সেনাবাহিনী মোতায়েন নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ইসি

0

তিন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনাবাহিনী মোতায়েন নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। সেনা মোতায়ন করা হবে কি না সে বিষয়ে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারেনি কমিশন। আজ রবিবার আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীগুলোর প্রধানদের সঙ্গে ইসির বৈঠকের পর নির্বাচনে সেনা মোতায়নের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ। তিনি বলেন, আসন্ন তিন সিটি নির্বাচনে পর্যাপ্ত পুলিশ, র্যাব, বিজিবি, আনসার-ভিডিপি মোতায়েন থাকবে। আইন-শৃঙ্খলা বৈঠকে বিভিন্ন বাহিনীর দেয়া মতামতের আলোকে পরিস্থিতি অনুযায়ী সেনা মোতায়েনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

নির্বাচনে সেনা মোতায়েন নিয়ে নির্বাচন কমিশনারদের মধ্যে পক্ষে-বিপক্ষে মত রয়েছে। রাজনৈতিক দলও এ ব্যাপারে বিভক্ত। বরাবরের মতো এবারও বিরোধী দল সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে। বিএনপি এখন সেনা মোতায়েনের জোর দাবি জানাচ্ছে। অথচ সেনা মোতায়েনের জন্য তাদের আমলে উচ্চ আদালতে রিট করতে হয়েছিল তত্কালীন বিরোধী দল আওয়ামী লীগের। আওয়ামী লীগ প্রার্থীর রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিএনপি সরকারের আমলে অনুষ্ঠিত চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়ন করতে হয়েছিল। এর ধারাবাহিকতায় চট্টগ্রামের গত নির্বাচনেও সেনা মোতায়েন করতে হয়। তবে সর্বশেষ ৮টি সিটি নির্বাচন সেনা মোতায়েন ছাড়াই অনুষ্ঠিত হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সমর্থিত সহস্র নাগরিক কমিটি বলছে, সিটি নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের যৌক্তিকতা নেই। গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটির আহ্বায়ক সৈয়দ শামসুল হক এ কথা বলেন। অন্যদিকে বিএনপি সমর্থিত আদর্শ ঢাকা আন্দোলন নির্বাচনের অন্তত সাতদিন আগে তিন সিটিতে সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়েছে। গতকাল চট্টগ্রামে সুজন আয়োজিত সভায়ও  সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে সেনা মোতায়েনের দাবি জানানো হয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে সিটি নির্বাচন কিভাবে সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা হবে, এ বিষয়ে আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তা, নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং অফিসার এবং বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিনিধিদের সঙ্গে আজ বৈঠকে বসছে ইসি। পরিকল্পনা কমিশনের এনইসি সমম্মেলন কক্ষে বেলা ১১টায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
ইসির কর্মকর্তারা জানান, যেকোন নির্বাচনের আগে আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে ভোটগ্রহণ উপযোগী পরিবেশ বিরাজ করছে কিনা, ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের নিরাপত্তা, সেনাবাহিনী মোতায়েনের যৌক্তিকতা এবং ভোটারদের নিরাপত্তাসহ সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়। এ বৈঠকের পর্যালোচনা নিয়ে কমিশন নিজেদের মধ্যে আরেকটি সভা করে নির্বাচনের নিরাপত্তা নিশ্চিতের স্বার্থে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়।

বৈঠক উপলক্ষে প্রস্তুতকৃত কার্যপত্রে দেখা গেছে, আগামী ২৮ এপ্রিল অনুষ্ঠেয় ভোটগ্রহণ উপলক্ষে চার স্তরের নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবে প্রায় ৬৫ হাজার বিভিন্ন বাহিনীর ফোর্স। নির্বাচনে সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ২২ জন ও ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ২৪ জন করে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে।  এ বিবেচনায় ২ হাজার ৭শ’ ভোটকেন্দ্রে প্রায় ৬২ হাজার নিরাপত্তা রক্ষী নিয়োগ করতে হবে ইসিকে। এছাড়া তিন সিটির প্রতি সাধারণ ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে পুলিশ, আনসার ও ব্যাটালিয়ন আনসারের সমন্বয়ে একটি করে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স থাকবে। সেই সঙ্গে ভোটকেন্দ্র বিবেচনায় ২২ প্লাটুন বিজিবি, ৭ প্লাটুন কোস্ট গার্ড ও র্যাবের ৬৮টি টিম কাজ করবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.