মো. শহিদ (চট্টগ্রাম): চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের জের ধরে প্রধান দুই রাজনৈতিক দল আওয়ামীলীগও বিএনপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল বাড়ার আশংকা করছেন সাধারণ নেতাকর্মীরা। দুই দলের শীর্ষস্থানীয় নেতাদের মধ্যে দীর্ঘ দিন ধরে অভ্যন্তরীণ কোন্দল চলে আসছিল প্রকাশ্যে। সিটি নিবার্চনকে ঘিরে এটি রূপ নেয় অগ্নিগিরির মত। তবে দলীয় হাইকমান্ডের নির্দেশে ঐক্যবদ্ধ হলেও সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে সদ্য অনুষ্টিত সিটি কর্পোরেশন নিবার্চনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আ জ ম নাছির উদ্দিনের পক্ষে দলের নগর কমিটির সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরীর, সহ-সভাপতি ডা: আফসারুল আমিন এমপি, সিডি এর চেয়ারম্যান আবদুচ সালাম অনুসারীদের একটি বড় অংশ কাজ করেনি। অন্যদিকে এককই অবস্থা ২০ দলীয় জোটের মধ্যে। বিএনপি সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এম মনজুর আলমের পক্ষে বিএনপির শীর্ষ নেতারা মাঠে নামলেও তারা জোরালো ভাবে কাজ করেনি বলে অভিযোগ মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের। আর একারণে ২৮ এপ্রিল ভোটের দিন নির্বাচন বর্জনের পাশাপাশি রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন সাবেক মেয়র ও বিএনপির চেয়ারপাসনের উপদেষ্ঠা এম মনজুর আলম। ফলে নির্বাচনের পর আওয়ামীলীগও বিএনপির মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল বাড়ার আশংকা নিয়ে সাধারণ নেতাকর্মীদের মধ্যে নানা কানাঘুষা চলছে। জানাগেছে, চসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে মেয়র পদে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন সাবেক মেয়র ও মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন এবং সিডিএ চেয়ারম্যান ও মহানগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম। কিন্তুু প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা নিজেই সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনকে মনোনয়ন দেন। সহ-সভাপতি ডা: আফসারুল আমিন এমপি মেয়র পদে মনোনয়ন না চাইলেও নাছিরের সঙ্গে দীর্ঘ দিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল বলে তার অনুসারিরা জানান। মূলত এই কারণে নিবার্চনে মাঠ থেকে নিজেকে দূরে রেখেছেন তিনি। তবে দলীয় মনোনয়ন নিয়ে নিজের অনুসারীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি হলেও মহিউদ্দিন চৌধুরী আ জ ম নাছির উদ্দিনের মনোনয়নপত্র দাখিলসহ তাঁর নির্বাচনী প্রচার – প্রচারণায় অংশগ্রহণ করেন। দল থেকে অপর মনোনয়ন প্রত্যাশী আবদুচ ছালামও আ জ ম নাছির উদ্দিনের পক্ষে সমানে প্রচারণা চালান। অন্যদিকে বিএনপি থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন সাবেক মেয়র এম মনজুর আলম ও মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ডা. শাহাদাত হোসেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত দল থেকে মনোনয়ন পান এম মনজুর আলম। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিবাদ সভা ও বিক্ষোভ মিছিল করেন ডা. শাহাদাত হোসেন অনুসারীরা। এই কারণে মামলার অজুহাত দেখিয়ে শাহাদাতসহ তার অনুসারীরা নিবার্চনী প্রচারণা থেকে দূরে ছিলেন। তবে প্রচারণার শেষ দিকে বিএনপি চেয়ারপাসনের নির্দেশে বাকলিয়ায় তিনি কর্মী-সমর্থক নিয়ে কয়েক ঘন্টার জন্য মাঠে নামলেও আর দেখা মেলেনি তার। চসিক নির্বাচনে প্রচার-প্রচারণায় মেয়র পদে মনোনয়ন প্রত্যাশী সকলে স্ব-স্ব দলের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করলেও রাজনৈতিক ময়দানে এ নিয়ে চলে নানা গুঞ্জন। নির্বাচনের পরও গুঞ্জনের ডালপালা আরো বিস্তৃত হচ্ছে। এক গ্রুপ আরেক গ্রুপের বিরুদ্ধে নানা কটুবাক্যে আক্রমণ করছে। এ কারণে দুইদলের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ কোন্দল ক্রমশ বাড়ছে। আর এই কোন্দাল বড় আকারে রূপ নেয়া আশংকা করছেন সাধারণ নেতাকর্মী।
এ বিভাগের আরও খবর