সিটিনিউজবিডি :: বেসিক ব্যাংকের দুই হাজার কোটি টাকা ঋণ কেলেঙ্কারির মামলা তদন্তে ব্যাংকের দুই উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (ডিএমডি) তিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
এরা হলেন— মামলার এজাহারভুক্ত অন্যতম আসামি বেসিক ব্যাংকের ডিএমডি ফজলু সোবহান ও মো. সেলিম এবং ব্যাংকের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার (ডিজিএম) শিপার আহমেদ।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ ইতোমধ্যেই ঋণ জালিয়াতিসহ বিভিন্ন দুর্নীতির অভিযোগে ওই কর্মকর্তাদের বরখাস্ত করেছে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুদক কার্যালয়ে বৃহস্পতিবার সকালে মামলার তদন্তের স্বার্থে তাদের আটক করে নিয়ে আসা হয়। এরপর থেকে কঠোর গোপনীয়তায় কমিশনের চেয়ারম্যানের কক্ষে তাদের নিয়ে যাওয়া হয়েছে।
মামলার তদন্তের স্বার্থে তাদের রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবা করা হচ্ছে। ওই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আটক করা হলেও মামলায় গ্রেফতার দেখানো হবে কি না-এ নিয়ে কমিশনের গোপন বৈঠক চলছে। কমিশনের একটি বিশ্বস্ত সূত্র এ সব তথ্য নিশ্চিত করেছে।
প্রায় দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযাগে ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর মোট ১৫৬ জনের বিরুদ্ধে পৃথক ৫৬টি মামলা করে কমিশন। মামলাগুলোর এজাহারে ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় আটক ওই ব্যাংক কর্মকর্তাদের প্রধান ভূমিকা ছিল বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বেসিক ব্যাংকের ঋণ জালিয়াতির ঘটনায় দুদক ডজন ডজন মামলা করলেও এতে আসামি হিসেবে নেই ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাচ্চুসহ পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা।
বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, সিএজি কার্যালয় ও খোদ বেসিক ব্যাংকের নানা প্রতিবেদনে এ কেলেঙ্কারির সঙ্গে সাবেক চেয়ারম্যান বাচ্চুসহ অনেকের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পাওয়া যায়। পক্ষান্তরে দুদকের কোনো মামলায় ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান বাচ্চুর সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় বিভিন্ন মহলে তীব্র বিতর্কের সৃষ্টি হয়। তবে কমিশন বলছে, মামলার তদন্তে বাচ্চুর কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে তা বিবেচনায় নেওয়া হবে।
আবদুল হাই বাচ্চু বেসিক ব্যাংকের চেয়ারম্যান থাকাকালীন চার বছর তিন মাস সময়ে ছয় হাজার ৬৭৩ কোটি টাকা ঋণ প্রদান করেন। এর মধ্যে প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি টাকাই নিয়ম ভেঙে ঋণ দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ ছিল। যা অনুসন্ধান করে সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় বাচ্চুকে ছাড়া মামলা করে দুদক। তবে ঋণ জালিয়াতিতে ওই কর্মকর্তাদের প্রধান ভূমিকা ছিল বলে মামলায় তাদের অন্যতম আসামি করা হয়।