প্রবাসীদের জন্য সৌদিতে কিছু নতুন আইন

0

মোরশেদ রানা, সৌদিআরব: সৌদিআরব সরকার সম্প্রতি দেশটির শ্রম আইনে সংশোধনী আনায় প্রবাসী শ্রমিকদের সুযোগ সুবিধা আরো প্রসারিত হয়েছে।

এই আইনে শ্রমিকদের নিরাপত্তার জন্য নিয়োগকর্তাদের (কফিল)উপর আরোপ করা হয়েছে অনেক নিয়ম। ফলে হয়রানির শিকার হয়ে বছরে আর ৮৬ হাজার কমীকে সৌদি আরব থেকে বিদায় নিতে হবেনা। গত শুক্রবার এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয় ।

প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, মালিকের অসদাচরণ, খেতে না দেওয়া ও ঠিকমতো বেতন না দেওয়ার কারণে গৃহকর্মীরা নিজ দেশে প্রত্যাবর্তন করছে। এর আগে স্থানীয় গনমাধ্যমগুলোর প্রচারিত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, গত ১০ মাসে বিভিন্ন আদালতে নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধে ৪৫০টি মামলা করেছেন প্রবাসী শ্রমিকরা। বিশেষ করে চুক্তি অনুযায়ী বেতন-ভাতা না দেওয়া, সময়মত বেতন পরিশোধ না করা, চুক্তির বাইরে কাজ করিয়ে নেওয়াসহ নানা কারণে তারা এসব মামলা করেন।

তবে এবার শ্রম আইনে সংশোধন আনায় ২০০৮ সাল থেকে সৌদি আরবে বাংলাদেশের বন্ধ শ্রম বাজার নতুন সম্ভাবনার খরব দিচ্ছে। সব প্রতিবন্ধকতা কাটিয়ে পুনরায় সৌদি আরব পাড়ি দেওয়া শুরু করেছেন বাংলাদেশি শ্রমিকরা। চলতি বছরের ফ্রেব্রুয়ারি মাসে সৌদি রয়্যাল কোর্ট বাংলাদেশি শ্রমিকদের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। ফলে বাংলাদেশ থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই তেলসমৃদ্ধ দেশে শ্রমিক পাঠানোর ক্ষেত্রে আর কোনো বাধা থাকল না। সৌদি আরবে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ’র মতে দেশটিতে বর্তমানে ২০ লাখ শ্রমিক কর্মরত।

সৌদিতে বসবাসরত প্রবাসীদের শুধু গুরুতর অপরাধের জন্যই কারাদণ্ড দেওয়া যাবে বলে মঙ্গলবার ঘোষণা দিয়েছে দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। আর ছোট কোনো অপরাধের জন্য শুধু অর্থদণ্ড দেওয়া যাবে। অপরাধের জন্য কোনো প্রবাসীকে পুলিশের কাছে হস্তান্তরের প্রয়োজন হলে তা একটি কমিটি নির্ধারণ করে দেবে। সৌদি আরবের পাসপোর্ট বিভাগের পরিচালক সুলাইমান আল-ইয়াহিয়ার বরাত দিয়ে গত মঙ্গলবার আরব নিউজে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

তিনি বলেন, প্রবাসী শ্রমিকদের ছোট-খাট অপরাধের জন্য দ্রুত জরিমানা আদায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। দেশটির প্রবাসী প্রশাসনিক বিভাগের পরিচালকদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি জানান, কোনো ধরনের অপরাধের পর প্রবাসীদের আটক বা জরিমানা করা হবে কিনা- তা নির্ধারণ করতে একটি বিশেষ কমিটি করা হবে।
সুলাইমান আল-ইয়াহিয়া জানান, প্রতিদিন বিভিন্ন ধরনের লঘু অপরাধের জন্য ৭০০ থেকে ৯০০ প্রবাসীকে আটকের পর মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। আবাসিক অনুমতিপত্র নবায়নের খচর বহন করতে ব্যর্থ হওয়াকেও তাদের অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই ধরনের অপরাধের জন্য আর্থিক জরিমানা দিতে হবে।

সৌদি আরবে প্রবাসী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে পলায়নের মিথ্যা অভিযোগ করলে নিয়োগকারীদের অপরাধের জন্য ৭০০ থেকে ৯০০ প্রবাসীকে আটকের পর মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। আবাসিক অনুমতিপত্র নবায়নের খরচ বহন করতে ব্যর্থ হওয়াকেও তাদের অপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। এই ধরনের অপরাধের জন্য আর্থিক জরিমানা দিতে হবে।

সৌদি আরবে প্রবাসী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে পলায়নের মিথ্যা অভিযোগ করলে নিয়োগকারীদের শাস্তির বিধান রেখে গত জুলাই মাসে শ্রম গাইড সংশোধন করে দেশটির শ্রম মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়েছে, কোনো প্রতিষ্ঠান প্রবাসী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ উত্থাপন করলে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য তার সেবা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
গত আগস্টে সৌদি শ্রম মন্ত্রণালয়ের একটি নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রবাসী শ্রমিকদের পাসপোর্ট জব্দ করা যাবে না। এক্ষেত্রে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নে ব্যর্থ নিয়োগকারীদের জরিমানা গুণতে হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.