৫ বছরের মধ্যে দেউলিয়া হতে পারে সৌদি : আইএমএফ

0

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশ্বের বৃহৎ তেলসমৃদ্ধ দেশ সৌদি আরব আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে বলে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)। শুক্রবার মধ্যপ্রাচ্যের ইকোনোমিক আউটলুক পত্রিকা আইএমএফের বরাত দিয়ে এ তথ্য প্রকাশ করেছে।

প্রতিবেদনে জানা যায়, চলতি বছর সৌদি আরবের বাজেট ঘাটতি ২১ দশমিক ৬ শতাংশে দাঁড়াতে পারে। আগামী বছর এর পরিমাণ হতে পারে ১৯ দশমিক ৪ শতাংশ। দেশটির বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ কমে ৬৫৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলারে ঠেকেছে।

আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম পড়ে যাওয়াতেই মূলত সৌদি আরবের এ অবস্থা। দেশটির জিডিপির ৯০ শতাংশ আয় হয় তেল থেকে। তেলের দাম কমে যাওয়ায় এবছরই তাদের রাজস্ব ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়াবে ৩৬০ বিলিয়ন ডলার।”

এর সঙ্গে যোগ হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের বর্তমান ভূরাজনৈতিক পরিস্থিতি। ইয়েমেন যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ায় তাদের সামরিক ব্যয় দিন দিন বাড়ছে।

একদিকে সিরিয়াসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে যুদ্ধের দামামা সৌদি আরবের অর্থনীতিকে আরো ঝুঁকির মধ্যে ফেলে দিয়েছে। এসব সামলাতে সৌদি কর্তৃপক্ষ এরইমধ্যে সংকোচনমূলক নানা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে। বিদেশি বিভিন্ন আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে তহবিল হিসাবে দেওয়া ৭০ বিলিয়ন ডলার সম্প্রতি প্রত্যাহার করে নিয়েছে সৌদি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এছাড়া তারা বড় ধরনরে কিছু প্রকল্প স্থগিত করেছে।

পরিস্থিতি এতোটাই নাজুক যে, সৌদি ধনকুবেররা বিদেশে থাকা তাদের সম্পদ বিক্রি করে দিচ্ছে।

আইএমএফ’র পক্ষ থেকে এই বিপর্যয়ের কারণ হিসেবে সৌদি রাজপরিবারের সদস্যদের বিলাসিতাকেই দায়ী করা হয়েছে। সৌদি রাজপরিবারের ছয়টি শাখার মোট পনেরো হাজার সদস্য রাষ্ট্রীয় বাজেটের বৃহদাংশ ভোগ করে। অর্থাৎ তারা জাতীয় বাজেটের জন্য রাখা অর্থকে বিভিন্ন খাত ঘুরিয়ে নিজেদের প্রয়োজনে দীর্ঘদিন ধরেই ব্যয় করছে। আর এই ব্যয় সংকোচনের জন্য এবং বাজেট ঘাটতি কমানোর উদ্দেশ্যে গত বছর থেকেই তারা তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১০৩ ডলার নির্ধারণ করেছে। যা সাবেক বছরগুলোর তুলনায় বেশি।

শুধুমাত্র জাতীয় আয়ের উপর সৌদি রাজপরিবারের সদস্যরাই প্রকারান্তে নির্ভরশীল। দেশটির মোট ৩০ মিলিয়ন জনগোষ্ঠি বিভিন্নভাবে এই তেলের অর্থের ওপর নির্ভরশীল। কারণ এখন পর্যন্ত সৌদি আরবের নেই নিজস্ব দক্ষ কর্মী বাহিনী এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই তাদের নেই কোনো কর্ম অভিজ্ঞতা। বাইরের দেশের শ্রমিকদের দিয়েই দেশীয় অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে শুরু করে বিভিন্ন করপোরেট বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে সৌদি রাজপরিবারের সদস্যরা। এছাড়া সৌদি সরকারের সেনাবাহিনী অধিকাংশ সদস্যই পাকিস্তানসহ বিভিন্ন ইসলামি দেশ থেকে ভাড়া করে আনা। ভাড়াটে সেনাবাহিনীর ব্যয় মেটানোতে সংকটে পড়বে দেশটি।

তথ্যসূত্র : দ্য কিউবিক লেন অনলাইন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.