২৮ বন্দী শিবিরের কাছে ১৩৯ গণকবর -মালয়েশিয়া সীমান্ত

0

মালয়েশিয়ায় মানব পাচারকারীদের ২৮টি বন্দী শিবিরে কাছাকাছি জায়গায় ১৩৯টি গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেছে। মালয়েশিয়া পুলিশের মহাপরিদর্শক খালিদ আবু বকর গতকাল জানিয়েছেন, গত দুই সপ্তাহ ধরে অভিযান চালিয়ে তার বাহিনীর সদস্যরা এসব কবর চিহ্নিত করেছেন। বিবিসি বাংলার খবরে বলা হয়, এসব কবরে সমুদ্রপথে থাইল্যান্ড হয়ে মালয়েশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হওয়া শত শত অভিবাসীর মরদেহ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

আবু বকর জানিয়েছেন, গত ১১ মে থেকে ২৩ মে পর্যন্ত পরিচালিত অভিযানে সনাক্ত হওয়া গণকবরগুলোর মধ্যে একটির অবস্থান গতমাসে থাইল্যান্ডে পাওয়া কবর থেকে মাত্র ১০০ মিটার দূরে। কবরগুলোর কোনো কোনোটিতে একাধিক দেহাবশেষ থাকতে পারে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, গত রোববার ১৭টি পরিত্যক্ত ক্যাম্পে ৩০টি গণকবরের সন্ধান পাওয়ার কথা জানিয়েছিলেন মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাহিদ হামিদি। এর একদিন পর গতকাল এ বিষয়ে আরও বিস্তারিত তথ্য দেন দেশটির পুলিশ প্রধান খালিদ আবু বকর। এর আগে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী নাজিব রাজাক বলেছেন, তার দেশের মাটিতে মানব পাচারকারীদের সম্পৃক্ততার অভিযোগে এ ধরনের গণকবরের বিষয়টিতে তিনি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। ফেসবুক এবং টুইটারে তিনি লিখেছেন এ বিষয়ে দায়ীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হবে।

ব্যাংকক থেকে বিবিসির সংবাদদাতা জোনাথন হেড বলছেন, মালয়েশিয়ার যেসব এলাকায় মানব পাচারকারীদের বন্দি শিবিরগুলো রয়েছে, সেখানে সেনা ও পুলিশ সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতির পরও এমন ঘটনাগুলো কিভাবে ঘটলো এবং কর্তৃপক্ষ কেন এইসব অভিবাসন প্রত্যাশী মানুষদের জীবন রক্ষায় আগেই কোনও ব্যবস্থা নেয়নি সে প্রশ্নটিই মুখ্য হয়ে উঠেছে। বিবিসির এক অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে দেখা গেছে, থাইল্যান্ডের মোটামুটি সব সম্প্রদায়ই কোনও না কোনোভাবে পাচারকারীদের সহায়তা করছে।

এক মাস আগে থাইল্যান্ডের শংখলা প্রদেশের পাহাড়ি এলাকায় পাচারকারীদের ক্যাম্পে একটি গণকবরে ২৬টি দেহাবশেষ পাওয়ার পরই সাগরপথে মানব পাচারের বিষয়টি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন করে আলোচনায় আসে। ধারণা করা হয়, বিভিন্ন স্থান থেকে অভিবাসন প্রত্যাশীদের নৌকায় করে প্রথমে আনা হয় থাইল্যান্ডে। সেখানে জঙ্গলের মধ্যে পাচারকারীদের বিভিন্ন ক্যাম্পে তাদের রাখা হয়। পরে সময় সুযোগ মতো তাদের আবার নৌকায় করে অথবা স্থলপথে মালয়েশিয়া বা ইন্দোনেশিয়ায় পাঠানো হয়।আর এক্ষেত্রে শংখলা প্রদেশ ও পেদাং বেসারের ওই দুর্গম এলাকা পাচারকারীদের একটি রুট হিসাবে ব্যবহৃত হয় বলে বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা ও গণমাধ্যমের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। থাইল্যান্ডের জঙ্গলে গণকবর পাওয়ার পর মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ড উপকূলে সাগরে ভাসমান অবস্থায় পাচারকারীদের কয়েকটি নৌকা থেকে তিন হাজারের বেশি মানুষকে উদ্ধার করা হয়, যারা বাংলাদেশি ও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা বলে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের তথ্য। এই পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপে পাচারকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান জোরদার করে সংশ্লিষ্ট তিন দেশ। মালয়েশিয়ার পুলিশ চলতি মাসের শুরু থেকেই থাই সীমান্ত সংলগ্ন পেদাং বেসার ও ওয়াং কেলিয়ান এলাকায় পাচারকারীদের আস্তানার খোঁজ পেলেও বিষয়টি গণমাধ্যমে আসে গতকাল রোববার।

 

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.