পর্যটন সমৃদ্ধ বাঁশখালীর উপকূল, আসছে পর্যটকরা

0

কল্যাণ বড়ুয়া মুক্তা, বাঁশখালী   :  বাঁশখালীর উপকূলীয় বাহারছড়া, সরল, গন্ডামারা ও খানখানাবাদ এলাকাকে ঘিরে পর্যটন স্পটে পরিণত হচ্ছে। প্রতিদিন এখানে নানা শ্রেনীর পর্যটকদের আগমনে মুখর হচ্ছে উপকূলীয় এলাকা। একদিকে বিশাল লেক, অপরদিকে কক্সবাজারের না গিয়ে চট্টগ্রামের কাছেই বাঁশখালীতে যানজটহীন ভাবে সমুদ্রে আবহাওয়া উপভোগ করা সবমিলিয়ে বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকা এখন পর্যটকদের কাছে একটি পরিচিত নাম। পূর্ব দিকে বিস্তৃর্ণ  এলাকা জুড়ে রয়েছে পাহাড় এবং পশ্চিম দিকে রয়েছে বঙ্গোপসাগর তীরবর্তী উপকূলীয় সুদূর প্রসারী সমুদ্র চর। এখানে রয়েছে বেশ কিছু উল্লেখ যোগ্য পর্যটন স্পট। বর্তমানে ভ্রমণ পিপাসু পর্যটকরা প্রতিনিয়ত কক্সবাজারের ন্যায় এখানে এসে ভিড় জমান। প্রশাসন ও যথাযথ কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবে পড়ে আছে পর্যটন গুলোর সংস্কার কাজ। অন্যান্য পর্যটন স্পট গুলোর পাশাপাশি সরকার যদি বাঁশখালীর উপকূলীয় সমুদ্র সৈকত ও ঝাউবাগানের যথাযথ তদারকি করেন তাহলে বাঁশখালীর উপকূলে হতে পারে দেশের অন্যতম পর্যটন স্পট।
সুদীর্ঘ ৩৭ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত নজর কাড়ে যে কারো। সরকারের যথাযথ নজরদারির অভাবে এই সমুদ্র সৈকতকে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে রূপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে সংশ্লিষ্টরা। বন বিভাগের পক্ষ থেকে বিগত দিনে বাঁশখালী উপকূলীয় সমুদ্র উপকূলকে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে রূপ দেওয়ার জন্য অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। বাঁশখালী ইকোপার্কের পক্ষ থেকে কদমরসুল বন বিশ্রামাগার ও উপকূলীয় এলাকায় বেশ কিছু শেড নির্মাণ করা হয়। অথচ কক্সবাজারের বিকল্প সমুদ্র সৈকত হিসাবে বাঁশখালী সমুদ্র সৈকতকে রূপায়িত করতে পারলে সরকার অর্থনৈতিক ভাবে লাভবান হতো তাতে কোন সন্দেহ নেই। বাঁশখালীর ছনুয়া থেকে শুরু করে গন্ডামারা, সরল, বাহারছড়া, খানখানাবাদ এলাকার বিশাল সমুদ্র সৈকতে সারি সারি ঝাউবাগান যে কারো নজর কাড়ে। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাঁশখালীর উপকূল জুড়ে স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য ২০৯ কোটি টাকা বরাদ্দ প্রদান করেন এবং যা একনেকে অনুমোদনের সাপেক্ষে অচিরেই এর কার্যক্রম শুরু হবে বলে বাঁশখালীর সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমান চৌধুরী জানান। এই কার্যক্রম শুরু হলে উপকূল জুড়ে স্থায়ী বেড়িবাঁধ এবং এর পাশে সারি সারি ঝাউগাছ যে কারো মন কাড়বে। তাছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থা একটু উন্নত করা হলে যেকেউ একটু বিনোদনের আসায় জড়ো হবে বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকায়।
বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকায় ঝাউবাগান ও ম্যানগ্রোভ বাগান সৃজনের জন্য দীর্ঘদিন থেকে নানা ভাবে বনবিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। ফলে বিগত দিনে সৃজিত ঝাউবাগান সে সব স্থানে রয়েছে, সেই সব স্থানের উপকূলীয় এলাকা অনেক মজবুত রয়েছে। অন্যদিকে যেসব স্থানে ঝাউবাগান সহ অন্যান্য কোন গাছ নেই সেই সব এলাকায় বঙ্গোপসাগরের জোয়ারের স্রোতে বেঁড়িবাঁধ বিলীন হয়ে যাচ্ছে। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকার লক্ষাধিক জনগণ। বিশেষ করে বাঁশখালীর খানখানাবাদ, বাহারছড়া, সরল, গন্ডামারা ও ছনুয়া এলাকার উপকূলীয় এলাকায় বনায়ন জরুরী হয়ে পড়েছে। বর্তমান জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সারা দেশে বনায়নের গুরুত্বারোপ করলেও সেক্ষেত্রে বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকায় যথাযথ ভাবে বনায়নের জন্য বরাদ্দ পাওয়া যায় না বলে সংশ্লিষ্টরা দাবী করেন।
বাঁশখালীর বাহারছড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মোঃ লোকমান বলেন, বাঁশখালীর বাহারছড়া উপকূল কক্সবাজারের মতো দীর্ঘতম না হলেও এখানকার স্পটটি যেকারো নজর কাড়ে। ফলে বাঁশখালীর উপকূলীয় এলাকা জুড়ে পর্যটন স্পট গড়ে তোলা হলে সরকার অর্থনৈতিক ভাবে অনেক রাজস্ব পাবে তাতে কোন সন্দেহ নেই। বাঁশখালীর উপকূলীয় বন বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, বর্তমানে বনবিভাগের অধীনে উপকূল জুড়ে ঝাউবাগান ও ম্যানগ্রোভ বাগান সৃজন করা হচ্ছে। তাছাড়া স্থায়ী বেড়িবাঁধ হলে এই বাগান সর্বত্র করা হলে পর্যটক এলাকা হিসেবে রূপ নেবে বাঁশখালীর উপকূল।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.