জুবায়ের সিদ্দিকী : নব নির্বাচিত মেয়র আ.জ.ম. নাছির উদ্দিন ঘোষনা করেছেন, চসিক এর ভেতর কোন অনিয়ম দুর্নীতি বরদাশ করা হবেনা। অতীতে যারা লুটপাটে লিপ্ত ছিলেন তাদের ব্যাপারে আমার কাছে তথ্য আছে। তাদেরকে ছাড় দেয়া হবেনা। কে কার আত্নীয়-আপনজন তা আমার কাছে বিবেচ্য নয়। আমি কঠোর হস্তে প্রশাসন চালাতে চাই। নব নির্বাচিত নগর পিতা জানিয়েছেন চট্টগ্রাম নগরী হবে গ্রীন সিটি, ক্লিন সিটি, যেদিকে দেখা যাবে শুধু সুন্দরের ছরাছড়ি থাকলে আর নগর বাসীর সহযোগীতা দিয়ে গড়ে তুলব ক্লিন সিটি। মেয়র নাছির জানিয়েছেন আমি শপথ নেয়ার পর পরেই চসিককে জানিয়ে দিয়েছি কোথাও ময়লা-আবর্জনা যেন চোখে না পড়ে। তারা যেভাবে কাজ শুরু করেছে। কোন গাফলতি সহ্য করা হবে না। যে যত বেতন পান, সেটা নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হবে বাড়তি আয়ের চিন্তা কেউ করবেন না। নির্দিষ্ট বেতনে কারও না পোষালে চাকরি ছেড়ে চলে যান। কত টাকা বেতন হবে সেটা মেনেই তো চাকরীতে আছেন, তাহলে বাড়তি দরকার কি? মেয়র বলেছেন এখন থেকে আমি কোন দলের নই। চসিকের ষাটলাখ মানুষের সেবক। দলমত নির্বিশেষে সবার সহযোগীতা নিয়ে চট্টগ্রাম উন্নয়নে কাজ করতে চায়। এজন্য প্রতিটি ওয়ার্ডের বিশিষ্ট শ্রমিকদের নিয়ে কর্মপরিকল্পনা তৈরী করা হবে। সবাইকে নিয়ে চট্টগ্রামকে স্বপ্নের মেগাসিটি গড়ে তুলতে চাই। আ.জ.ম নাছির গত ২৮ এপ্রিল সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচনে ১,৭০,৫২৮ ভোট বেশী পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন। বিএনপির নির্বাচন বর্জনের প্রসঙ্গটি উত্তাপন করা হলে নাছির বলেন কোন প্রার্থী নির্বাচনের মাঝপথে সরে যাওয়ার আইনগত ভিত্তি নেই। বর্জনের পরও যদি ঐ প্রাথী ভোট বেশি পেতেন তাহলে নির্বাচন কমিশন তাকে বিজয়ী ঘোষনা করত তখন কি তিনি মঞ্জুর আলম ফলাফল প্রত্যাখান করতেন? নিশ্চয় করতেন না।
তিনি বলেছেন, বিএনপি নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা করা আমাকে অসস্তি করেছে। আমার পক্ষে যারা কাজ করেছিলেন। তাদের মধ্যে গাছাড়া ভাব চলে আসে। কেউ কেউ বাসায় চলেযান এতে করে আমার ভোট কম নষ্ট হয়েছে। অন্যদিকে তিনি (মনজুর) বর্জনের ঘোষনা দিলেও তার দলীয় ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থীরা সবাই ছিলেন। তারা ভোটের জন্য লড়েছেন অথচ আমার কর্মিরা মাঠে থাকলে আরও বেশী ভোট পেতাম। নির্বাচন বর্জনের ঘোষনা ছিল বিএনপির আইওয়াশ। নির্বানে কোন কাহিনী হয়নি নগরীর করুনদশায় হতাশ প্রকাশ করে নাছির বলেন, নির্বাচনে না দাঁড়ালে চট্টগ্রামের এত সমস্যার চিত্র আমার চোখে পড়তনা। অনেক কিছু জনতেও পারতাম না। কারন অনেক ওয়ার্ডে রাস্তা পর্যন্ত নেই। কিছু ওয়ার্ডে একবার বৃষ্টি হলে ওই পানি দশ পনের দিনেও কমেনা। বস্তি ও ঘনবসতি এলাকায় নাগরিক সুবিধা নেই। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নেই বিশুদ্ধ পানি ও গ্যাস নেই অনেক এলাকায়।
তিনি বলেন, সস্তা জনপ্রিয়তা পাওয়ার কোন মানসিকতা আমার নেই।কর্মপরিকল্পনা সর্ম্পকে নাছির বলেছেন, ৪১টি ওয়ার্ডের গন্যমান্য ব্যাক্তি, সমাজসেবক ও ব্যবসায়ীদের সবার মধ্যে আলোচনা করব। সব ওয়ার্ডের সমস্যা এক নয়। এরপর ঐক্য মতের ভিত্তিতে ওয়ার্ডেও সমস্যা গুলো চিহ্নিত করে সমাধানের উদ্ধেগ নেব। নগরবাসীর দীর্ঘদিনের চরম ভোগান্তি থেকে জলাব্দতাকে সর্বোচ্চ প্রাধান্য দিয়ে কাজ করব, ইনশাল্লাহ।
এটা সমাধানের সময় লাগবে। কারন বর্ষা এসে গেছে । তাছাড়া দায়িত্ব গ্রহণে দেরী হচ্ছে তাহলে এবার কাঙ্কিত কিছু করতে পারব না। আর নগররে নালা নর্দমা গুলো খনন ও প্রশস্ততা বাড়াতে হবে। কিছু খাল থেকে অবৈধ দখলদারকে উচ্ছেদ করতে হবে। এ জন্য একটি প্রকল্প গ্রহন করা হবে। নাছির বলেছেন ১৯৯৫সালের ২০ বছর মেয়াদী ড্রেনেজ মাষ্টার প্ল্যান করেছে। অতীতে রহস্যজনক কারণে এই মাষ্টার প্ল্যানে কেউ হাত দেয়নি। এবং এইটা কে যুগোপযোগী করে বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া নির্বাচনের আগে আমি যতগুলো প্রতিশ্রুতি দিয়েছি, তার সবগুলো বাস্তবায়ন করব।
চট্টগ্রাম শহরেই আদি নিবাস আ.জ.ম. নাছিরের। তার বাবা মরহুম ছৈয়দ মঈনুদ্দিন হোসাইন ও দাদা মরহুম হাফেজ মৌলভী মোহাম্মদ শামসুদ্দিন আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদে অবৈতনিক পেশ ইমাম ও খতিব ছিলেন। নাছিরের শৈশব, কৈশর ও পরবর্তী দিন গুলো চট্টগ্রামে কেটেছে ।