আ’লীগ থেকে পদত্যাগ করলেন সীতাকুন্ড পৌর মেয়র প্রার্থী

0

সীতাকুন্ড প্রতিনিধি :: সীতাকুন্ড পৌর সভার বর্তমান মেয়র নায়েক (অব:) সফিউল আলমের সীতাকুন্ড উপজেলা আওয়ামী লীগের সকল পদ ও সাধারণ সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। আগামীকাল বুধবার রাত সাড়ে নয়টায় এই পদত্যাগের কথা সাংবাদিকদের জানান নায়েক অব: সফিউল আলম। তিনি পৌর নির্বাচনে স্বতন্ত্রপ্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে নির্বাচন করছেন।

নায়েক সফি ১৯৪৬ সালের ৩রা মার্চ সীতাকুন্ড পৌরসভাস্থ পশ্চিম মহাদেবপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তিনি জুনিয়র উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত লেখাপড়া সমাপ্ত করে ০২ জুলাই ১৯৬৫সালে তৎকালীন পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ শুরু হলে পাকিস্তানী সৈনিক হিসেবে ভারতের সাথে ১৯৬৫সালে যুদ্ধে লিপ্ত হয়।

১৯৭১সালের ২৫শে মার্চ বর্বর পাকিস্তানী বাহিনী চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্টে আক্রমন করার সময় তিনি চট্টগ্রাম সেনানিবাসে উপস্থিত ছিলেন এবং ২৬শে মার্চ ১৯৭১ সালে মেজর জিয়াউর রহমান, ক্যাপ্টেন মীর শওকত আলীসহ পাকিস্তানী সৈন্যদের সাথে যুদ্ধে লিপ্ত হয়ে যায়।

৯মাস যুদ্ধ শেষে ১৬ই ডিসেম্বর ১৯৭১সালে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তিনি পুনরায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন এবং ৩১শে ডিসেম্বর ১৯৭৪সালে সেনাবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণ করেন।

১৫ইং আগষ্ট ১৯৭৫সালে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্ব-পরিবারে হত্যা হওয়ার পর চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের সাবেক মেয়র এ.বি.এম মহিউদ্দীন চৌধুরীর নেতৃত্বে এ্যাডভোকেট সালাউদ্দীন হারুন, চেয়ারম্যান মহসিন জাহাঙ্গীর, চেয়ারম্যান দিদারুল আলমসহ সীতাকুন্ড হতে আরো অনেকে ভারতের আঁগরতলা চলে যায়।

সেখানে সাবেক মেয়র মহিউদ্দীন চৌধুরীর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু স্ব-পরিবারে হত্যাকারীদের বিরুদ্ধে একটি বাহিনী গঠন করা হয়; যার নাম দেওয়া হয় “কাদেরিয়া বাহিনী”।
১৯৮০সালে তিনি চট্টগ্রামে গ্রেফতার হন এবং ১৯৮৫সালে জেল থেকে মুক্তি পায়।১৯৮৬সালে বাড়বকুন্ড জোনের শ্রমিকলীগের দায়িত্ব পালন করে।

১৯৮৮সালে প্রথম ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয় এবং ১৯৯১সালে ২য় বার ইউপি চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়।
১৯৯১সালে চেয়ারম্যান রহমতুল্লা সাহেবের মৃত্যুর পর সীতাকুন্ড থানা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৮ সালে চেয়ারম্যান থাকাকালীন ৩নং ইউপি পৌরসভা হিসেবে রূপান্তরিত হওয়ায় পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

২০০২সালে নবগঠিত পৌরসভার চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয় কিন্তু দুর্ভাগ্য যে, তার নির্বাচনী ফলাফল বি.এন.পি সরকার চিনিয়ে নিয়ে যায়।

২০০৮সালে পুনরায় পৌরসভার মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হয়। বর্তমানে মেয়র হিসেবে দায়িত্বরত আছেন।

১৯৮৬সাল হতে মসজিদ,মক্তব,মাদ্রাসা ও স্কুল প্রতিষ্ঠা শুরু করে। তিনি নিজেই ২টি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা, ৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন, আরো ৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা তিনি, ৪টি মসজিদ নিজেই প্রতিষ্ঠা করে, ৬টি মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা তিনি ও ১টি মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।

১৯৮৮সালে চেয়ারম্যান হওয়ার পর হতে অদ্য ২০১৫সাল পর্যন্ত সীতাকুন্ড বর্তমান পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের শতকরা প্রায় ৮০ভাগ রাস্তা,ব্রীজ,কালভার্ট নির্মাণ সম্পন্ন করেন। আরো ২০ভাগ রাস্তা আগামী ২০১৭সালের মধ্যে সম্পন্ন করার প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানান।

সীতাকুন্ড পৌরসভা এলাকায় ১৯৯৮সাল হতে অদ্যাবধি পর্যন্ত আগুনে পুড়ে যাওয়া প্রায় ৬২টি পরিবারের ঘর পুননির্মাণ করি দিয়েছেন।

১৯৮৮ হতে ২০১৫ পর্যন্ত চেয়ারম্যান, প্রশাসক ও মেয়র এর দায়িত্ব থাকাকালীন এ দীর্ঘ সময়ের মধ্যে কারো নিকট হতে কোন ধরনের টাকা-পয়সা গ্রহণ করেন নাই ও কোন ঠিকাদার থেকে পিসি বা টাকা পয়সা গ্রহণ করেন নাই এবং প্রশাসনকে বলে কোন লোককে গ্রেফতার বা জেল হাজতে প্রেরণ করেন নাই। তিনি দীর্ঘ সময় আওয়ামী লীগের রাজনিতি করেছেন ।
ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো: ইসহাক ও সেক্রেটারী আবদুল্লাহ আল বাকের ভুইয়ার সাথে মুঠো ফোনে জানতে চাইলে তারা এই প্রতিবেদককে পদত্যাগের সত্যতা স্বিকার করেন। উপজেলা দপ্তর সম্পাদক মাঈমুন উদ্দিন মামুনও দিদারুল আলম পদত্যাগ পত্র গ্রহণ করেন ।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.