চট্রগ্রাম অফিস :: পাঁচ বছরের শিশুকে অপহরণের অভিযোগে বাঁশখালীর আলোচিত রহিমা ডাকাতসহ পাঁচ আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। একই রায়ে আদালত তাদের ৫০ হাজার টাকা করে অর্থদণ্ড দিয়েছেন। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত নূরুল বশর নামে একজনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো.রেজাউল করিম চৌধুরী এ রায় দিয়েছেন। নগরীর চান্দগাঁও থেকে ফারিয়া আফরিন ঐশী (৫) নামে পাঁচ বছরের এক শিশুকে অপহরণের মামলায় আদালত এ রায় দিয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট জেসমিন আক্তার বলেন, অপহরণের অভিযোগে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনের পৃথক দু’টি ধারায় পাঁচজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। এ রায়ে রাষ্ট্রপক্ষ প্রত্যাশিত ন্যায়বিচার পেয়েছে।
বিচার শুরুর মাত্র দুই মাসের মধ্যে রায় ঘোষণা করে আদালত নজিরবিহীন রেকর্ড গড়েছেন বলে মন্তব্য করেন পিপি।
দন্ডপ্রাপ্ত পাঁচজন হল, দুর্ধর্ষ ডাকাত রহিমা বেগম ওরফে রহিমা বেগম, রোখসানা, মামুনুর রশিদ, জালাল উদ্দিন এবং করিম ডাকাত। এদের মধ্যে মামুনুর রশিদ হাজতে আছে। বাকি আসামিরা পলাতক আছে।
আদালতের রায়ে খালাস পাওয়া নূরুল বশরও বর্তমানে পলাতক আছে।
অপহরণের শিকার ফারিয়া আফরিন ঐশী নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার ১১০ নম্বর সড়কের একটি বাড়ির বাসিন্দা মো.জাহেদ হোসেনের মেয়ে।
ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৭ জানুয়ারি ঐশীকে তার বাসার সামনে রাস্তা থেকে অপহরণ করে বাঁশখালীর খুতুকখালী নিয়ে যান আসামিরা। সেখানে আটকে রেখে তার বাবার কাছে পাঁচ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে তারা।
এ ঘটনায় ঐশীর বাবা চান্দগাঁও থানায় অভিযোগ করলে পুলিশ অপহরণের ছয়দিন পর ২ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৪টায় তাকে বাঁশখালীর খুতুকখালীতে রহিমা ডাকাতের বাড়ি থেকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় ৩ ফেব্রুয়ারি তার বাবা বাদি হয়ে চান্দগাঁও থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন।
পুলিশ তদন্ত করে ১৪ মে ছয় আসামির বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২২ সেপ্টেম্বর আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ও ৮ ধারায় আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন। মামলায় ১৭ জন সাক্ষীর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষে ১০ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়। আসামি রোখসানা ও মামুনুর রশিদ সাফাই সাক্ষ্য দেন।
সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্ক শেষে ট্রাইব্যুনাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় রোখসানা ও রহিমা ডাকাতকে এবং ৮ ধারায় মামুনুর রশিদ, করিম ডাকাত ও জালাল উদ্দিনকে যাবজ্জীন কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ড দেন।