধ্যে ১১ জনকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বেশ কয়েকজন গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাদের নিয়ে যাওয়া হয় হাসপাতালে।

কারাগারে বন্দী বাংলাদেশীদের পক্ষে অনশনরত মাহবুবুর রহমান নামে এক ব্যক্তির পাঠানো চিঠি থেকেই অনশনের খবরাখবর প্রথম প্রকাশ পায়। কারাগার থেকে পাঠানো চিঠিতে মাহবুবুর রহমান উল্লেখ করেন, প্রায় ৮৫-৯০ জন বাংলাদেশী এলপাসোর ডিটেনশন সেন্টারে মানবেতর জীবনযাপন করছেন। হোমল্যান্ড সিকিউরিটির ভুল রিপোর্টে যুক্তরাষ্ট্র সরকারের প্রচলিত আইনী সহায়তা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তারা।

এরই মধ্যে গত ২৫ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রামের ফয়েজ আহম্মেদ নামে একজন বন্দীকে জোর করে দেশে ফেরত পাঠানো হয়। এর পর থেকেই বন্দী বাংলাদেশীদের মাঝে দেশে ফেরত পাঠানোর আতঙ্ক শুরু হয়। ফলে তারা আমরণ অনশন শুরু করেন।

গত ১৪ অক্টোবর বুধবার থেকে প্রথমে ৪৬ জন অনশন শুরু করেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৭ অক্টোবর শনিবার চতুর্থ দিনের কর্মসূচিতে ছিলেন প্রায় ৬০ জন। টানা না খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন এদের অনেকে। যদিও কয়েকজনকে জোর করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।

শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে টেলিফোনে সবশেষ ঘটনার বিবরণে মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘আমাকে এখন ডিটেনশন সেন্টারের হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছে। আমরা চার দিন কোনোকিছুই খাইনি। বুধবার যখন আমরা অনশন শুরু করি তখন থেকেই কর্তৃপক্ষ অনশন ভাঙ্গার জন্য বিভিন্নভাবে চাপ দিচ্ছে।’

মাহবুব আরও বলেন, ‘অনশনকালে বেশ কয়েকজনকে জোর করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে অন্য জায়গায়। তবে স্থানীয় মানবাধিকার সংগঠনের প্রতিবাদে ১১ জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ, কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে। আমি কিছুই খাচ্ছি না এবং খাব না, যতক্ষণ না মুক্তি দেয়া হয়।’

বিষয়টিকে চ্যালেঞ্জ করে অনশনরতদের সহায়তা দিচ্ছে সাউথ এশিয়ান মানবাধিকার সংগঠন ‘ডেসিস রাইজিং আপ এ্যান্ড মুভিং (ড্রাম)’। অনশনকারী মাহবুবের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন ড্রামের কর্মকর্তারাও। এ প্রক্রিয়ায় রাজনৈতিক আশ্রয়প্রার্থী বিপুলসংখ্যক বাংলাদেশীর বহিষ্কার অমানবিক উল্লেখ করে বিবৃতি দিয়েছে ড্রামসহ মানবাধিকার সংগঠনগুলো। তাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছে দেশী-বিদেশী আরও বেশ কয়েকটি মানবাধিকার সংগঠন। বিশ্ব মানবাধিকার সংগঠনগুলোর প্রতিবাদের মুখে এরই মধ্যে ১১ জনকে ডিটেনশন সেন্টার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।

আগামী ১৯ অক্টোবর সোমবার ড্রামের আয়োজনে এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের হাজির করা হবে। এমন তথ্য নিশ্চিত করেছেন ড্রামের কমিউনিটি অর্গানাইজার কাজী ফৌজিয়া।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.