হজ ও তাবলিগ জামায়াত নিয়ে ‘কটূক্তির’ সাত মামলায় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে জামিন দিয়ে মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত করে দিয়েছে হাই কোর্ট। গতকাল মঙ্গলবার সাতটি আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি মো. নিজামুল হক ও বিচারপতি মো. ফরিদ আহমদ শিবলীর বেঞ্চ রুলসহ এই আদেশ দেয়। তবে একই অভিযোগে ঢাকা ও গাইবান্ধার দুটি এবং চট্টগ্রামের দুটি মামলায় গ্রেপ্তার থাকায় এখনই মুক্তি পাচ্ছেন না আওয়ামী লীগের বহিষ্কৃত নেতা লতিফ। আদালতে লতিফের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার জ্যোতির্ময় বড়ুয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ এ কে এম মনিরুজ্জামান কবির। আদেশের পর জ্যোতির্ময় জানান, চলতি মাসের শুরুতে মামলা বাতিল ও জামিন চেয়ে আলাদাভাবে এসব আবেদন করা হয়েছিল। আদালত শুনানি করে ঢাকার ছয়টি ও নারায়ণগঞ্জের একটি মামলায় লতিফ সিদ্দিকীর জামিন মঞ্জুর করে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেছেন। মামলাগুলো কেন বাতিল করা হবে না– তা জানতে চেয়ে রুলও দিয়েছে আদালত। চার সপ্তাহের মধ্যে বিবাদীদের এর জবাব দিতে বলা হয়েছে। এর আগে ঢাকার হাকিম আদালত ও জজ আদালত এসব মামলায় লতিফের জামিন নাকচ করেছিল। খবর বিডিনিউজের।
হাই কোর্টের শুনানিতে লতিফের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, ফৌজদারী কার্যবিধির ১৮৮ ধারা অনুযায়ী ‘দেশের বাইরে করা অপরাধে’ দেশে মামলা করতে হলে আগে ‘সরকারের অনুমোদন’ লাগে। কিন্তু এসব মামলার ক্ষেত্রে তা নেওয়া হয়নি। যেভাবে মামলা দাখিল করা হয়েছে তাও ‘আইনসম্মত হয়নি’। তাছাড়া মামলা করতে হলে সুস্পষ্ট অভিযোগ আনার নিয়ম থাকলেও এসব মামলায় তা হয়নি বলে শুনানিতে যুক্তি দেন আইনজীবীরা। তারা বলেন, সংবিধানের ৩৫ (২) অনুচ্ছেদ অনুসারে একই অভিযোগে একাধিক মামলাও চলতে পারে না।
গত বছর সেপ্টেম্বরে যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের জ্যাকসন হাইটসের একটি হোটেলে নিউইয়র্ক টাঙ্গাইল সমিতির এক অনুষ্ঠানে হজ, তাবলিগ জামাত, প্রধানমন্ত্রীর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ও সাংবাদিকদের সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে সমালোচনার মুখে পড়েন আবদুল লতিফ সিদ্দিকী। এ ঘটনার পর আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর এই সদস্য দল থেকে বহিষ্কৃত হন। একই ঘটনায় অনুভূতিতে আঘাত ও কটূক্তির অভিযোগে আবদুল লতিফ সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় অনেকগুলো মামলা হয়। ২০১৪ সালের ২৩ নভেম্বর রাতে ভারত হয়ে দেশে ফেরেন লতিফ সিদ্দিকী। পরদিন তিনি আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাকে কারাগারে পাঠায়।