সিটিনিউজবিডি : চট্টগ্রাম বন্দরের অর্থায়নে ‘বঙ্গবন্ধু বিশেষায়িত মেডিকেল সিটি’ প্রতিষ্ঠা করার জন্য ভারতের প্রখ্যাত হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: দেবী শেঠীর সাথে এম.ইউ চুক্তি সই এবং স্থান নির্ধারণ করে জনসমক্ষে মাননীয় নৌ পরিবহন মন্ত্রী ঘোষণা করার দুই বছর অতিক্রান্ত হওয়ার পরও বন্দর কর্তৃপক্ষের রহস্যজনক নীরবতায় ক্ষোভ প্রকাশ করে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলহাজ্ব খোরশেদ আলম সুজন বলেন, কিছু সংখ্যক দুষ্টু চক্র প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসে জাতির জনকের নাম ও ছবি নিয়ে ব্ল্যাকমেইল করছে।
তাদের চিহ্নিত করে মুখোশ খুলে দিতে হবে। তিনি আজ চট্টগ্রাম বন্দর বঙ্গবন্ধু মেডিকেল সিটি বাস্তবায়ণ পরিষদ, ৩৭ ও ৩৮নং ওয়ার্ড সচেতন নাগরিক সমাজ ও কর্মসংস্থান সংগ্রাম পরিষদের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত সি.ই.পি জেড মোড়ে বিকাল ৪টায় এক গণ সমাবেশ প্রধান অতিথির বক্তব্যে একথা বলেন। সভায় সভাপতি হাজী মো: ইলিয়াছ এর সভাপতিত্বে ও মোরশেদ আলমের সঞ্চালনায় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
চট্টগ্রামের জনগণের কাছে জাতীয় অর্থনীতির হৃৎপিন্ড বন্দরের অনেক দায় আছে। আমাদের পিতৃ-পুরুষের মূল সম্পদের তিন ভাগের দুই ভাগ আজ বন্দর, রেলওয়ে ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কাছে হুকুম দখলকৃত আছে। বন্দরের হাজার হাজার কোটি টাকা ও সম্পদ এক শ্রেণীর দুষ্টুচক্র নামে-বেনামে লুটে পুটে খাচ্ছে। বঙ্গবন্ধু বিশেষায়িত হাসপাতালটি প্রতিষ্ঠিত হলে কিছু দায় শোধ হত। দুঃখজনকভাবে শোনা যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু বিশেষায়িত হাসপাতালের জন্য ঘোষিত নির্ধারিত স্থানের উপর কিছু দুষ্টু শকুনের কুদৃষ্টি পড়েছে, তারাই বন্দর প্রশাসনের অভ্যন্তরে তাদের দোসরদের পরস্পর যোগসাজশে এই জায়গা বেনামে দখলে নেয়ার জন্য ঘোষিত, প্রস্তাবিত হাসপাতালটি নিয়ে লুকোচুরি খেলা করছে।
জনাব সুজন অবিলম্বে ঘোষিত, প্রস্তাবিত বঙ্গবন্ধু বিশেষায়িত হাসপাতাল বাস্তবায়নের জন্য জোর দাবি জানিয়ে বলেন অন্যাথার জাতির জনকের নাম নিয়ে জালিয়াতির দায়ে সংশ্লিষ্টদের গণ দুশমন হিসেবে চিহ্নিত করে তাদের তালিকা প্রণয়ন করে আইনী ও গণ আন্দোলনের সূচনা করা হবে।
জনাব সুজন মহেশখালের উপর বন্দর কর্র্তৃপক্ষের বাঁধ দেয়াকে ‘লোভী মুর্খতা’ বলে উল্লেখ করে বলেন, একটি জোয়ার ভাটার প্রবাহমান খালকে ইট, বালি দিয়ে প্রবাহ বন্ধ করে বন্দরের ইঞ্জিনিয়ারিং কর্তাদের মুর্খতা ও অযোগ্যতাকে জনসমক্ষে প্রকাশ করেছে। এটাতে খালের উজানে-ভাটিতে থাকা লক্ষ লক্ষ জনগণ আজ বর্ষাকালীন ধ্বংসাত্মক ক্ষয়ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। অন্যদিকে খালের উভয় পাড়ে প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও দুর্ঘন্ধময় পরিবেশের শিকার হচ্ছে মানুষ।
তিনি জনরোষ বিস্তৃত হওয়ার আগেই এই জনস্বার্থ হানিকর বাঁধ তুলে নেওয়ার জন্য বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান জানান। জনাব সুজন চট্টগ্রাম বন্দরে নিয়োগ বাণিজ্য বন্ধ করার জোর দাবি জানিয়ে বলেন, সবাই সবকিছু জানেন, শুধু ‘অজ্ঞতার অন্ধকারের’ ভান করছে বন্দর কর্তৃপক্ষ। তিনি বন্দর সহ সকল সরকারি, আধা সরকারি, স্বায়ত্বশাসিত ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চট্টগ্রামে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী নাগরিকদের যোগ্যতার ভিত্তিতে দুর্নীতিমুক্ত নিয়োগদানের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান।
জনাব সুজন সল্টগোলা ক্রসিং থেকে শাহ আমানত আন্তজার্তিক বিমানবন্দর পর্যন্ত অসহনীয় যানজট নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশ প্রশাসন, বন্দর প্রশাসন, সিডিএ ও সিটি কর্পোরেশনে সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়ার জন্য আহ্বান জানিয়ে বলেন যানজটের জন্য দায়ী অবৈধ সকল স্থাপনা অপসারণে দৃঢ় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে এই বিষয়ে আমাদের প্রতিরক্ষা বাহিনীকেও সংযুক্ত করতে হবে। এই যানজট দেশের শতভাগ রপ্তানি নির্ভর দুটি ইপিজেড, এ এলাকার ছাত্র, শ্রমিক, সাধারণ জনগণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রুটের যাত্রীগণ নৌ ও বিমান প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠানের চলাচলে এক বিরাট বাঁধার প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সভায় বক্তব্য রাখেন মহানগর আওয়ামী লীগের বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক মশিউর রহমান চৌধুরী, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুহাম্মদ আবু তাহের, হাজী মো: হাসান, মাহবুবুল হক সুমন, হাসানুর রহমান লিটন, আবু তাহের, মুহাম্মদ কামরুল হোসেন, হাজী মো: হোসেন কোম্পানী, হাজী হাবিব শরীফ, আবদুস সালাম মাসুম, আশিকুন নবী চৌধুরী, ইমরান আহেমদ ইমু।