প্রয়োজন হলে সেনা মোতায়েন- সিইসি

0

 

সিটিনিউজবিডি :রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রবিবার দুপুরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ বলেছেন, ‘ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা মোতায়েনের ব্যাপারে দুই একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
সিইসি বলেন, ‘ভোটকেন্দ্রে যদি কেউ বলপ্রয়োগ করে তাহলে দ্বিগুণ বলপ্রয়োগ করে তাদের প্রতিহত করা হবে।’

রকিব বলেন, ‘আমরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দাদের কাছে সার্বিক পরিস্থিতি জেনেছি। তারা বলেছেন, এখন পর্যন্ত সার্বিক পরিস্থিতি ভালো রয়েছে। তারপরও আমরা পর্যবেক্ষণ করে সেনা মোতায়েনের বিষয়ে দুই একদিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত নেব।

তিনি বলেন, ঢাকা উত্তর-দক্ষিণ ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনকে আমরা গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছি। সে কারণে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। যাতে সমস্ত ভোটার নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন।

তিনি বলেন, আমরা বৈঠকে রিটার্নিং অফিসার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিদের কথা শুনেছি। এখন কমিশন বসে সিদ্ধান্ত নেবে, কি ধরনের ফোর্স আমরা মোতায়েন করব।

প্রয়োজন হলে সেনা মোতায়েন

তিনি বলেন, ‘আমরা খুব সতর্কতার সঙ্গে সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করছি। গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে কমিশনে বসে সেনা মোতায়েন করা হবে কিনা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। প্রয়োজন হলে অবশ্যই সেনা মোতায়েন করা হবে।

কাউকে কোনো চান্স দেব না

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোতায়েনের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতিনিধিরা কি মত দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ওই রকমভাবে তো আলোচনা হয় না। তবে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও আইনশৃঙ্খলার প্রতিনিধিরা বলছেন, এ পর্যন্ত সার্বিক অবস্থা সুষ্ঠু রয়েছে। তারপরও তাদের বলেছি, আপনারা খেয়াল রাখেন- এ পরিবেশ ঝড়ের আগে থমথমে অবস্থা কিনা। আমরা কাউকে কোনো চান্স দেব না।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয় কয়েকদিন আগে। আমাদের হাতে সময় আছে। কাল-পরশু অথবা তার পর দিন সিদ্ধান্ত নেব।

তিনি জানান, ‘বৈঠকে তাদের বলে রাখা হয়েছে- তারা যেন প্রস্তুত থাকে। আমরা তাদের ডাক দিলে বুঝেশুনেই দেব।’

লিখিতভাবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করতে হবে

রকিবউদ্দিন বলেন, ‘গণমাধ্যম ও প্রার্থীদের মাধ্যমে জানতে পারছি নির্বাচনে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। আমি আগেও বলেছি, এখনো বলছি, আচরণবিধি লঙ্ঘনে ঢালাও অভিযোগ করে লাভ নেই। লিখিতভাবে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করতে হবে। তাহলে আমরা অবশ্যই প্রতিটি অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।

গণমাধ্যমের সংবাদ আমলে নেওয়ার নির্দেশ

গণমাধ্যমের উদ্দেশে বলেন, ‘আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে রিটার্নিং অফিসাররা প্রতিদিনই প্রার্থীদের সতর্ক ও জরিমানা করছেন। এগুলো আপনারা গণমাধ্যমে প্রকাশ করে জাতির সামনে উপস্থাপন করুন।

তিনি বলেন, ‘আমরা মেয়র প্রার্থীদেরকেও সতর্ক করেছি। তারা ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। এ ধনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হলে আমরা শাস্তির ব্যবস্থা করব।

তিনি বলেন, ‘গণমাধ্যমে প্রকাশ সংবাদ আমলে নিয়ে রিটার্নিং অফিসারকে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’

সেনা মোতায়েন সিদ্ধান্ত র‌্যাবের নয়

এক প্রশ্নের জবাবে রকিবউদ্দিন বলেন, ‘সেনাবাহিনী মোতায়েনের প্রয়োজন আছে কিনা- এটা র‌্যাবের বিবেচনার বিষয় নয়। এ সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন। আমরা তাদের কাছ থেকে সার্বিক পরিস্থিতি বিষয়ে শুনেছি মাত্র।

দ্বিগুণ বল প্রয়োগ করে প্রতিরোধ

সিইসি বলেন, শুধু প্রার্থীদের কথা নয়, আমাদের ভোটারদের কথা চিন্তা করতে হবে। প্রার্থীদের সংখ্যাতো কম। ভোটারের সংখ্যা বেশি। তাই তারা যাতে নির্বিঘ্নে ভোটকেন্দ্রে আসতে ও যেতে পারেন সে ব্যবস্থা করতে হবে।

তিনি জানান, নির্বাচনের পরেও সহিংসতা ঘটে। এমন ঘটনা যাতে না ঘটে সে জন্য স্বরাষ্ট মন্ত্রণালয় ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সতর্ক থাকতে বলেছি।

সিইসি বলেন, আমরা এও বলেছি, কোনো ভোটকেন্দ্রে যাতে অহেতুক ঘটনা না ঘটে সে জন্য সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিতে। কেউ যদি বলপ্রয়োগ করে, তাকে দ্বিগুণ বলপ্রয়োগ করে প্রতিরোধ করতে হবে।

তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আস্বস্ত করেছে, যতসংখ্যক লোক ও আর্মস দেওয়ার কথা তার চেয়ে তাদের সক্ষমতা এখন অনেক বেশি। তাদের বলা হয়েছে- বেশি জিনিস দিলেই হবে না। ইফেকটিভ করতে হবে।

এরশাদ আচরণবিধি লঙ্ঘনের ঊর্ধ্বে নয়

জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ আচরণবিধির ঊর্ধ্বে কিনা জানতে জানতে চাইলে সিইসি বলেন, ‘আচরণবিধিতে বাংলায় স্পষ্টভাবে লেখা রয়েছে মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, স্পিকার ডেপুটি ও তাদের সমমর্যাদর সুবিধাভোগী কোনো ব্যক্তি নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। যারা বিধির আওতায় পড়বেন- তারা প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না। যারা আওতায় পড়বেন না, তারা নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন।

তিনি বলেন, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের ‘বিশেষ দূত’ এর পদটি মন্ত্রীর সমমর্যাদার। তিনি এ পদে থেকে সরকারি সকল সুবিধা ভোগ করে আসছেন।

ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের তথ্য সংগ্রহ

এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের সংখ্যা বাড়ছে না। গোয়েন্দা সংস্থাকে বলেছি ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে। তারা তথ্য পেলে আমাদের জানাবে।

এর আগে, সিইসি আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধান ও প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। আগামী ২৮ এপ্রিল তিন সিটিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.