সাবেক এম.পি ইউসুফের পাশে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট

0

চট্টগ্রাম অফিস  :    বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক সংসদ সদস্য মোহাম্মদ ইউসুফ অনাদর, অবহেলা ও সুচিকিৎসার অভাবে ধুকে ধুকে মরণ যন্ত্রণা ভোগ করছেন। তিনি ১৯৯১ সালে রাঙ্গুনিয়া সংসদীয় আসনে ৮ দলীয় জোট থেকে কমিউনিস্ট পার্টির প্রার্থী হয়ে প্রবল প্রতাপশালী বিএনপি প্রার্থী যুদ্ধাপরাধী মামলায় ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত আসামী সালাউদ্দীন কাদের চৌধুরীর ছোট ভাই গিয়াস উদ্দিন কাদের চৌধুরীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে পাদপ্রদীপের আলোয় আসেন। রাঙ্গুনিয়া কলেজ সংলগ্ন পূর্ব সৈয়দ বাড়ির সন্তান ছাত্র জীবনে বামধারার রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন। পরবর্তীতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সক্রিয় সদস্য হিসেবে সার্বক্ষণিক রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে নিয়োজিত হন। তাঁর সুদীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে কোন লোভ ও প্রলোভন তাঁকে নীতি চ্যুত করতে পারেনি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তাঁকে বিএনপি-তে যোগ দেয়ার জন্য তিন কোটি টাকা দিতে চেয়েছিলেন। সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান মোহাম্মদ ইউসুফ সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে নিজের নিষ্কলুষ ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেন এবং পরবর্তীতে আওয়ামীলীগে যোগদান করেন।

অকৃতদার মোহাম্মদ ইউসুফ একবার সংসদ সদস্য হবার পরও বিত্ত বৈভবের কথা ভাবেন নি। এমনকি সংসদ সদস্যের জন্য বরাদ্দকৃত শুল্ক মুক্ত গাড়িও ক্রয় করেন নি। এমপি থাকা অবস্থায় শহরে যাতায়াত করতেন বাসে করে। এমনকি তাঁকে কখনো কারো কাছ থেকে সুবিধে পাইয়ে দেয়ার বিনিময়ে টাকা-পয়সা নেয়া তাঁর নীতি বিরুদ্ধ ছিল। নিজের রাজনৈতিক বিশ্বাসে শতভাগ অনুগত মোহাম্মদ ইউসুফ কম্যুনিস্ট পার্টি থেকে আওয়ামী লীগে যোগদান করার পর মোটেও সুবিধাভোগী ছিলেন না। চাল-চলনে অতি সাধারণ এই মানুষটি পায়ে হেঁটে তাঁর নির্বাচনী এলাকার পথে প্রান্তরে চষে বেড়াতেন। সকলের সুখে দুঃখে পাশে থাকা এই সাবেক জনপ্রতিনিধি এখন রোগে-শোকে দুঃখের অথৈ সাগরে হাবুডুবু খাচ্ছেন। ছোট ভাই সোলায়মানের আশ্রয়ে থাকা মোহাম্মদ ইউসুফ এখন কঠিন নিয়তির কাছে সমর্পিত। ছোট ভাইয়ের আয়-রুজির একমাত্র সম্বল সাধারণ একটি চায়ের দোকান। বড় ভাইয়ের চিকিৎসা ও ওষুধপত্রের খরচ টানতে গিয়ে ছোট ভাইয়ের সংসারও চলে না। গত ৪ বছর আগে কৃষি মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন ও স্থানীয় সাংসদ ড. হাসান মাহমুদ মোহাম্মদ ইউসুফকে চিকিৎসা সহায়তা দিলেও তা যথেষ্ট ছিল না। তাঁর সুচিকিৎসার জন্য সরাসরি সরকারি উদ্যোগ নেয়া অত্যন্ত জরুরি।

তা না হলে যে-কোন সময় বিপন্ন এই রাজনীতিকের জীবন প্রদীপ বিনা চিকিৎসায় নিভে গেলে আফসোসের অন্ত থাকবে না। অত্যন্ত পরিবারের বিষয় মোহাম্মদ ইউসুফ একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও রণাঙ্গনের সৈনিক হওয়া সত্ত্বেও কোন সরকারি ভাতা ও সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন না। আজ মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য সরকার অনেক কিছু করলেও অসহায় মুক্তিযোদ্ধা ও রাজনীতিক মোহাম্মদ ইউসুফের জন্য সরকারি অনুকম্পার অভাব তাঁকে করুণ পরিণতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে। তাঁর আপনজনরা এখনও আশা করেন, সরকার মরণাপন্ন মোহাম্মদ ইউসুফের পাশে দাঁড়াবেন। আজ সকালে বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলার নেতৃবৃন্দ রাঙ্গুনিয়ায় পূর্ব সৈয়দ বাড়িতে সাবেক সাংসদ রোগাক্রান্ত মোহাম্মদ ইউসুফের শয্যাপাশে গিয়ে তাঁকে সমর্মিতা জানান এবং তাঁর হাতে কিছু আর্থিক সাহায্য তুলে ধরেন।

এই সময় নেতৃবৃন্দ বলেন, মৃত্যুর পর মোহাম্মদ ইউসুফকে সম্মান জানানো অর্থহীন। বেঁচে থাকতেই তাঁকে সম্মান জানাতে হবে এবং তাঁর আশু রোগ মুক্তি ও আর্থিক সহায়তার জন্য দ্রুত সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। এ জন্য নেতৃবৃন্দ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রীর সুদৃষ্টি কামনা করেন। এই সময় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামীলীগের মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম চিশতী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলার সভাপতি অনুপ বিশ্বাস, নগর যুবলীগের সদস্য সুমন দেবনাথ, লিটন রায় চৌধুরী, বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রাম জেলার সাধারণ সম্পাদক সংস্কৃতিকর্মী খোরশেদ আলম, সংস্কৃতিকর্মী বাবুল দাশ, আশু চৌধুরী প্রমুখ

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.