মো. দেলোয়ার হোসেন, চন্দনাইশ : চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে লাগাতার দুই দিনের বৃষ্টির কারণে সবজির ব্যাপক ক্ষতি সাধন হয়। ফলে সে থেকে সবজির দাম দ্বিগুণ থেকেও বৃদ্ধি পেয়ে যায় এবং চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। পাইকারী ক্রেতারা প্রতিদিন ভিড় জমায় দোহাজারী রেলওয়ে মাঠ তথা সবজি বাজারে। ফলে চট্টগ্রাম মহানগর সহ বিভিন্ন এলাকায় সবজির চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রতি কেজি সবজির দাম ২০ থেকে ২৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে কৃষকেরা বেজায় খুশি।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবজি ভান্ডার নামে খ্যাত দোহাজারী রেলওয়ে মাঠে সকালের সবজি বাজারে সবজির দাম প্রতি কেজিতে গত কয়েক সপ্তাহ আগের তুলনায় প্রতি কেজিতে ২০ থেকে ২৫ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। সে সাথে সবজির চাহিদাও রয়েছে প্রচুর। শহর থেকে আসা পাইকারী ব্যবসায়ীরা সকাল থেকে ভিড় জমায় দোহাজারী রেলওয়ের মাঠ তথা সবজির বাজারে। অনেকটা প্রতিযোগিতামূলকভাবে সবজি কেনার ধুম পড়ে যায় দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবজি ভান্ডার নামে খ্যাত দোহাজারী রেলওয়ে মাঠে। ফলে কৃষকেরা বৃষ্টিতে ক্ষতিগ্রস্থ সবজির ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখতে যাচ্ছেন বলে মন্তব্য কৃষকদের। তাদের মতে চলতি মাসের তৃতীয় সপ্তাহে দুই দিনের বৃষ্টিতে শীতকালীন সবজির আগাম চাষে কিছুটা ক্ষতি হলেও সবজির দাম থাকার কারণে কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখবে। তাছাড়া বৃষ্টির পর পর পুনরায় শীতকালীন বিভিন্ন সবজির চাষাবাদ শুরু করেছে পুরোদমে কৃষকেরা।
গত ২৭ অক্টোবর দোহাজারী রেলওয়ে মাঠে সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বরবটি প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, বেগুন ৫০ থেকে ৬০ টাকা, কাকরল ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, শসা ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, চিচিংগা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, মিষ্টি লাউ প্রতিটি ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, বাংলা লাউ প্রতিটি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, শাকের ভার ১৫শ থেকে ১৬শ টাকা, মূলার ভার ২৫শ থেকে ৩ হাজার টাকা। যা গত কয়েক সপ্তাহ আগের তুলনায় সবজির দাম প্রায় দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে সবজি চাহিদার তুলনায় বাজারে সবজি কম এসেছে বলে জানালেন ইজারাদার ও ব্যবসায়ীরা। বাজারে সবজি আসতে পাইকারী ব্যবসায়ীরা প্রতিযোগিতামূলকভাবে সবজি ক্রয় করে ট্রাক ভর্তি করতে দেখা যায়। ফলে কৃষকেরাও সবজির ভালো দাম পাওয়ায় খুবই খুশি।
এ ব্যাপারে বাজারে আসা কৃষক ধর্মপুরের মৌলানা ফরিদ বরবটি এবং শসা বিক্রি করেছে। ধোপাছড়ির জামাল কাকরল, চিচিংগা ও বরবটি, ধর্মপুরের বাবুল শাক ও সবজি বিক্রি করে লাভের মুখ দেখছেন বলে উল্লেখ করেছেন।
দোহাজারীর আবুল কালাম বলেছেন, গত দুই সপ্তাহের আগে দুইদিনের বৃষ্টিতে সবজির যে ক্ষতি হয়েছে, দাম বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে তা পুষিয়ে লাভের মুখ দেখতে যাচ্ছেন বলে তিনি মত ব্যক্ত করেছেন।
এ ব্যাপারে কৃষি কর্মকর্তা লোকমান হোসেন মজুমদার বলেছেন, সর্বশেষ দুই দিনের বৃষ্টির কারণে কিছু শাক সবজির ক্ষয়ক্ষতি হয়। ফলে শাক সবজির দাম কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে। আগামী এক সপ্তাহ থেকে পনের দিনের মধ্যে শীতকালীন সবজি পুরোদমে আসার পর সবজির দাম স্বাভাবিক পর্যায়ে নেমে আসবে। চন্দনাইশে ২ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির চাষ হয়। ইতিমধ্যে শীতকালীন শাক সবজির চাষাবাদ শুরু হয়েছে।
তিনি আশা করছেন, কৃষকেরা লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করবে। ফলে সাধারণ মানুষের চাহিদা মোতাবেক দক্ষিণ চট্টগ্রামের সবজি ভান্ডার নামে খ্যাত দোহাজারী থেকে সবজি পুরো চট্টগ্রামে ছড়িয়ে যাবে।