সিটিনিউজবিডি : আজ ঢাকার একটি হোটেলে বেলা ১.০০ টায় মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী রিচার্ড রায়ট আনাক জায়েমের সাথে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি’র সাথে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণ সম্পর্কিত বিষয়ে সার্বিক আলোচনা হয়। আলোচনায় উপনিত হয় যে, খুব শ্রীঘ্রই বাংলাদেশ থেকে নির্মাণ শ্রমিক, প্লান্টেশন ও ম্যানুফেকচার খাতে মালয়েশিয়ায় কর্মী গমন শুরু হবে। বৈঠকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে প্রেরণকৃত ৭৪৫টি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী প্রেরণ নিশ্চিত করার জন্য বৈঠকে আলোচনা হয়।
বৈঠকের শুরুতে মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী বলেন, খুব শ্রীঘ্রই তারা বাংলাদেশ থেকে কর্মী নেওয়ার ব্যাপারে খুব আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। সরকার নির্ধারিত ব্যয়ে মালয়েশিয়া সরকার ও বাংলাদেশ সরকার কর্মী গমণাগমনের বিষয়ে একমত প্রকাশ করেন। প্রাথমিক পর্যায়ে নির্মাণ শ্রমিক, প্লান্টেশন ও ম্যানুফেকচার খাতে কর্মী নেবে বলে জানান।
বৈঠকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ায় জনশক্তি রপ্তানীতে দালাল চক্র নির্মূল করার জন্য আমরা বদ্ধ পরিকর। মালয়েশিয়া বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার। দক্ষ ও আধাদক্ষ কর্মী প্রেরণের জন্য বাংলাদেশ প্রস্তুত আছে। ইতিমধ্যে কর্মী প্রেরণের কৌশল নিয়ে উভয় পক্ষ একাধিকবার বৈঠক করেছে। মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি আরও বলেন, জনশক্তি রপ্তানীতে গুটিকয়েক রিক্রুটিং এজেন্সীকে সুযোগ না দিয়ে পূর্বে প্রেরিত ৭৪৫টি রিক্রুটিং এজেন্সী হতে অভিজ্ঞ ও সুনামধন্য রিক্রুটিং এজেন্সীর মাধ্যমে কর্মী প্রেরণ নিশ্চিত করা হবে। এতে করে অভিবাসন ব্যয় হ্রাস পাবে এবং সরকার নির্ধারিত অভিবাসন ব্যয়ে কর্মী প্রেরণ করা যাবে। বৈঠক শেষে মালয়েশিয়ার প্রতিনিধিদলের সম্মানে মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন করা হয় এবং মন্ত্রীদ্বয়ের মধ্যে স্মারক বিনিময় হয়।
মালয়েশিয়ার ৯ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন মালয়েশিয়ার মানবসম্পদ মন্ত্রী রিচার্ড রায়ট আনাক জায়েম। প্রতিনিধিদলের অন্যান্য সদস্যগন হলেন, ঢাকায় নিযুক্ত মালয়েশিয়ার হাইকমিশনার নূর আশিকিন বিনতে মোহাম্মদ তায়েব, মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমহাসচিব শাহনিয়ার বিন দারুসমান, ইমিগ্রেশনের মহাপরিচালক হাজি মুস্তাফার বিন হাজি আলী, শ্রম অধিদফতরের মহাপরিচালক জেফরি বিন জোয়াকিম, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিদেশী শ্রমিক ব্যবস্থাপনা শাখার উপসচিব জামিরি বিন মাত জিন, অভিবাসন দফতরের পরিচালক খায়রুল খায়ের বিন ইয়াহিয়া, মানবসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মুখ্য সহকারী সচিব শাহাবুদ্দিন বিন আবু বকর ও মানবসম্পদমন্ত্রীর বিশেষ ক র্মকর্তা রবার্ট আনাক দাপন। বাংলাদেশের পক্ষ থেকে ১০ সদস্য বিশিষ্ট প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী নুরুল ইসলাম বিএসসি। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যগণ হলেন, মন্ত্রণালয়ের সচিব বেগম শামছুন নাহার, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব ্যুরোর মহাপরিচালক মোঃ সেলিম রেজা, মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব জাবেদ আহমেদ, যুগ্মসচিব নারায়ন চন্দ্র বর্মা, যুগ্মসচিব মোঃ আকরাম হোসেন, যুগ্মসচিব মোঃ বদরুল আরেফীন, মন্ত্রীর একান্ত সচিব মুঃ মোহসিন চৌধুরী, মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশের কাউন্সেল (শ্রম) মোঃ সাইদুল ইসলাম ও বিএমইটি’র পরিচালক ড. নুরুল ইসলাম।
উল্লেখ্য যে, গত ১৮ ফেব্র“য়ারি ২০১৬ খ্রিঃ তারিখে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়া সরকারের মধ্যে জি টু জি প্লাস পদ্ধতিতে কর্মী নেওয়ার বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হয়। উক্ত সমঝোতা স্মারকের ভিত্তিতেই শ্রীঘ্রই বাংলাদেশ থেকে নির্মাণ শ্রমিক, প্লান্টেশন ও ম্যানুফেকচার খাতে মালয়েশিয়ায় কর্মী প্রেরণ কার্যক্রম শুরু হবে।