রাঙ্গামাটিতে ভবন ধ্বসে চন্দনাইশের ২ শিশুর মৃত্যু

0

মো. দেলোয়ার হোসেন, চন্দনাইশ : উপজেলার বৈলতলীর হাফেজ মো. রফিক উদ্দিন ভুইয়ার ২ শিশু সন্তানের রাঙ্গামাটিতে ভবন ধ্বসে অকাল মৃত্যু হয়েছে। আজ ৫ অক্টোবর বিকাল পাঁচটায় ২৪ ঘন্টার ব্যবধানে দুই শিশুকে বৈলতলীস্থ তাদের পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।

তাদের পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, গত ৪ অক্টোবর বিকালে চন্দনাইশের হাফেজ মো. রফিক উদ্দিন ভুইয়ার ২ শিশু সন্তান সাজিল হাসান (৬) ও সামাদ হাসান (৪) তাদের গৃহ শিক্ষিকা খাদিজা আক্তার (২২) এর কাছে তাদের ভাড়া বাসায় প্রাইভেট পড়ছিল। হঠাৎ করে স্বল্প সময়ের মধ্যে ভবনটি ধ্বসে পড়লে তারা কেউ ভবন থেকে বের হতে পারেনি।

পরবর্তীতে স্থানীয়রা গৃহ শিক্ষিকা খাদিজাকে মুর্মুষ অবস্থায় উদ্ধার করে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যায়। তার স্ত্রী টয়লেটে থাকা অবস্থায় ভবন হেলে পড়তে দেখে দরজা খুলে লাফ দিয়ে জীবনে রক্ষা পেলেও রক্ষা পায়নি তার এ দুই শিশু সন্তান। এ সময় হাফেজ রফিকের বড় ছেলে সাজিল হাসানকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে। পরবর্তীতে তারই ছোট ভাই সামাদ হাসানকেও মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে উদ্ধারকর্মীরা।

উল্লেখ্য যে, বৈলতলী ভুইয়া বাড়ীর হাফেজ মো. রফিক ভুইয়া ২০১০ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি খাগরিয়ার শেফা খানমকে বিবাহ করে। পরবর্তীতে তাদের সংসারে সাজিল ও সামাদ দুই সন্তানের জন্ম হয়। এ দুই সন্তান নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করে সুখের জীবন যাপন শুরু করেছিল এ দম্পতি। হাফেজ রফিক তেল ব্যবসার সুবাদে দীর্ঘ ৮ বছরের অধিককাল ধরে রাঙ্গামাটিতে স্বপরিবারে বসবাস করছে। ঘটনার দিন রফিক তার ব্যবসায়িক তেলের দোকানে ছিল বলে জানান।

আজ ৫ অক্টোবর দুপুরে এ দুই শিশু সন্তানের লাশ নিয়ে বৈলতলী ভুইয়া বাড়ীতে রফিক ও শেফা আসলে এলাকার শত শত নারী-পুরুষ শিশু দুটির লাশ এক নজর দেখার জন্য তাদের বাড়িতে ভিড় জমায়। রফিক এবং তার স্ত্রী শেফার কান্না দেখে প্রত্যক্ষদর্শীদের অনেকের চোখের পানি সম্ভ্রম করতে পারেনি। এ সময় এক ভাবগাম্ভীর্যের পরিবেশ সৃষ্টি হয় রফিকের বাড়ীতে। অবশেষে আজ বুধবার ২৪ ঘন্টা পর বাদে আসর বৈলতলী উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে দুই ভাইয়ের এক সাথে জানাযা শেষে পাশাপাশি কবরে দুইজনকে দাফন করা হয়।

প্রথমে বামপাশে সাজিলকে বিকাল পৌনে ৫ টায়, ছোট ভাই সামাদকে সোয়া ৫ টায় কবরে শায়িত করা হয়। শোকের আর্তনাদে রফিক ও তার স্ত্রী বার বার মূর্ছা যাচ্ছিল। তারা শুধু বলছিল তাদের দুই সোনামনি কোথায়, তাদেরকে এনে দাও এবং দুই শিশু সন্তানের বিভিন্ন স্মৃতির কথা বলতে বলতে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। এ সময় তাদের কান্নায় এবং স্বজনদের আহাজারীতে আকাশ ভারী হয়ে উঠে।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.