অভিবাসীদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে : প্রধানমন্ত্রী

0

সিটিনিউজবিডি : অভিবাসীদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে নজর বাড়াতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘গ্লোবাল ফোরাম ফর মাইগ্রেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (জিএফএমডি)’ নবম শীর্ষ সম্মেলনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০১৭ সালে জিএফএমডি বৈশ্বিক পর্যালোচনায় প্রবেশ করছে, আমাদের অবশ্যই অভিবাসীদের দুঃখ-দুর্দশা লাঘবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হতে হবে এবং কাজ করতে হবে।”

এবারের শীর্ষ সম্মেলনে অভিবাসীদের সুরক্ষায় নতুন চুক্তি করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ‘উচ্চাভিলাষী, বাস্তববাদী ও সামঞ্জস্যপূর্ণ’ হওয়ারও আহ্বান জানান তিনি।

২০১৮ সালের মধ্যে জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে নিয়ে অভিবাসী ও উদ্বাস্তু সংক্রান্ত একটি বৈশ্বিক চুক্তি করতে বাংলাদেশ কাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।

তিনি এসময় অভিবাসীদের ত্যাগের কথাও তুলে ধরেন।

“একজন অভিবাসী শুধু একজন শ্রমিক নন। প্রতিটি অভিবাসীর বলার মতো একটি অসাধারণ গল্প আছে। অভিবাসীগণ তাদের উদ্ভাবনী শক্তি, শ্রম এবং সম্পদ ব্যবহারের মাধ্যমে স্বাগতিক দেশের সমাজের উন্নয়নে অবদান রেখে থাকেন।”

অভিবাসন বিভিন্ন সম্প্রদায়, অর্থনীতি ও সমাজের মধ্যে যোগসূত্র স্থাপন করে শান্তি, স্থিতিশীলতা এবং প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

“বৈচিত্রময় ও সংযুক্ত বিশ্বে অভিবাসন অবশ্যম্ভাবী ও অপরিহার্য। এ কারণেই বৈশ্বিক উন্নয়ন রূপকল্প যা এজেন্ডা ২০৩০ নামে পরিচিত; সেখানে অভিবাসনকে টেকসই উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে।”

অভিবাসনকে ভয় পাওয়া বা অভিবাসীদের তাড়িয়ে দেওয়ার ‘কোনো কারণ নেই’ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “অভিবাসন সুশাসনে উপযুক্ত পরিকাঠামো প্রণয়নের মাধ্যমে অভিবাসনের রূপান্তরমূলক সম্ভাবনাকে কীভাবে বাস্তবায়ন করা যায় তা আমাদের ভেবে দেখা প্রয়োজন।”

এসময় তিনি ‘অভিবাসন সুশাসন’ বিষয়কে সামনে আনায় জাতিসংঘ মহাসচিবের অভিবাসন ও উন্নয়নবিষয়ক বিশেষ দূত পিটার সাদারল্যান্ডের প্রশংসা করেন।

শেখ হাসিনা অভিবাসীদের নিরাপদ চলাফেরার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।

“মানুষ শুধু কাজের জন্য নয়, বহুবিধ কারণে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় বিচরণ করে। সুতরাং আমাদের সামনে চ্যালেঞ্জ হচ্ছে, আমরা কীভাবে মানুষের চলাফেরা আরও নিরাপদ, নিয়মিত ও সুশৃঙ্খল করতে পারি।

“প্রতিটি অভিবাসী যেন মর্যাদা এবং নিরাপদে চলাফেরা ও কাজ করতে পারেন। তাদের অবস্থা নির্বিশেষে, যে কোন পরিস্থিতিতে, তাদের অধিকার যাতে সুরক্ষা পায় সে ব্যবস্থা করতে হবে।”

“অভিবাসন আর কোনোভাবেই ‘আমাদের এবং তাদের’ মধ্যেকার বিষয় নয়, এটা সব মানুষের এবং সব রাষ্ট্রের সমৃদ্ধি ও কল্যাণ সম্পর্কিত বিষয় হিসেবে গণ্য হচ্ছে,” বলেন তিনি।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মহাপরিচালক লক্ষ্মী পুরী, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার (আইওএম) মহাপরিচালক গায় রাইডার, জাতিসংঘ মহাসচিবের প্রতিনিধি হু হোনবো বক্তব্য রাখেন।

শীর্ষ সম্মেলনে ১২৫টি দেশ, ৩০টির বেশি আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং নাগরিক ও ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নিচ্ছেন বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।

এ বিভাগের আরও খবর

আপনার মতামত লিখুন :

Your email address will not be published.