‘সুযোগ পেলে বিদেশেও অবদান রাখবে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা’

0

সিটিনিউজবিডি :: মেধা বিকাশের সুযোগ পেলে বাংলাদেশি শিক্ষার্থীরা আন্তর্জাতিকভাবে অবদান রাখতে সক্ষম হবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

বুধবার (০৬ জানুয়ারি) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে কৃতি শিক্ষার্থীদের স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) উদ্যোগে এ স্বর্ণপদক প্রদান অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, স্বাধীনতার পরপরই নারী শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব দিয়েছিলেন জাতির পিতা। প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক করেছিলেন তিনি। এর ধারাবাহিকতায় শিক্ষার উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। ‘শিক্ষা ছাড়া কোনো জাতি উন্নতি করতে পারে না। মেধা বিকাশের সুযোগ করে দিতে পারলে আমাদের ছেলে-মেয়েরা শুধু দেশেই নয়, বিদেশেও অবদান রাখতে সক্ষম হবে,’ বলেন প্রধানমন্ত্রী

বিজ্ঞানের প্রতি শিক্ষার্থীদের অনীহার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগের তুলনায় বিজ্ঞান শিক্ষার প্রতি শিক্ষার্থীদের অনীহা রয়েছে। সাহিত্য ও বিজ্ঞানে প্রতি আগ্রহ তৈরি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে সরকার প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছে।

১৯৯৬ সালে সরকারে এসে প্রথম ১২টি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার সিদ্ধান্তের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তখন সরকারে থেকে ৬টি প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছিলাম। এরপর যারা সরকারে আসে তারা এই প্রক্রিয়া বন্ধ রাখে। পরে ২০০৯ সালে ক্ষমতায় এসে আবারও প্রক্রিয়া শুরু হয়। একে একে দেশে গড়ে উঠছে বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয়। দেশে প্রথম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, একাধিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয় করার উদ্যোগ ও বাস্তবায়নের কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।

শিক্ষায় আমাদের লক্ষ্য বহুমুখী, বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই লক্ষ্য নিয়েই তার সরকার কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েই নতুন শিক্ষানীতি নেওয়া হয়েছে।

বেশি বেশি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলার পক্ষেও সরকার কাজ করছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের লক্ষ্য কেবল রাজধানী নয়, সারাদেশ। এখানে লক্ষ্য রাখতে হবে দেশের সর্বত্র শিক্ষার সুযোগ তৈরি করা। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রস্তাব যারা নিয়ে আসছে তাদের বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় করার এবং ঢাকার বাইরে বিশ্ববিদ্যালয় করার নির্দেশনা সরকার দিচ্ছে বলেও জানান শেখ হাসিনা।

জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলা সরকারের লক্ষ্য, বলেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মা-বাবার চোখের সামনে থেকে ছেলে মেয়েরা লেখা পড়ার সুযোগ পেলে তাদের মেধাবিকাশের সুযোগ বাড়বে।

কেবল রাজধানীভিত্তিক উন্নয়ন পরিকল্পনা নয়, গ্রামকে সাথে নিয়ে আমাদের এগুতে হবে, সমগ্র বাংলাদেশই আমাদের উন্নয়নের লক্ষ্য, বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমরা এরই মধ্যে গ্রামের ও শহরের আয় বৈষম্য কমিয়ে আনতে পেরেছি।

অনুষ্ঠানে নারী শিক্ষায় অগ্রগতির কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, নারী শিক্ষার হার বাড়ছে। প্রাথমিকে ঝড়ে পড়ার হার কমার পাশাপাশি শিক্ষার প্রতি আগ্রহও বেড়েছে। তা এবারের ইউজিসি স্বর্ণপদক অনুষ্ঠানেই প্রমাণ হয়। ইউজিসি ২০১১ সালে ৩৭.২১ নারী, ২০১২ সালে ৪০.২১ নারী শিক্ষার্থীকে স্বর্ণপদক দিচ্ছে। এভাবেই মেয়েরা প্রায় সমান সমান হয়ে উঠছে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার পথে সরকারের অগ্রগতির কথা জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমাদের ঘোষণা ছিলো ডিজিটাল বাংলাদেশ, আমরা সে পথে এগিয়ে যাচ্ছি। সারা দেশে এখন ইন্টারনেট সুবিধা পৌঁছে গেছে। বইগুলো ডিজিটাইজড ও সহজলভ্য করা হচ্ছে। এতে শিক্ষার্থীরা এগিয়ে যেতে পারবে।

এ অনুষ্ঠানে ২০১১ সালের ৭৪ জন এবং ২০১২ সালের ৯২ জন মেধাবী শিক্ষার্থীর হাতে স্বর্ণপদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মেধাবী শিক্ষার্থীদের উৎসাহ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন ২০০৬ সাল থেকে ‘প্রধানমন্ত্রী স্বর্ণপদক’ দিয়ে আসছে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক পর্যায়ে প্রতিটি অনুষদে সর্বোচ্চ নম্বরপ্রাপ্তরা এই পদকের জন্য মনোনীত হন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.