কক্সবাজারে এস,এস,সির ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ

0

জামাল জাহেদ, কক্সবাজার:    আসন্ন ২০১৬ সালের এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিশেষ করে কক্সবাজারের অন্যতম বিদ্যাপীঠ কক্সবাজার সদরে বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমি স্কুলে এসএসসি পরীক্ষার্থীদের কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত বোর্ড ফির চেয়ে দ্বিগুণ ফি আদায় করায় বিপাকে পড়েছেন দরিদ্র অভিভাবকরা।সবকটি শিক্ষা বোর্ডের পরিপত্রে স্পষ্ট করে বলা হয়েছে, পরীক্ষা ফি বাবদ শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে কোনোক্রমেই অতিরিক্ত ফি নেয়া যাবে না।

কিন্তু বোর্ডের আদেশ-নির্দেশনাকে কোনো তোয়াক্কা না করে কক্সবাজার সদরের কক্সবাজার,রামু,চকরিয়া,টেকনাফ, মহেশখালীর সবকটি মাধ্যমিক ও দাখিল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান এবং ম্যানেজিং কমিটির যোগসাজশে ২০১৬ সালের অনুষ্ঠিতব্য এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণে অতিরিক্ত ফি আদায় করছে।চট্রগ্রাম শিক্ষা বোর্ড সূত্রে জানা যায়, বিষয় ফি ৮৪০ টাকা, ব্যবহারিক ফি ১৫০, মার্কসিট ফি ৩৫, সনদ ফি ১০০, শিক্ষা সপ্তাহ ফি ৫, কেন্দ্র ফি ৩০০ টাকাসহ মোট ১ হাজার ৪৪৫ টাকা, মানবিক শাখার ফি ১ হাজার ৩৫৫ টাকা, দাখিল ১ হাজার ৬০০ টাকা নির্ধারিত ফি হলেও আদায় করা হচ্ছে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা করে। যার যার মতো করে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে ইচ্ছা মাফিক ফি আদায় করা হচ্ছে।বায়তুশ শরফ জব্বারিয়া একাডেমিতে এবারের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪০৫জন মতো,তাদের কাছে এভাবে লাখ লাখ টাকা অতিরিক্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন দুর্নীতিপরায়ণ কমিটি ও প্রধান শিক্ষক।অথচ বাউচার বা রশিদ ধরিয়ে দিচ্ছে ১২টাকার,দারুন কৌশল অবলম্বন করে যাচ্ছে কতৃপক্ষ।

এ ছাড়া কক্সবাজার সদর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের স্কুল ও মাদ্রাসাতে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,কক্সবাজার উপজেলায় এবার এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষার ফরম পূরণে একেক স্কুলে ও একেক মাদ্রাসায় একেক ধরনের অতিরিক্ত ফি নিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের কাছ থেকে ৩ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৪ হাজার টাকা পর্যন্ত ফি আদায় করা হচ্ছে। ফি আদায়ের ক্ষেত্রে কারো সাথে কারো কোনো মিল নেই,যদিও চট্রগ্রাম আর ঢাকা বোর্ডের অধীনে বেশির ভাগ।জেলা প্রশাসকের তথ্যমতে কক্সবাজারে সদরে মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৯টি আর মাদ্রাসার সংখ্যা ৪৮টি,নিম্নমাধ্যমিক ২৪টি।

ওই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফরম পূরণ করতে আসা শিক্ষার্থীদের হাতে ১০-১২টি খাত দেখিয়ে লম্বা ফিরিস্তি ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে। শিক্ষার সাথে সংশ্লিষ্ট নয় এমন খাতও তালিকায় জুড়ে দেয়া হচ্ছে ফির নামে টাকা আদায়ের স্বার্থে। স্কুল ও মাদ্রাসার পরীক্ষার্থীরা জানায়, ফরম পূরণের ফি বাবদ ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা করে ফি নিচ্ছে। খাত হিসাবে তাদের তালিকায় আছে বোর্ড ফি, কোচিং ফি,টিফিন ফি, বিদ্যুৎ বিল, মসজিদের চাঁদা, শিক্ষক কল্যাণ ফি, মডেল টেস্ট ফি, মিলাদ ফি, কেন্দ্র ফি, কোচিং ফি, চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী ফি, ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত বেতন ফি।

সব মিলিয়ে ৩ থেকে ৫হাজার টাকা করে ফি আদায় করছে।এসব বিষয়ে বায়তুশ জব্বারিয়া একাডেমির প্রধান শিক্ষক ছৈয়দ করিমের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, ‘আমরা কোনো বাড়তি টাকা নিচ্ছি না, বোর্ডে যা আছে তা নিচ্ছি।’ আরো অন্যান্য প্রসঙ্গ তুলতেই তিনি মোবাইলের লাইন কেটে এড়িয়ে যান। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক আরেক প্রধান শিক্ষক বোর্ড কর্মকর্তাদের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বোর্ডের সব নির্দেশ মেনে চললে বিদ্যালয় বিক্রি করে বাড়ি চলে যেতে হবে।

এদিকে পরীক্ষার্থীদের ওপর নানা সমস্যা আসতে পারে এমন আশঙ্কায় নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক একাধিক ক্ষুব্ধ অভিভাবক জানিয়েছেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,ও মাননীয় শিক্ষামন্ত্রীর শিক্ষাক্ষেত্রে কঠোর নির্দেশনা দিলেও পরীক্ষার ফরম ফিলাপ নিয়ে শিক্ষকরা যেভাবে বাণিজ্য শুরু করেছেন তাতে ছেলেমেয়েদের অদুর ভবিষ্যৎ অন্ধকার হয়ে আসবে মন্তব্য করেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.