বান্দরবানে মহিলা ও শিশুসহ ৪ জনকে জবাই করে হত্যা

0

বান্দরবান জেলা শহর থেকে ৮কিলোমিটার দূরে ক্যামলংয়ের কাঠাল বাগান এলাকায় একটি বাগানের ২টি কেয়ারটেকার পরিবারের মাশিশু এবং বাবাপুত্রসহ ৪জনকে জবাই করে হত্যা করা হয়েছে। ঘাতকরা বৃহস্পতিবার রাতে এ জঘন্য হত্যাকাণ্ড ঘটায়। ঘটনাটি পরিকল্পিত ও পারিবারিক কলহের জের ধরেই সংঘটিত হয়েছে বলে পুলিশ কর্মকর্তারা গতকাল সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে উপস্থিত সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।

জানা যায়, গত বৃহস্পতিবার রাত প্রায় ৮টায় বান্দরবান সদর উপজেলার কুহালং ইউনিয়নের কাঠাল বাগান এলাকায় সাবেক বনকর্মকর্তা আবদুল মোতালেবের সেগুনবাগানের কেয়ারটেকার সৈয়দ করিমের স্ত্রী সামিরা বেগম (৩০) ও তার শিশুপুত্র সৈয়দ নুর (), বড়শ্যালক মোহাম্মদ আমিন (৪০) ও আমিনের শিশুপুত্র জুনায়েদ (১২) খুন হন। তাদের গলা কেটে হত্যা করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে এরা সবাই রোহিঙ্গা। সামিরার স্বামী সৈয়দ করিম ও আমিনের স্ত্রী এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে বলে স্থানীয়রা ধারণা করছেন। ঘটনার পর থেকে তারা পলাতক রয়েছেন। শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে পুলিশ, সেনা এবং আনসার সদস্যরা দেখতে পানমহিলাসহ ৩টি মৃতদেহ পড়ে আছে টিনের ছালার একটি ঘরের রান্নাকক্ষে। অপর একজনের মৃতদেহ পড়ে ছিল গাছতলায়। স্থানীয় কৃষক গোপাল চন্দ্র দাশ, সমির ও মনির হোসেন জানান, প্রায় ১৪ বছর ধরে সৈয়দ করিম মোতালেবের বাগানে কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করছিলেন। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে তিনি সেখানেই বসবাস করে আসছিলেন। ৩ মাস আগে স্ত্রী সামিরা বেগমের সাথে কলহের জের ধরে সৈয়দ করিম পরিবারের লোকজনকে ফেলে ওই এলাকা থেকে চলে যান। এর পর সামিরা তার শিশুপুত্রসহ একা হয়ে পড়ায় তার ভাই মো. আমিনকে স্ত্রীসহ এনে রাখেন। এরপর আমিনের দ্বিতীয় স্ত্রী মোবাইলে প্রায়ই নানাভাবে হুমকি দিত আমিন ও তার বোন সামিরাকে। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে নিহত সামিরার স্বামী ও আমিনের স্ত্রীকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত এলাকায় দেখা গেছে। স্থানীয়রা মনে করছেন, ঘাতকরাও সবাই রোহিঙ্গা।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনকালে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইমতিয়াজ আহমেদ ও ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আমির হোসেন সাংবাদিকদের জানান,পারিবারিক কলহের জের ধরেই পরিকল্পিত ভাবে এ ৪জনকে খুন করা হয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে ধারণা করা হচ্ছে। লাশগুলো উদ্ধার করে সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে ময়না তদন্তের জন্যে। তদন্ত সাপেক্ষে থানায় হত্যা মামলা রুজু করা হবে বলেও পুলিশ কর্মকর্তারা জানান।

ইউপি চেয়ারম্যান সানু প্রু মারমা বলেন, মোতালেবের সেগুনবাগানে রোহিংগাদের একটি পরিবার বহুবছর ধরেই বসবাস করত। তাদের মধ্যে পারিবারিক কলহের ঘটনাও ঘটেছে। এক সাথে ২টি শিশুসহ ৪জনকেই জবাই করে হত্যার ঘটনার মূল রহস্য তদন্তের পরই জানা যাবে বলে তিনি জানান।

এদিকে এ খুনের ঘটনার আলামত সংগ্রহ করে নিয়ে গেছেন র‌্যাব৭ এর কর্মকর্তারা। গতকাল বিকেলে চট্টগ্রাম র‌্যাব৭ এর সহকারী পুলিশ সুপার শারাফাত হোসেনের নেতৃত্বে র‌্যাবের একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এ টিমের সদস্যরা পুলিশ সুপারসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সাথেও বৈঠক করেছেন বলে পুলিশ সূত্র জানায়। তবে এখনও পর্যন্ত কোন আসামী বা সন্দেহভাজন কেউই গ্রেফতার বা আটক হয়নি।

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় এ রিপোর্ট লেখার সময় সদর থানায় মামলার প্রক্রিয়া চলছিল।

 

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.