পৌর নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলায় ছাড় নয়

0

সিটিনিউজবিডি :: পৌরসভা নির্বাচনকে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ করার জন্য প্রয়োজনীয় সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে ফরিদপুর জেলা ও পুলিশ প্রশাসন। সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট হয় এমন সব ধরনের কাজ কঠোর হাতে দমন করারও ঘোষণা দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার জেলার আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় এ বিষয়ে আলোচনা হয়।

জেলা প্রশাসক সরদার সরাফত আলীর সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলার পুলিশ সুপার জামিল হাসান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এরাদুল হক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মনদীপ ঘরাই, জেলার পাবলিক প্রসিকিউটর খসরুজ্জামান দুলু, আলফাডাঙ্গা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল খায়ের, বোয়ালমারী উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা মু. খাইরুজ্জামান, ভাঙ্গা উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনসহ কমিটির অন্যান্য সদস্যরা।

বোয়ালমারীর ইউএনও মু. খাইরুজ্জামান বলেন, ‘উপজেলার আইনশৃঙ্খলা অবস্থা স্বাভাবিক। তবে পৌরসভা নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে। এজন্য জেলার পুলিশ, র‌্যাব এবং প্রয়োজনে বিজিবি থেকে অতিরিক্ত ফোর্স দেয়া প্রয়োজন হতে পারে।’ জবাবে জেলা প্রশাসক সরদার সরাফত আলী বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনের ব্যাপারে একটি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সেই অনুযায়ী আমরা কাজ করবো। তবে প্রয়োজন অনুযায়ী এই কাঠামোতে পরিবর্তন করা দরকার হতে পারে। বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের দৃষ্টিতে আনা হয়েছে।’ পরে পুলিশ সুপার জামিল হাসান বলেন, ‘নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা ব্যবস্থা নিয়ে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। নির্বাচন নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু করতে যা যা করা দরকার সব করা হবে। সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণœ হতে দেয়া হবে না। এজন্য সবার সহযোগিতা প্রয়োজন।’

সভায় আলফাডাঙ্গার ইউএনও আবুল খায়ের বলেন, ‘মধুমতি নদীর ওপারে কিছু অংশ আলফাডাঙ্গা উপজেলাধীন। ওইসব মাগুরার মোহাম্মদপুর ও লোহাগাড়া সংলগ্ন। আশঙ্কার দিক হচ্ছে, মোহাম্মদপুর ও লোহাগাড়া এলাকার কিছু দুস্কৃতিকারী যাত্রা, সার্কাসের নামে অসামাজিক ও অশ্লীল কার্যক্রম পরিচালনা করে। আমি বেশ কয়েকবার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছি। কিন্তু নদী পার হয়ে যেতে হয়। যে কারণে অপরাধীরা পালিয়ে যায়। এব্যাপারে জেলা পুলিশের সহযোগিতা প্রয়োজন।’ জবাবে পুলিশ সুপার জামিল হাসান বলেন, ‘আপনি যেদিন চাইবেন অতিরিক্ত পুলিশ ফোর্স দেয়া হবে। পাশাপাশি মাগুরার পুলিশ সুপারের সঙ্গেও এনিয়ে কথা বলবো।’

সভায় বেশ কয়েকটি আলোচিত মামলার অগ্রগতি নিয়ে আলোচনা হয়। এর মধ্যে কিশোরী চম্পা হত্যার রায় নিয়ে পর্যালোচনা হয়। এক্ষেত্রে পুলিশের ভূমিকার প্রশংসা করা হয়। এনিয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ‘রায়ের পর সংবাদপত্রের খবরে এনজিওকর্মী, সমাজসেবক ও মানবাধিকারকর্মীদের ভূমিকার বিষয়টি তুলে ধরা হলেও পুলিশের ব্যাপারে কিছু লেখা হয়নি। অথচ মামলার তদন্ত এবং আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে কিছুই বলা হয়নি। পুলিশের কাজেরও প্রশংসা হওয়া দরকার।’

সভায় মানবপাচার, হয়রানিমূলক মামলাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়। জেলা প্রশাসক সরদার সরাফত আলী বলেন, ‘ফরিদপুরের পুলিশ প্রশাসনের সহযোগিতায় জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখা সম্ভব হয়েছে। স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী ও মাননীয় সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনসহ, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা অনেকেই সহযোগিতা করছেন বলে এটা সম্ভব হচ্ছে।’ এসপি জামিল হাসান বলেন, ‘সমাজ থেকে পুরোপুরি অপরাধ দূর করা সম্ভব না। তবে অপরাধমূলক কর্মকা- নিয়ন্ত্রণে রাখাটাই মূল বিষয়। সেই দিক থেকে ফরিদপুর জেলার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আশপাশের অন্যান্য জেলার চেয়ে অনেক ভাল। এখানে অপরাধ ঘটলেও দ্রুত তদন্ত ও আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে।’

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.