কল্যাণ বড়ুয়া মুক্তা, বাঁশখালী : ইয়াবা ও মাদকের ছোঁবলে আক্রান্ত হতে বসেছে বাঁশখালী। প্রতিদিন বাঁশখালীর কোথাও না কোথাও থেকে হয় ইয়াবা নতুবা দেশীয় মদ অথবা বাহির থেকে পাচার হয়ে আসা নানা ধরনের মাদক দ্রব্য। ইয়াবার নাম দীর্ঘদিন যাবৎ প্রচার হয়ে আসলেও বাঁশখালীতে ইয়াবা নামক মাদকের সন্ধান পেতে থাকে বিগত মে ২০১৫ সাল থেকে। তখন থেকেই কিছুদিন পর পর ইয়াবা উদ্ধার করে থানা পুলিশ। বারবার ইয়াবা উদ্ধার হলেও ধরা ছোয়ার বাইরে থাকে ইয়াবার সাথে সংশ্লিষ্ট রাঘববোয়ালেরা।
প্রশাসনের কঠোর নজরদারি ও ইয়াবা ব্যবসা বন্ধের জন্য ইয়াবা ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্ট একটি তালিকা করা হলেও সেটা থেকে অপ্রকাশ্য। ফলে ইয়াবা সেবনকারী এবং ইয়াবাপাচারকারী ও ইয়াবা ব্যবসার সাথে সংশ্লিষ্টরা বারবার অন্তরালে থেকে যায়। বিগত ২০১৫ সালের মে মাসে বাঁশখালী থানার নতুন অফিসার ইনচার্জ স্বপন কুমার মজুমদার বাঁশখালীতে যোগদান করেন। তিনি এর আগে কক্সবাজারে ছিলেন। ইয়াবা ব্যবসার মূল কেন্দ্রস্থল কক্সবাজার ও টেকনাফ হওয়ায় তিনি ইয়াবা ব্যবসার কিছু কলা কৌশল জানায় বাঁশখালীতে আসার পর থেকে বাঁশখালীর প্রধান সড়কে পুলিশ চেক পোষ্ট বসিয়ে গাড়ি তল্লাশীর মাধ্যমে বেশ কয়েকবার কয়েকহাজার থেকে শুরু করে শতশত পিচ ইয়াবা উদ্ধার করতে থাকে। যতবার পুলিশ চেক পোষ্ট বসিয়ে গাড়ি চেক করে ততবার কিছু না কিছু ইয়াবা উদ্ধার হতে থাকে। তা নিয়ে সর্বত্র ছড়িয়ে বাঁশখালী-পেকুয়া সড়কটি ইয়াবা ব্যবসায়ীদের নতুন রুট।
কিন্তু অজ্ঞাত কারণে বেশ কিছুদিন যাবৎ পুলিশ এই সড়কে চেক পোষ্ট বসা বন্ধ করে দিয়েছে। কিন্তু থেমে নেই ইয়াবা এবং মাদক ব্যবসায়ীরা। বাঁশখালীর পুকুরিয়া থেকে শুরু করে পৌরসভার জলদী সহ ১৪টি ইউনিয়নে কোথাও না কোথাও দেশীয় মদ এবং মাদক সেবনের অসংখ্য অভিযোগ ও উদ্ধার হতে থাকে। যার ফলে বিগত ২০১৫ সালে বাঁশখালী থানায় ৩৯৬টি মামলার মধ্যে ৬২টি মামলা ছিল মাদকের। বর্তমান নতুন বছর শুরু হলেও ইয়াবা উদ্ধার থমকে থাকলেও দেশীয় মদ ও মাদক ব্যবসায়ী আটক অভিযান অব্যাহত রয়েছে। যার ফলে চলতি বছরেও ২০ এবং ২৩ তারিখ দুইটি মাদকের বিরুদ্ধে মামলা হয়। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে বাঁশখালীর কালীপুর ইউনিয়নের জঙ্গল কালীপুর এলাকা থেকে গিয়াস উদ্দিন নামের এক মাদক এবং ইয়াবাসেবনকারীকে আটক করে পুলিশ।
ইয়াবা ও মাদক সেবনকারী গিয়াস উদ্দিনকে গ্রেফতার করতে গিয়ে আহত হওয়া রামদাশহাট পুলিশ ফাড়ির পুলিশ কনষ্টেবল মোঃ দেলোয়ার জানান, গিয়াস উদ্দিনের একটি বিশাল সিন্ডিকেট রয়েছে। যার মাধ্যমে সে কালীপুর সহ বিভিন্ন স্থানে ইয়াবা সহ এবং দেশীয় মদ স্লাপাই করে থাকে এবং এই পুলিশ কনষ্টেবলকে বেশি বাড়াবাড়ি করলেও জানে মেরে ফেলারও হুমকি দিয়েছে বলে তিনি দৈনিক আজাদীকে জানান। এদিকে বাঁশখালী পেকুয়া সড়কে বিগত দিনে উদ্ধার হওয়া ইয়াবার প্রেক্ষিতে স¤প্রতি সময় এ অভিযান বন্ধ থাকায় সাধারণ জনগণ নানা ভাবে মন্তব্য করতে শুরু করেছে। অপরদিকে ইয়াবা ও মাদকের ছোঁবলে দিন দিন আক্রান্ত হচ্ছে বাঁশখালীর সর্বত্র। বিশেষ করে ইয়াবা সেবনকারী অধিকাংশই হচ্ছে যুবক শ্রেণির। তারা নানা ধরনের রাজনৈতিক আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে থেকে নানা ভাবে ইয়াবা সেবন ও সর্বত্র খুচরা বিক্রির কাজ করে যাচ্ছে বলে বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে।