আন্দোলনের নামে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তি ধ্বংস নয় : ভারতের সুপ্রিম কোর্ট

0

আন্তর্জাতিক ডেস্কঃ রাজনৈতিক দলের বিক্ষোভ থেকে নাগরিক আন্দোলনের নামে সাধারণ সম্পত্তি ধ্বংস বন্ধ করতে পদক্ষেপ নিতে চলেছে ভারতের সর্বোচ্চ আদালত, নির্দেশ অমান্যে দিতে হতে পারে জরিমানাও।

একটি আবেদনের শুনানিতে বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ভারতের সুপ্রিম কোর্টের এই বক্তব্য আসে বলে ভারতের বিভিন্ন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।

সম্পদ ধ্বংসের চেষ্টা কঠোরভাবে দমনের পাশাপাশি এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ আদায় করার কথাও বলেছে প্রতিবেশি দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।

শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা স্পষ্ট জানান, এ ধরনের ঘটনা বরদাশত করা যায় না। যারা এভাবে দেশের সম্পত্তি নষ্ট করছে, তাদের শাস্তি দিতে নির্দেশিকা তৈরি করা হবে বলেও আশ্বাস দিয়েছেন বিচারপতিরা।

দিন কয়েক আগেই জাঠদের আন্দোলনে উত্তাল হয়েছিল হরিয়ানা। ভারতের ব্যবসায়ী সংগঠনের মতে, এই আন্দোলনে অন্তত ৩৪ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি নষ্ট হয়।

ভারতীয় উপমহাদেশে রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা হরহামেশাই ঘটে। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। গেল বছরে বাংলাদেশে রাজনৈতিক সহিংসতার বলি হয়েছেন নিরীহ মানুষ। যানবাহনগুলো ককটেল ও পেট্রল বোমা নিক্ষেপ করেছেন কথিত দুর্বৃত্তরা।

গত বছর পেট্রল বোমায় দগ্ধ মানুষের আর্তনাদে ভারী হয়েছিল বাংলাদেশ। হাসপাতালগুলোর বার্ন ইউনিটে পোড়া মানুষের চিৎকারে ভরে গিয়েছিল। দগ্ধ মানুষের কাছে সমবেদনা জানাতে গিয়ে কেঁদেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

২০১৪ সালের নির্বাচনের আগে বাংলাদেশে সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচির কারণে অর্থনীতির ১১ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয় বলে বিশ্ব ব্যাংকের এক হিসাবে বলা হয়।

এর আগে গুজরাতেও প্যাটেল সম্প্রদায়ের সংরক্ষণ আন্দোলনের হিংসাতেও পুড়িয়ে দেয়া হয়েছিল গাড়ি, ভাঙচুর হয়েছিল দোকান-পাট থেকে সরকারি দপ্তরেও।

হিসাংত্মক আন্দোলনের নামে এভাবে ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগের ঘটনায় প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ ভারতের সুপ্রিম কোর্ট। গুজরাতে সংরক্ষণ আন্দোলনের নেতা হার্দিক প্যাটেলের দায়ের করা এক আবেদনের প্রেক্ষিতে বুধবার শীর্ষ আদালত সাফ জানিয়েছে, ‘আন্দোলনের নামে হিংসার এই বাড়াবাড়ি এবার বন্ধ করতে হবে। আন্দোলন চলাকালীন কোনো ধরনের সম্পত্তি নষ্ট করা যাবে না।’এ জন্য একটি নির্দেশিকাও তৈরি করা হবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।

জরিমানাও ধার্য করা যায় কি না তা নিয়ে চিন্তাভাবনা হচ্ছে বলেও জানানো হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি জে এস খেহারের নেতৃত্বাধিন বেঞ্চের মতে, ‘বিজেপি হোক বা কংগ্রেস অথবা অন্য কোনো মানুষ— সকলেরই বোঝা উচিত বিক্ষোভ আন্দোলনের নামে কোনো ধরনের সম্পত্তি নষ্ট করা যায় না।’

হরতাল-অবরোধে নাশকতা বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশের হাইকোর্টও ২০১৫ সালে একটি আদেশে সরকারকে এ সংক্রান্ত নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.