নিজস্ব প্রতিবেদক :: পবিত্র ঈদে-মিলাদুন্নবী (দ.) উদ্যাপন, বিশ্বঅলি শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারীর (ক.) ৮৭তম খোশরোজ শরীফ ও চান্দ্রবার্ষিকী ফাতেহা উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল ও আলোচনা সভা আজ ১৪ ডিসেম্বর সোমবার নগরীর মুসলিম হলে অনুষ্ঠিত হয়। মাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি বাংলাদেশ চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন মাইজভাণ্ডারী গবেষক মুহাম্মদ গোলাম রসূল। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন চউক চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুচ ছালাম।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, ঈদে মিলাদুন্নবী (দ.) উদ্যাপনে শরিক হওয়া ঈমানের দাবি। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (দ.) এর উসিলায় সমস্ত সৃষ্টি জগৎ অস্তিত্ব লাভ করেছে। মহানবী (দ.) আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে জগৎবাসীর জন্য বড় নিয়ামত ও অনুগ্রহ স্বরূপ। তাই, ঈদে মিলাদুন্নবীর (দ.) পরিবর্তে অন্য কিছু এ মাসে পালন করা ইসলামী নির্দেশনার লংঘন এবং অকৃতজ্ঞতার শামিল। বক্তারা কিছু মিডিয়ায় নবী-ওলী বিদ্বেষী তৎপরতা বন্ধে সংশ্লিষ্টদের প্রতি দাবি জানান। বক্তারা বলেন, শরিয়ত, তরিকত, নবী-ওলীদের মাজার স্থাপনা ইসলামের সৌন্দর্য্য ও আস্থার ঠিকানা। মাজার-ওলীর বিরুদ্ধে বিষোদগার ঈমানহানিকর বলে বক্তারা উল্লেখ করেন।
বক্তারা বলেন, নবী-ওলীগণ আল্লাহ পাকের পক্ষ থেকে ক্ষমতা ও মর্যাদাপ্রাপ্ত। তাঁদের আধ্যাত্মিক ক্ষমতা ও অলৌকিকতা অস্বীকার করা মানে ইসলামী নির্দেশনার সরাসরি লংঘন। যারা নবী-ওলীর আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাস করেন না, তারা বিপথগামী ও বিভ্রান্ত। প্রধান অতিথি আলহাজ্ব আবদুচ ছালাম বলেন, আজ সমগ্র বিশ্বে অশান্তি ও মানবিক বিপর্যয় নেমে এসেছে। বিশ্বঅলি শাহানশাহ্ হযরত সৈয়দ জিয়াউল হক মাইজভাণ্ডারী (ক.) আল্লাহ পাকের প্রদত্ত আধ্যাত্মিক ক্ষমতায় মানুষের কল্যাণে ও দ্বীনের প্রচারে আজীবন নিজেকে নিবেদিত রেখেছিলেন। নবী-ওলীদের প্রদর্শিত ভালোবাসা ও স¤প্রীতির দর্শন অনুসরণ করে উত্তপ্ত অশান্ত বিশ্বে শান্তি ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ও আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন জ.বি অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আবদুল মান্নান চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ তৌহিদ হোসেন চৌধুরী, দৈনিক আজাদীর চিফ রিপোর্টার হাসান আকবর, চবি.র অধ্যাপক ড. মাওলানা মুহাম্মদ জাফর উল্লাহ, গবেষক মাওলানা বাকি বিল্লাহ আযহারী।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ আশরাফুজ্জামান আশরাফের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে গাউসিয়া হক কমিটি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান বাবুল, মাইজভাণ্ডারী গাউসিয়া হক কমিটি মহানগর সভাপতি এম মাকসুদুর রহমান হাসনু মীর ত্বরিকুল আলম, হাজী এস.এম সাহাবুদ্দীন, নুরুল করিম নুরু, মেজবাহ উদ্দিন, আশরাফ উদ্দিন ছিদ্দিকী, সামশুল আলম, মোঃ ওমর ফারুক, মুহাম্মদ ইউছুপ আলী, মুহাম্মদ রিপন প্রমুখ।
আলোচক ড. মুহাম্মদ আবদুল মান্নান চৌধুরী বলেন আল্লাহর ওলীগণ মানবজাতির জাগতিক ও আধ্যাত্মিক দিশারী। তাঁদের আদর্শ অনুসরণের মাধ্যমে আমরা আমাদের গ্লানিময় জীবনকে সমৃদ্ধ ও উন্নত করতে পারে।
বিশেষ অতিথি সাংবাদিক হাসান আকবর বলেন, বিশ্বঅলির দর্শন আমাকে গভীরভাবে অনুপ্রাণিত করে। নামাজ পড়া, হালাল খাওয়া ও সৎ পথে চলাই ঈমানদারিত্বের লক্ষণ।
এ ব্যাপারে বিশ্বঅলি আমাদের বিশেষভাবে তাগিদ দিয়েছেন। আল্লাহর ওলীদের জীবনাদর্শ অনুসরণের তাগিদ দেন তিনি। সভাপতির বক্তব্যে গোলাম রসুল বলেন, বিশ্বঅলি (ক.) ছিলেন অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী আধ্যাত্মিক ব্যক্তিত্ব। তাঁকে খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ ঘটেছে আমার। এমন মানবদরদী, ত্যাগী ও মহানুভব ব্যক্তিত্ব আমি আর দেখিনি। মিলাদ কিয়াম শেষে দেশ ও জাতির কল্যাণ কামনায় বিশেষ মুনাজাত করা হয়।