চন্দনাইশে কোরবানীর পশুর চামড়া নিয়ে বিপাকে ব্যবসায়ীরা

0

নিজস্ব সংবাদদাতা, চন্দনাইশ : অন্যান্য বছরের চেয়ে চলতি বছর কোরবানীর পশুর চামড়ার দাম কমে যাওয়ায় এবং ঢাকা থেকে লবনযুক্ত পশুর চামড়ার দর নির্ধারণ করে দেওয়ায় কোরবানী পশুর চামড়া খুব কম দামে বিক্রি হয়েছে। তাছাড়া পশুর চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

সরকার কোরবানীর লবণযুক্ত গরুর চামড়ার দর প্রতি বর্গফুট ঢাকায় ৫০ টাকা, ঢাকার বাইরে ৪০ টাকা, মহিষের লবণযুক্ত চামড়া মাত্র ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। খাসির চামড়া মাত্র ২০ টাকা নির্ধারণ করা হলেও বিক্রয় হয়নি কোথাও। অথচ গত বছর প্রতি বর্গফুট লবণযুক্ত ৫০ থেকে ৫৫ টাকা ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা নির্ধারণ ছিল। চলতি মোসুমে লবনের দাম বৃদ্ধি পাওয়ার পাশাপাশি গত বছরের চামড়া রপ্তানি না হওয়ায় চামড়ার উপর বিপর্যয় নেমে এসেছে। আর্ন্তজাতিক বাজারেও চামড়ার দাম কমে যাওয়ায় বিপর্যয় এসেছে কোরবানী পশুর চামড়ার উপরে। ফলে ন্যায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হয়েছেন কোরবানী দাতারা। ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে চামড়ার টাকার সুবিধাভোগী এতিম, অসহায়, দুঃস্থ ব্যক্তি ও ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান সমূহ।
এদিকে, গরমের কারণে পশু জবায়ের ৮/১০ ঘন্টার মধ্যে পশুর চামড়ায় লবন না দিলে চামড়ার মান নষ্ট হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা ছিল।
এক তথ্য সূত্রে জানা যায়, বৃহত্তর চট্টগ্রামে ৪ লক্ষ গরু. দেড় লক্ষ ছাগল, ১২ হাজারের বেশী মহিশের চামড়া পাওয়া যায়। চলতি বছর লবনের দাম বেড়ে যাওয়ায় একটি গরুর চামড়ায় ২ শ টাকা অধিক লবণের জন্য দেয়া হচ্ছে। লবণযুক্ত করার পরই বেধে দেয়া দরে চামড়া বিক্রি করে থাকে ট্রেনারীরা।
সংশ্লিষ্টদের মতে, গত বছরের তুলনায় এবার হ্রাসকৃত দাম নির্ধারণের কারণে কোরবানী দাতারা চামড়ার ন্যায্য মূল্যে হতে বঞ্চিত হয়েছেন। তাছাড়া ঢাকায় ট্রেনারীগুলোকে গত বছরের বিক্রিত চামড়া এখনও রয়েছে। ফলে চামড়া নিয়ে বিপাকে পড়েছে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা।
সাধারণত গরু মহিষের চামড়া তিন ধরণের হয়ে থাকে। নাগরা সোল (লম্বা চামড়া), চীনা চামড়া, কুরুম চামড়া। একইভাবে ছাগল ও বেড়ার চামড়াও তিন রকমের- স্টার, হেক্তি ও মেল চামড়া। লবণ দিয়ে রোধে শুকানো, হিমাগারে সংরক্ষণ এ তিন পদ্ধতিতে চামড়া সংরক্ষণ করা যায়। তবে লবণ দিয়ে রোধে শুকিয়ে সহজভাবে চামড়া সংরক্ষণ করা যায়। চামড়ার ধরণ বুঝে গরু ও মহিষের চামড়াতে ৩/৫ কেজি লবণ লাগাতে হয়। সারাদেশে চামড়া সংরক্ষণের জন্য বড় ট্রেনারীগুলোতে একটি করে হিমাগার থাকে। সেখানে চামড়া সংরক্ষণ করা হয়। সংরক্ষণের প্রধান কারণ পরবর্তীতে চামড়া বেশী দামে বিক্রি করা। কীটনাশক বা ব্যাকটেরিয়া প্রতিরোধক রাসায়নিক পদার্থ লবণের সাথে মিশিয়ে দিয়ে চামড়ার গুণগত মান রক্ষা করতে হয়।
চন্দনাইশে হাশিমপুর এবং পৌর এলাকায় ১৫ জনের অধিক চামড়া ব্যবসায়ী রয়েছে। এদের কাছে ৭ হাজারের অধিক গরু মহিষের বিভিন্ন সাইজের কোরবানীর পশুর চামড়া রয়েছে। ইতিমধ্যে চামড়ায় লবণ দিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন, মনির, দেলোয়ার, এবং বখতিয়ার।তারা জানালেন ৫ শ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত চামড়া ক্রয় করেছেন সে সাথে ২ থেকে ৩শ টাকার লবণ দিয়ে চামড়াকে সংরক্ষণ করা হয়েছে। তবে এ পর্যন্ত ট্রেনারী থেকে কোন ক্রেতা না আসায় তারা চামড়া নিয়ে বিপাকে রয়েছেন বলে জানান। এ ব্যাপারে তারা সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.