শীর্ষ মানবপাচারকারী ও খুনের আসামী কাশেম প্রকাশ্যে

0

নিজস্ব প্রতিনিধি, কক্সবাজারঃ কক্সবাজার জেলায় মানবপাচারের জিরো টলারেন্স অভিযান অব্যাহত কিন্তু মহেশখালী কুতুবজোমের শীর্ষ মানবপাচারকারীর অনেকে একের পর এক পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সঃস্থার অভিযানে গ্রেফতার হলেও এখনো কুতুবজোমের শীর্ষ মোস্ট ওয়ানটেট মানবপাচারকারী,ক্রসফায়ারের তালিকাভুক্ত আসামী,ইয়াবা কাশেম এখনো প্রকাশ্যে এবং মোটা টাকার মিশনে মাঠে নেমেছে লুতু খুনের মামলা হতে বাদ যেতে।

মহেশখালী থানা থেকে মাএ ১.৫কি.মি দুরে বটতলী বাজারে প্রকাশ্যে প্রশাসনের নাকের ডগায় বহাল তবিয়তে,কাশেম নিজেকে জাহির করে বেড়ায় তার টাকার কারিশমায় পুলিশ তার পকেটে,বাস্তবে ও কি জনগন তা দেখতেছে ঠিকেই। যদিও তার বিরুদ্ধে হত্যা,খুন,ইয়াবাসহ,মানবপাচারের একাধিক মামলা,এবং ২০১৫সালের আলোচিত সোনাদিয়ার লুতু মিয়া খুনের অন্যতম আসামী সে।মহেশখালী থানা যার জিআর মামলা নং ০৪/১১৪.২০১৫ইং।বিগত ২৭শে অক্টোবর ১৪ইং, দৈনিক কক্সবাজার বার্তায়, দৈনিক সাগর দেশ, পত্রিকায় যাকে নিয়ে হেডলাইন হয়, ২২শে অক্টোবর দৈনিক বাকখালী, আজকের দেশ বিদেশ তার বিরুদ্ধে একাধিক নিউজ ছাপায়। যার বিরুদ্ধে অপহরনের লিখিত অভিযোগ দেন পুলিশ হেড কোয়ার্টার বরাবরে উওর বঙ্গের শৈলকুপার আরিফ উল্লাহ নামক এক যুবক।

কাশেম মানবপাচারের ঘাটি করে কুতুবজোম সহ দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিপুল আদম পাচার করে কোটি টাকার মালিক বনে যায় দিনে দিনে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ।।যার সাথে কুতুবজোমে মানবপাচারকারীর বীজ রোপন করেছিলেন তার চাচা চেয়ারম্যান শফি, তার ভাইপো হওয়ার সুবাদে প্রভাব দেখিয়ে দিন দুপুরে অগনিত মানুষকে বিপদে পেলেছে এই শীর্ষ পাচারকারী কাশেম।অথচ তিনি অধরায় থেকে যাচ্ছে বলে সাধারন জনগণের অভিযোগ,তারা শংকিত আতংকিত তার এমন আগ্রাসী ভুমিকায় আংকিত।সেই সাথে অনেকে দাবি করেন কাশেমকে গ্রেফতার করে রিমান্ডে নিলে সব গোপন তথ্য বেরিয়ে আসবে। কেন মানবপাচারে সোনাদিয়ার লুতু খুন হলো,কে বা কারা খুন করেছে লুতুকে?গভীর সাগরে জাহাজ থেকে স্বর্ন বা চোরাইপণ্য খালাস করে কারা?কুতুবজোম ঘাটে ইয়াবা চালান,সড়কে ডাকাতি,সমুদ্রে জলদস্যুতে কারা জড়িত,কেননা সব কিছুর গডফাদার ও সাহায্যদাতা হিসাবে বার বার তাদের নাম আসতেছে?,অথচ গডফাদারেরা অধরায় থেকে যাচ্ছে প্রশাসনের কাছে।এবং প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে অপরাধীরা।

অন্যদিকে মানবপাচারের অতি কৌশলী গোপন এই ধাপগুলো কাশেম, নিজের আয়ত্বে রেখে, তার ৫০%কমিশন খ্যাত পিএস রবি আলম পিতা সাহাব মিয়া, সোনা মিয়া পিতা মৃত ঠান্ডা মিয়া, খুরশেদ আলম পিতা গোলাম কুদ্দুস, মোসতাক আহমদ পিতা পুতু উল্লেখিত ব্যক্তিদের দিয়ে সিন্ডিকেট করে মানবপাচার করে, বিভিন্ন গণমাধ্যম তা অতীতে প্রমান সহ প্রকাশ করে জেলায় আলোড়ন তুলে।পাচারের টাকা লেনদেন হতো তার ভাইপো শাহেদের দোকানে বিকাশ এজেন্টে,হুন্ডি ও ব্যাংকের মাধ্যমে। যার জ্বলন্ত প্রমান বটতলী বাজারের তার ভাইপো শাহেদের দোকানের এজেন্ট নাম্বার ০১৭৮১৭৪৭১৫৫ ।এই নাম্বারেই লেনদেন হতো মাসে কোটিকোটি টাকা।একবার গ্রেফতার করে তার সত্যতা ও পেয়েছে পুলিশ। কিভাবে প্রশাসনের কাছে কাশেম এখনো ধরাছোয়ার বাহিরে তা কি তার টাকার কারিশমা না অপরাধের স্বর্গরাজ্যে বিচরন তা বোধগম্য নয়। যদিও তা নিয়ে রয়েছে গোপন রহস্য,কার খুঁটির বলে একজন সামান্য ইউপি চেয়ারম্যানের ভাইপো মানবপাচারের ঘাটি করেও সরকারের নিয়ম নীতি ও প্রচলিত আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে বহাল তবিয়তে তা প্রশ্নবিদ্ধ?হাজার হাজার আদম পাচার করেও কিভাবে সুরক্ষিত?কোন খুটি বা কার যএ ছায়ায় শীর্ষ মানবপাচারকারী, ক্রসফায়ার আসামী কাশেম তা জনগনের প্রশ্ন হয়ে দাড়িয়েছে।

এদিকে গোপনসুত্রে জানা যায়,কতিপয় মহেশখালী উপজেলার কিছু আওয়ামীলীগের নেতা,যারা সার্বক্ষণিক বিএনপির সাথে সরকার বিরোদী কাজে জড়িত, এমন কিছু নেতা চেয়ারম্যান শফির সাথে এবং কাশেমের সাথে সম্পর্কিত।অনেকে মনে করেন এসব অপরাধে কতিপয় পুলিশ সদস্যদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে বহাল তবিয়তে মানবপাচারের মতো অবৈধ ব্যবসার হাট বসিয়েছিলো। কাশেমের ধরা না পড়ার অন্যতম কারন হলো পুলিশের ভেতরে কিছু গোপন সহচর থাকায়,বার বার সে ক্রসফায়ারের আসামী হয়েও পার পেয়ে যাচ্ছে। ইতিমধ্যে যার বিরুদ্ধে প্রশাসনের কাছে অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে ও মামলা রয়েছে যে,কাশেমের হাত দিয়েই কুতুবজোমে সব অঅপরাধের নেটওয়ার্কের হাট বসে।এলাকার মানুষের তথ্যমতে, কুতুবজোমের জলপথে এইকাশেম মানবপাচারের ব্যবসা করে পকেটে কেটেছে অন্তত ৩কোটি টাকার মুক্তিপণ।পাচারের শিকার লোকজনের অনেকেই পথেই মারা গেছে। অনেকের সলিল সমাধি হয়েছে, কারো কারো ঠাঁই হয়েছে থাইল্যান্ডের গহিন জঙ্গলের গণকবরে।অন্যদিকে কুতুবজোমের নাম প্রকাশ না করা এক ব্যক্তি জানান,বর্তমানে সাগর পথে ইয়াবা,চোরাইপণ্য,জলদস্যুতা অবৈধ অপকর্ম বলবৎ রেখেছে চেয়ারম্যান শফির ডান হাত খ্যাত ভাইপো কাশেম।বর্তমানে লাখ টাকা নিয়ে মাঠে নেমেছে লুতু খুনের মামলা হতে বাদ যেতে।এ বিষয়ে মামলার বাদি জুলেখা বেগম প্রশাসনের সুদৃষ্টি কামনা করেন।

মানবপাচারকারী সামনের সারির কিছু চুনোপটি আইনের আওতায় আসলেও পেছনের মূল হোতা ও তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দাতার নাম,গডফাদারের নাম আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানলেও কোন গোয়েন্দা বা রেব গ্রেফতারে এগিয়ে আসেনি এসব রাঘববোয়ালদের।তাই বহাল তবিয়তে প্রকাশ্যে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে এসব শীর্ষ পাচারকারীরা।অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ইউপি চেয়ারম্যান শফির ঘনিষ্ঠজন ও অনুগতরাই মানবপাচার ও হাজার কোটি টাকার হুন্ডি ব্যবসা, ইয়াবা,চোরাইপণ্য সিন্ডিকেটের সঙ্গে জড়িত। মানবপাচার প্রতিরোধে গঠিত পুলিশের সেই কমিটির অনুসন্ধানে উঠে আসা পাচারকারীদের বিষয়ে খোঁজখবর নিতে গিয়ে সুনির্দিষ্ট এসব তথ্য পাওয়া গেছে।এমনকি নাম প্রকাশ না করা কুতুবজোম ইউনিয়নের কমিউনিটি পুলিশের এক সদস্য জানান, কুতুবজোম কে মানবপাচারের ঘাটি করেছে তা পুলিশ ভালো জানে, কমিউনিটি পুলিশ হিসাবে যা বলার তা বলিছি আমরা।বাকিটা সরকারের কাজ বলে জানান তিনি।অনুসন্ধানে আরো জানা যায়, পাচারে সহায়তাকারী হিসেবে কিংবা পাচারের টাকা লেনদেনে জড়িতদের বেশির ভাগ লোকই স্থানীয় আওয়ামী লীগ-বিএনপি,যুবলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। যেহেতু আর্থিক বিষয় জড়িত থাকায় বিএনপির ঘরনার চেয়ারম্যান শফি অনেক স্থানীয় নেতাকে কৌশলে পাচারের সঙ্গে জড়িয়েছেন। মামলা দিয়ে এলাকা ছাড়া করেছেন,রাজনীতির মাঠে বিরোধিতা থাকলেও মানবপাচারের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের নেতারা হাতে হাত রেখে গোপনে কাজ সেরেছেন,অথচ বাকি পুটি মাছেরা জেলে গেলো,রাঘব বোয়াল বহাল তবিয়তে সিংহাসনে বসা বলে অনেকের অভিযোগ।

পুলিশের অনুসন্ধান প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী ২০১৪ সালে ১৫ থেকে ২০ হাজার লোক অবৈধভাবে সমুদ্রপথে পাচার হয়েছে। সম্প্রতি জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রায় দেড় লাখ মানুষ অবৈধভাবে যাত্রা করেছে। তাদের প্রত্যেকের কাছ থেকে দুই লাখ থেকে দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা পর্যন্ত মুক্তিপণ আদায় করে করেছিলো।যার ৩৫% কুতুবজোম ঘাট দিয়ে,৪৫%টেকনাফ আর ২০% সমগ্র নৌপথ দিবয়ে।

মহেশখালী উপজেলার একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেছেন, ‘জনপ্রতিনিধি ও রাজনীতিবিদরাই এসব অপকর্মের সঙ্গে জড়িত।তবে রাজনৈতিক বা আর্থিক লাভের কারনে শিকড়ের দিকে কেউ যাওয়ার সাহস পাচ্ছে না বিধায় গডফাদারেরা অধরা থেকে যায়।তবে সাম্প্রতিক সময়ে সরকারের জিরো টলারেন্জ অনেকটা সফল গডফাদারেরা সুরক্ষিত থাকলেও,গডফাদারদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেবে কিনা এমন প্রশ্ন জানতে চাইলে, এসপি শ্যামল কুমার দত্ত বলেন, ‘পুলিশ ২০১২ থেকে ২০১৫ সালের এপ্রিল পর্যন্ত কক্সবাজার জেলার থানাগুলোতে মানবপাচার-সংক্রান্ত ৩০৬টি মামলা হয়েছে।অধিকাংশ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। এসব মামলায় এক হাজার ৫৩১ জন আসামির মধ্যে ৪৭৭ জনকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। পরে তাদের অনেকেই আদালত থেকে জামিন নিয়েছে তবে গডফাদারদের বিরুদ্ধে শীঘ্রেই ব্যবস্থা নেবে প্রশাসন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.