নজরুল ইসলাম,পটিয়া(চট্টগ্রাম) : পটিয়ায় পুণারায় প্রকাশ্যে চলছে পাহাড় কাটা। উপজেলার দক্ষিণ ভূর্ষি ইউনিয়নের ডেঙ্গাপাড়া গ্রামের এক সৌদি প্রবাসী পোল্ট্রি ও কৃষি খামার তৈরির নামে গত এক সপ্তাহ ধরে প্রকাশ্যে পাহাড় কাটা শুরু করেছে। অভিযোগ ওঠেছে, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রামের একশ্রেণীর অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে প্রবাসী এই পাহাড় কাটছে। গত রবিবার উপজেলা সহকারী কর্মকর্তা (ভুমি) ও নিবার্হী ম্যাজিষ্ট্রেট গৌতম বাড়ৈর নির্দেশে ধলঘাট ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা ধীমান বড়–য়া পাহাড় কাটা বন্ধ করে দিয়েছে।
পাহাড় কাটার ড্রেজারটি সমতল ভুমিতে নামিয়ে রাখলেও আইনগত কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রকাশ্যে ও গোপনে পাহাড় কাটার ফলে পরিবেশের ভারসাম্য হারাচ্ছে। ইতোপূর্বে ওই এলাকায় পাহাড় কেটে প্লট তৈরি করে বিক্রীর দায়ে শামীম রিয়েল এস্টেটের মালিক মোহাম্মদ শামীমের বিরুদ্ধে পরিবেশ অধিদপ্তর মামলাও করেন। এদিকে, পরিবেশ অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় প্রভাবশালীদের ম্যানেজ করে পাহাড় কাটার কারণে পরিবেশবাদীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার কেশিলশহর ইউনিয়নের খিল্লপাড়া এলাকার শামীম রিয়েল এস্টেটের পাশে সৌদি প্রবাসী হাজী হারুনুর রশিদ চৌধুরী ‘আল হেরামাইন ডেইরী ফিস পোল্ট্রি এন্ড কৃষি খামার তৈরির নামে পাহাড় কাটা শুরু করে।
খামারের তত্ত্বাবধায়ক নাজিম উদ্দিন ঘটনাস্থলে জানিয়েছেন, তার চাচা হারুনুর রশিদ প্রবাসে থাকলেও উপজেলা প্রশাসন থেকে অনুমতি নিয়েছেন এবং পরিবেশ অধিদপ্তরে আবেদন করেছেন। তবে পরিবেশ অধিদপ্তর এখনো অনুমতি দেননি। ২০০১ সালে পটিয়া সদরের হামিদুর রহমান ও তার ওয়ারিশদের কাছ থেকে এসব পাহাড়ি ভুমি খরিদ করে।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, শুরুতে পাহাড়ের সমতল ভুমিতে ড্রেজার দিয়ে একটি পুকুর কাটেন। পরবর্তীতে পরিবেশ অধিদপ্তর ও প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তিকে ম্যানেজ করে পাহাড় কাটা শুরু করে। স্থানীয় কেলিশহর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন মাস্টার বলেন, প্রবাসী হারুন খিল্লাপাড়া পাড়া এলাকায় সম্ভবত ১৭ একর পাহাড়ি ও সমতল ভুমি খরিদ করেছেন। তবে পাহাড় কাটার বিষয়টি আমি অবগত নই। সহকারী কমিশনার (ভুমি) ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট গৌতম বাড়ৈ বলেন, পাহাড় কাটার বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে তা বন্ধ করার জন্য সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভুমি সহকারী কর্মকর্তা ধীমান বড়–য়াকে নির্দেশ দেন।
ধীমান বডুয়া বলেন, খিল্লাপাড়া এলাকায় পাহাড় কাটার খবর পেয়ে তিনি ছুটে গেছেন। ওই সময় মাটি কাটার একটি ড্রেজার পাহাড় থেকে নামিয়ে সমতল ভুমিতে রাখা হয়। এ ছাড়াও গত ১৫দিন পূর্বে হাইঁগাও ইউনিয়নে পূর্ব পাহাড়ে পৌর কমিশনার জনাব নজরুল ইসলামের ভাই কামরুল ইসলাম পাহাড়ের ডালুতে মাটি কেটে মাছের প্রজেক্ট নির্মাণের সংবাদ দৈনিক জনতায় প্রকাশিত হলে পটিয়া থানার ওসি রেফাউল্লাহ চৌধুরী ড্রেজারের চাবি নিয়ে এসে কাজ বন্ধ করে দেয়। পরে কামরুল গং মোটা অংকের টাকা দিয়ে প্রশাসনকে পুর্ণরায় মাটি কেটে বিক্রি করে চলছে। এ প্রসঙ্গে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম বিভাগের পরিচালক মকবুল হোসেন বলেন, পাহাড় কাটার ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে অনুমতি দেওয়ার প্রশ্ন আসেনা। বিষয়টি খতিয়ে দেখে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।